আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপ

আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বা আইসিসি ওয়ার্ল্ড টি২০ বা আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপ (ইংরেজি: ICC World Twenty20/ICC Men's T20 World Cup) ক্রিকেটের টুয়েন্টি২০ পদ্ধতির আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতা বিশেষ। প্রতিযোগিতাটি ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল বা আইসিসি কর্তৃক পরিচালিত হয়। প্রতিযোগিতায় ২০ দলের অংশগ্রহণ থাকে। তন্মধ্যে ১০টি আইসিসি'র পূর্ণ সদস্যভূক্ত স্বয়ংক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। বাকি দলের অংশগ্রহণের জন্যে আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ যোগ্যতা নির্ধারণী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে হয়। অতঃপর শীর্ষস্থানীয় দুই দল এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। বর্তমানে প্রতিযোগিতাটি প্রতি দুই বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপ
টি২০/টুয়েন্টি২০ বিশ্বকাপের শিরোপা
ব্যবস্থাপকআন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল
খেলার ধরনটুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক
প্রথম টুর্নামেন্ট২০০৭,  দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টুর্নামেন্ট২০২২,  অস্ট্রেলিয়া
পরবর্তী টুর্নামেন্ট২০২৪,  ওয়েস্ট ইন্ডিজ,  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
প্রতিযোগিতার ধরনরাউন্ড-রবিন (দুটি রাউন্ড) ও নক-আউট
দলের সংখ্যা২০[1]
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড (২য় শিরোপা)
সর্বাধিক সফল ওয়েস্ট ইন্ডিজ
 ইংল্যান্ড
(২টি শিরোপা)
সর্বাধিক রান বিরাট কোহলি (১,১৪১ রান)[2]
সর্বাধিক উইকেট সাকিব আল হাসান (৪৭ উইকেট)[3]
২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপ

নিয়ম-কানুন

গ্রুপ পর্ব এবং সুপার এইটে ফলাফল নির্ধারণের জন্যে নিম্নবর্ণিত পয়েন্ট বরাদ্দ রাখা হয়েছে:

ফলাফল পয়েন্ট
জয়২ পয়েন্ট
ফলাফল না হলে১ পয়েন্ট
পরাজয়০ পয়েন্ট

কোন কারণে যদি টাই হয়, তাহলে সুপার ওভারের মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণ করা হবে। আবার সুপার ওভারেও যদি একই ধরনের ঘটনা ঘটে তাহলে যে দল তাদের ইনিংসে সর্বাধিক ছয় বা ছক্কা মেরেছে, তাদেরকে বিজয়ী বলে ঘোষণা করা হবে। এ প্রক্রিয়া প্রতিযোগিতার সবগুলো খেলার জন্যেই প্রযোজ্য হবে। ২০০৭ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় এ নিয়ম প্রবর্তিত ও প্রচলন ঘটানো হয়নি। তখন বোল-আউটের মাধ্যমে টাই ভাঙ্গা হতো।

প্রত্যেক গ্রুপ ও সুপার এইট পর্বে দলের শীর্ষস্থান নির্ধারণে নিম্নবর্ণিত শর্তাদি রাখা হয়েছে:

  1. সর্বোচ্চসংখ্যক পয়েন্ট সংগ্রহ
  2. সমান হলে, সর্বাধিক জয়
  3. তারপরও সমান হলে, সর্বোচ্চ নেট রান রেট
  4. তারপরও সমান হলে, সর্বনিম্ন বোলিং স্ট্রাইক রেট
  5. তারপরও সমান হলে, একে-অপরের বিরুদ্ধে ফলাফল

স্বাগতিক দেশ

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের নির্বাহী পরিষদ ভোটের মাধ্যমে আগ্রহী দেশের দরপত্র পর্যবেক্ষণপূর্বক তাদের আগ্রহে এ প্রতিযোগিতার স্বাগতিক দেশ নির্ধারণ করে থাকেন। ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা, ২০০৯ সালে ইংল্যান্ড, ২০১০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ২০১২ সালে শ্রীলঙ্কা স্বাগতিক দেশের মর্যাদা পায়। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ স্বাগতিক দেশের মর্যাদা লাভ করে।[4] আইসিসি দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইংল্যান্ডকে প্রথম দুইটি প্রতিযোগিতা আয়োজনে প্রথমদিককার স্বাগতিক দেশ হিসেবে ঘোষণা করে যারা এ পদ্ধতিকে শুরু থেকেই গ্রহণ করে।[5] ২০১৬ সালে ভারতকে প্রতিযোগিতার স্বাগতিক দেশ হিসেবে মনোনীত হয়।[6]২০২১ এ আবার এই প্রতিযোগিতার আসর বসে। প্রথমে ভারতে অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল, কিন্তু করোনা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হবার জন্য সমগ্র প্রতিযোগিতাটি সংযুক্ত আরব আমিরাতওমানে স্থানান্তরিত হয়।

ফলাফল

সাল আয়োজক দেশ চূড়ান্ত খেলার মাঠ চূড়ান্ত খেলা দলসংখ্যা
বিজয়ী ফলাফল রানার-আপ
২০০৭
সার-সংক্ষেপ
দক্ষিণ আফ্রিকা
দক্ষিণ আফ্রিকা
ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়াম, জোহানেসবার্গ  ভারত
১৫৭/৫ (২০ ওভার)
ভারত ৫ রানে জয়ী
স্কোরকার্ড
 পাকিস্তান
১৫২ (১৯.৩ ওভার)
১২
২০০৯
সার-সংক্ষেপ
ইংল্যান্ড
ইংল্যান্ড
লর্ডস, লন্ডন  পাকিস্তান
১৩৯/২ (১৮.৪ ওভার)
পাকিস্তান ৮ উইকেটে জয়ী
স্কোরকার্ড
 শ্রীলঙ্কা
১৩৮/৬ (২০ ওভার)
২০১০
সার-সংক্ষেপ
 ওয়েস্ট ইন্ডিজ কেনসিংটন ওভাল, বার্বাডোস  ইংল্যান্ড
১৪৮/৩ (১৭ ওভার)
ইংল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী
স্কোরকার্ড
 অস্ট্রেলিয়া
১৪৭/৬ (২০ ওভার)
২০১২
সার-সংক্ষেপ
শ্রীলঙ্কা
শ্রীলঙ্কা
আর. প্রেমাদাসা স্টেডিয়াম, কলম্বো  ওয়েস্ট ইন্ডিজ
১৩৭/৬ (২০ ওভার)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৬ রানে জয়ী
স্কোরকার্ড
 শ্রীলঙ্কা
১০১/১০ (১৮.৪ ওভার)
২০১৪
সার-সংক্ষেপ
বাংলাদেশ
বাংলাদেশ
শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ঢাকা  শ্রীলঙ্কা
১৩৪/৪ (১৭.৫ ওভার)
শ্রীলঙ্কা ৬ উইকেটে জয়ী
স্কোরকার্ড
 ভারত
১৩০/৪ (২০ ওভার)
১৬
২০১৬
সার-সংক্ষেপ
ভারত
ভারত
ইডেন গার্ডেন্স, কলকাতা  ওয়েস্ট ইন্ডিজ
১৬১/৬ (১৯.৪ ওভার)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪ উইকেটে বিজয়ী স্কোরকার্ড  ইংল্যান্ড
১৫৫/৯ (২০ ওভার)
২০২১
সার-সংক্ষেপ
 সংযুক্ত আরব আমিরাত
 ওমান
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, দুবাই  অস্ট্রেলিয়া
১৭৩/২ (১৮.৫ ওভার)
অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে জয়ী স্কোরকার্ড  নিউজিল্যান্ড
১৭২/৪ (২০ ওভার)
২০২২
সার-সংক্ষেপ
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়া
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড, মেলবোর্ন  ইংল্যান্ড
১৩৮/৫ (১৯ ওভার)
ইংল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী স্কোরকার্ড  পাকিস্তান
১৩৭/৮ (২০ ওভার)
২০২৪
সার-সংক্ষেপ
 মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
 ওয়েস্ট ইন্ডিজ
নির্ধারিত হয়নি ২০
২০২৬  ভারত
 শ্রীলঙ্কা
নির্ধারিত হয়নি
২০২৮  অস্ট্রেলিয়া
 নিউজিল্যান্ড
নির্ধারিত হয়নি
২০৩০  ইংল্যান্ড
 আয়ারল্যান্ড
 স্কটল্যান্ড
নির্ধারিত হয়নি

দলীয় অবস্থান

নীচের সারণীতে আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতাসমূহে অংশগ্রহণকারী দলের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে:

নভেম্বর ২০২১ পর্যন্ত হালনাগাদকৃত।
দল অংশগ্রহণ শুরু সর্বশেষ সেরা ফলাফল চূড়ান্ত ম্যাচে শেষ চারে খেলা সংখ্যা জয় পরাজয় টাই ফলাফল হয়নি শতাংশ (%)
 ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০০৭২০২১চ্যাম্পিয়ন, ২০১৬,

চ্যাম্পিয়ন, ২০১২

২ বার ৪ বার২০১ (১)৪৭.৫০
 শ্রীলঙ্কা ২০০৭২০২১চ্যাম্পিয়ন, ২০১৪ ৩ বার ৪ বার৩১২১১ (১)৬৯.৩৫
 পাকিস্তান ২০০৭২০২১চ্যাম্পিয়ন, ২০০৯ ২ বার ৫ বার২৬১৬১ (০)৬৩.৪৬
 অস্ট্রেলিয়া ২০০৭২০২১চ্যাম্পিয়ন, ২০২১ ২ বার ৪ বার২১১৩৬১.৯০
 ইংল্যান্ড ২০০৭২০২১চ্যাম্পিয়ন, ২০১০ ২ বার ৩ বার২২১০১১৪৫.৪৫
 ভারত ২০০৭২০২১চ্যাম্পিয়ন, ২০০৭ ২ বার ৩ বার২৭১৭১ (১)৬২.৯৬
 নিউজিল্যান্ড ২০০৭২০২১সেমি-ফাইনাল, ২০০৭ ১ বার ৩ বার২১১০২ (০)৪৭.৬২
 দক্ষিণ আফ্রিকা ২০০৭২০২১সেমি-ফাইনাল, ২০০৭ ২ বার২১১৩৬১.৯০
 বাংলাদেশ ২০০৭২০২১সুপার ১০, ২০১৬ ১৮১৫১৬.৬৭
 আয়ারল্যান্ড ২০০৯২০২১সুপার এইট, ২০০৯ ১১.১১
 জিম্বাবুয়ে ২০০৭২০১৪গ্রুপ পর্ব ১৬.৬৭
 আফগানিস্তান ২০১০২০২১গ্রুপ পর্ব ০.০০
 নেদারল্যান্ডস ২০০৯২০২১সুপার টেইন, ২০১৪ ৪৪.৪৪
 স্কটল্যান্ড ২০০৭২০২১গ্রুপ পর্ব ০.০০
 কেনিয়া ২০০৭২০০৭গ্রুপ পর্ব ০.০০
  • বন্ধনীতে সুপার ওভার কিংবা বোল আউট অথবা টি২০ ক্রিকেটে টাই ম্যাচে জয় নির্ধারণে ব্যবহৃত অন্য যে-কোন পদ্ধতিতে ফলাফল নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ধরনের বিষয়গুলোর মাধ্যমে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হলেও তা অর্ধ-জয় হিসেবে গণনা করা হয়।

নতুন দলের আত্মপ্রকাশ

বছর নতুন দল মোট
২০০৭  অস্ট্রেলিয়া,  বাংলাদেশ,  ইংল্যান্ড,  ভারত,  কেনিয়া,  নিউজিল্যান্ড,  পাকিস্তান,  স্কটল্যান্ড,  দক্ষিণ আফ্রিকা,  শ্রীলঙ্কা,  ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং  জিম্বাবুয়ে ১২
২০০৯  আয়ারল্যান্ড এবং  নেদারল্যান্ডস
২০১০  আফগানিস্তান
২০১২ কোনো নতুন দল নেই
২০১৪  হংকং,    নেপাল এবং  সংযুক্ত আরব আমিরাত
২০১৬  ওমান
২০২১  নামিবিয়া এবং  পাপুয়া নিউগিনি
২০২২ কোনো নতুন দল নেই
২০২৪ নির্ধারিত হয়নি নির্ধারিত হয়নি
২০২৬
২০২৮
২০৩০
মোট ২১

দলসমূহের পারফরম্যান্স

নির্দেশিকা
  • চ্যা – চ্যাম্পিয়ন
  • রা – রানার-আপ
  • সেমি – সেমি-ফাইনালে বিদায়
  • প২ – দ্বিতীয় পর্বে (সুপার ৮/১০/১২) বিদায়
  • প১ – প্রথম পর্বে/গ্রুপ পর্বে বিদায়
  •  ×  – অংশগ্রহণ করেনি
  • অক্ষম – যোগ্যতা অর্জনে অক্ষম
  •    – যোগ্যতা অর্জনে সক্ষম হয়েও প্রত্যাহার
  •      আয়োজক
বছর→
আয়োজক→
দলসংখ্যা→
দল↓
২০০৭ ২০০৯ ২০১০ ২০১২ ২০১৪ ২০১৬ ২০২১ ২০২২ ২০২৪ অংশ
দক্ষিণ আফ্রিকা ইংল্যান্ড ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশ ভারত সংযুক্ত আরব আমিরাত
ওমান
অস্ট্রেলিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ
১২ ১২ ১২ ১২ ১৬ ১৬ ১৬ ১৬ ২০
 আফগানিস্তান××প১প১প১প২প২প২
 অস্ট্রেলিয়াসেমিপ১রাসেমিপ২প২চ্যাপ২
 বাংলাদেশপ২প১প১প১প২প২প২প২
 ইংল্যান্ডপ২প২চ্যাপ২প২রাসেমিচ্যা
 ভারতচ্যাপ২প২প২রাসেমিপ২সেমি
 পাকিস্তানরাচ্যাসেমিসেমিপ২প২সেমিরা
 নিউজিল্যান্ডসেমিপ২প২প২প২সেমিরাসেমি
 শ্রীলঙ্কাপ২রাসেমিরাচ্যাপ২প২প২
 দক্ষিণ আফ্রিকাপ২সেমিপ২প২সেমিপ২প২প২
 ওয়েস্ট ইন্ডিজপ১সেমিপ২চ্যাসেমিচ্যাপ২প১
 নামিবিয়া×অক্ষমপ২প১
 পাপুয়া নিউগিনিপ১অক্ষম
 আয়ারল্যান্ডঅক্ষমপ২প১প১প১প১প১প২
 জিম্বাবুয়েপ১প১প১প১প১অক্ষমপ২
 নেদারল্যান্ডসঅক্ষমপ২অক্ষমপ২প১প১প২
 স্কটল্যান্ডপ১প১অক্ষমপ১প২প১
 ওমান×অক্ষমপ১প১অক্ষম
 কেনিয়াপ১অক্ষম
 সংযুক্ত আরব আমিরাত×অক্ষমপ১অক্ষমঅক্ষমপ১
 হংকং×অক্ষমপ১প১অক্ষম
   নেপালঅক্ষম

পরিসংখ্যান

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "ICC announces expansion of global events"আইসিসি। সংগ্রহের তারিখ ২ জুন ২০২১
  2. "Records – ICC Men's T20 World Cup – Most Runs"ESPNCricinfo
  3. "Records – ICC Men's T20 World Cup – Most Wickets"ESPNCricinfo
  4. Bangladesh to host World Twenty20 2014 Cricinfo, retrieved 1 July 2010
  5. "ICC events". Cricinfo. Retrieved 2006.
  6. "For next five years, all T20 action in subcontinent". The Times of India. 18 March 2011.

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.