টম কিলিক

এডগার টমাস কিলিক (ইংরেজি: Tom Killick; জন্ম: ৯ মে, ১৯০৭ - মৃত্যু: ১৮ মে, ১৯৫৩) লন্ডনের ফুলহাম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯২৯ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

টম কিলিক
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামএডগার টমাস কিলিক
জন্ম৯ মে, ১৯০৭
ফুলহাম, লন্ডন, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১৮ মে, ১৯৫৩
নর্দাম্পটন, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৩৯)
১৫ জুন ১৯২৯ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট২৯ জুন ১৯২৯ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৯২
রানের সংখ্যা ৮১ ৫৭৩০
ব্যাটিং গড় ২০.২৫ ৪০.৩৫
১০০/৫০ -/- ১৫/২৬
সর্বোচ্চ রান ৩১ ২০৬
বল করেছে - ২৯৩
উইকেট -
বোলিং গড় - ৭৬.৩৩
ইনিংসে ৫ উইকেট - -
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং - ১/২০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২/- ৫০/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৯ মে ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে মিডলসেক্সকেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। দলে মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন রেভারেন্ড টমাস কিলিক নামে পরিচিত টম কিলিক

শৈশবকাল

সেন্ট পলস স্কুলে থাকাকালে ক্রীড়াবিদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। রাগবি থ্রি-কোয়ার্টারে খেলেন ও ক্রিকেট একাদশের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯২৫ সালে তার ব্যাটিং গড় ছিল ১০৪.৪৪। পরের গ্রীষ্মে পাবলিক স্কুলের পঞ্চদশকে নেতৃত্ব দেন ও লর্ডসে অস্ট্রেলীয়দের বিপক্ষে খেলেন। অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক এইচ. এল. কলিন্স ফিল্ডিংকালে বিদ্যালয়ের পনের খেলোয়াড়ের বিষয়ে আপত্তি তুলেন। ফলশ্রুতিতে, টম কিলিক চারজনকে মাঠ ত্যাগের নির্দেশ দেন। সৌভাগ্যবশতঃ কলিন্স সিদ্ধান্ত পাল্টান ও চারজন ছাত্র পুনরায় মাঠে ফিরে আসে। ব্যাটিং অনুপযোগী পিচে তিনি ৩১ রান তুলেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

১৯২৬ সাল থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত টম কিলিকের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। টম কিলিক ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ইনিংসের উদ্বোধনে কিংবা প্রথম উইকেট পতনের পর তাকে মাঠে নামতে দেখা যেতো। লন্ডনের সেন্ট পলস স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। ১৯২৬ সালে ১৯ বছর বয়সে মিডলসেক্সের পক্ষে কয়েকটি খেলায় অংশ নিয়েছেন। এরপর, কেমব্রিজের জেসাস কলেজে চলে যান। তবে, ১৯২৭ সালের ফ্রেশম্যানদের যাচাই-বাছাইয়ের খেলায় স্বাভাবিক ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শনে ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি।[1] তাসত্ত্বেও, মিডলসেক্সের সদস্যরূপে বিশ্ববিদ্যালয় দলের বিপক্ষে খেলার জন্যে মনোনীত হন। ৯৪ ও অপরাজিত ৪২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। এরপর, কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলায় অংশগ্রহণ করেন। ৮০ রান তুললেও উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাকে ধীরলয়ে রান সংগ্রহের কথা তুলে ধরা হয়। এ রান বাদে খুব কমই সফল হয়েছিলেন। ফলশ্রুতিতে, ব্লু লাভ করতে পারেননি তিনি। ঐ মৌসুমের দ্বিতীয়ার্ধ্ব পর্যন্ত নিয়মিতভাবে খেলতে থাকেন।

১৯২৮ সালের পরের মৌসুমের শুরুতে কেমব্রিজের পক্ষে প্রথম দুই খেলায় ব্যর্থতার স্বাক্ষর রাখেন। আবারও তিনি মিডলসেক্সে চলে যান। কাউন্টি দলের পক্ষে নিজস্ব দ্বিতীয় খেলায় ৮২ রান তুলেন। পুনরায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাচাই-বাছাইয়ের খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়। সারের বিপক্ষে ১০০ ও সাসেক্সের বিপক্ষে ১৬১ রান তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গড় রানের দিক দিয়ে সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থান করেন। এরফলে, ব্লুধারী হন। সামগ্রীকভাবে ঐ মৌসুমে ৩৮ গড়ে ১২৩১ রান তুলেছিলেন।

স্বর্ণালী সময়

১৯২৯ সালে নিজস্ব স্বর্ণালী মৌসুম অতিবাহিত করেন। এ মৌসুমেই তিনি টেস্টে অংশগ্রহণের জন্যে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। ইনিংস প্রতি ৪৪ গড়ে ১৩৮৪ রান সংগ্রহ করেন। তাসত্ত্বেও, কেমব্রিজ মৌসুম শেষ হবার পর লর্ডসে জেন্টলম্যান বনাম প্লেয়ার্সের মধ্যকার একটিমাত্র প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশগ্রহণ করতে পেরেছিলেন তিনি। পরের বছর ১৯৩০ সালে আবারও কেমব্রিজ মৌসুমে অংশ নেন। ৪৭ গড়ে ৯০৩ রান তোলার পর আর খেলায় অংশ নেননি।

১৯৩০-এর দশকে অ্যাঙ্গলিকান যাজকত্ব বিষয়ে প্রথমে অধ্যয়ন করেন। এরপর গীর্জায় কাজ করেন। এ পর্যায়ে তিনি অনিয়মিতভাবে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিতেন। তবে, ১৯৩৪ থেকে ১৯৩৮ সালের মধ্যে কোন খেলায় অংশ নেননি তিনি। বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৬ সালে ফ্রি ফরেস্টার্সের সদস্যরূপে একটিমাত্র খেলায় পুনরায় অংশ নেন। এটিই তার সর্বশেষ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ ছিল।

১৯৩১ সালে মিডলসেক্সের সদস্যরূপে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে ২০৬ রান তুলেন। জি. টি. এস. স্টিভেন্সের সাথে প্রথম উইকেট জুটিতে ২৭৭ রান সংগ্রহ করেন। ঐ মৌসুমে কাউন্টি দলের পক্ষে এটিই তার একমাত্র অংশগ্রহণ ছিল। এছাড়াও, বৃষ্টির কারণে শুধুমাত্র প্রথম দিনেই খেলা হয়েছিল। তবে, কাজে যুক্ত থাকার ফলে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অনিয়মিত হয়ে পড়েন। তাসত্ত্বেও, সম্ভব হলে ক্লাবের খেলাগুলোয় অংশ নিতেন। ই. হেনড্রেন একবার মন্তব্য করেন যে, লিওনেল প্যালেরিটের পর তিনি সর্বাপেক্ষা পরিচ্ছন্ন আগুয়ান খেলোয়াড় ছিলেন। তার স্ট্রোক-প্লেতে চাকচিক্যভাব বজায় থাকতো। খুব অল্প ব্যাটসম্যানই তার ন্যায় অফ ড্রাইভ ও স্কয়ার কাটে দক্ষ ছিলেন। ফিল্ডিংকালে ডিপ অঞ্চলে অবস্থান করতেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন টম কিলিক। সবগুলো টেস্টই সফররত দক্ষিণ আফ্রিকা বিপক্ষে খেলেছিলেন তিনি। ১৫ জুন, ১৯২৯ তারিখে বার্মিংহামে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপর, ২৯ জুন, ১৯২৯ তারিখে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

ইংল্যান্ডের দল নির্বাচকমণ্ডলী পরীক্ষামূলকভাবে তরুণ খেলোয়াড়দেরকে সফররত দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে ১৯২৯ সালের ঐ সিরিজের প্রথম দুই টেস্টে মাঠে নামায়। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে তার সঙ্গী ছিলেন হার্বার্ট সাটক্লিফ। এজবাস্টনে সিরিজের প্রথম টেস্টে তিনি ৩১ ও ২৩ রান তুলেন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল। লর্ডসে অনুষ্ঠিত পরবর্তী টেস্টে তিনি ৩ ও ২৪ রান তুলেন। এ খেলাটিও ড্রয়ে পর্যবসিত হয়। ফলশ্রুতিতে, তাকে দলের বাইরে রাখা হয়। ফ্রাঙ্ক ওলিটেড বোলিকে দলে ফিরিয়ে আনা হলে সিরিজের বাদ-বাকী তিন টেস্টের দুইটিতে জয় পায় ইংল্যান্ড দল।

১৮ মে, ১৯৫৩ তারিখে হৃদযন্ত্রক্রীয়ায় আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪৬ বছর বয়সে নর্দাম্পটন এলাকায় টম কিলিকের দেহাবসান ঘটে। এ পর্যায়ে আন্ত-ডাইওসেসান ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণ করেছিলেন।

তথ্যসূত্র

  1. "Freshmen's Match At Cambridge" (ইংরেজি ভাষায়) দ্য টাইমস (লন্ডন)। 3 May 1927। (44571),
  • Wisden, 1928, 1929 and 1930 editions
  • Obituary in Wisden 1954

    আরও দেখুন

    বহিঃসংযোগ

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.