জেন অ্যাডামস
জেন অ্যাডামস (জন্মঃ ৬ সেপ্টেম্বর, ১৮৬০; মৃত্যুঃ ২১ মে, ১৯৩৫) প্রথম মার্কিন নারী যিনি নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছিলেন। তার পুরো নাম লরা জেন অ্যাডামস। ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে তাকে নিকোলাস মারি বাটলারের সঙ্গে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। তিনি একজন সমাজ সংগঠক, অধ্যাপক, বুদ্ধিজীবী ও লেখক। জনকল্যাণ, নারীবাদী প্রচারণা এবং বৈশ্বিকতার জন্য তিনি বিংশ শতাব্দীর তৃতীয় দশকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জ্জন করেছিলেন।আধুনিক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জনকল্যাণূলক কর্মকাণ্ডের তিনি পথিকৃৎ।[1] সমাজকল্যাণে নিরলস প্রচেষ্টা এবং প্রথম মহাযুদ্ধোত্তর কালে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনবদ্য অবদানের জন্য তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদান করা হয়।[2]
জেন অ্যাডামস | |
---|---|
জন্ম | সিডারভিল, ইলিনয়, যুক্তরাষ্ট্র | ৬ সেপ্টেম্বর ১৮৬০
মৃত্যু | মে ২১, ১৯৩৫ ৭৪) শিকাগো, ইলিনয়, যুক্তরাষ্ট্র | (বয়স
শিক্ষা | রকফোর্ড ফিমেল সেমিনারি |
পেশা | সমাজকর্মী এবং রাজনৈতিক কর্মী, লেখক এবং বক্তা, কমিউনিটি সংগঠক, বুদ্ধিজীবী |
পিতা-মাতা | জন এইচ. অ্যাডামস সারাহ উইবার (অ্যাডামস) |
পুরস্কার | নোবেল শান্তি পুরস্কার (১৯৩১) |
স্বাক্ষর | |
প্রাথমিক জীবন
জেন এডামসের জন্ম সেডারভিল, ইলিনিওসের এক সমৃদ্ধশালী সুখী পরিবারে।[3] তিনি ছিলেন পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ ৮ম সন্তান। জেনের বয়স যখন মাত্র ২ বছর, তখন তার মা সারা অ্যাডামস গর্ভাবস্থায় যক্ষারোগে মারা যায়। জেনের পিতা জন এইচ অ্যাডামস ছিলেন “দ্যা সেকন্ড ন্যাশনাল ব্যাংক অব ফ্রিপোর্ট” এর প্রেসিডেন্ট, ১৮৫৪ থেকে ১৮৭০ পর্যন্ত ইলিনইস স্টেট সিনেটর। এছাড়াও তিনি ছিলেন আব্রাহান লিঙ্কন সমর্থিত রিপাবলিকান পার্টির একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। জেনের বয়স যখন ৮বছর, তখন তার পিতা জন এইচ অ্যাডামস আবার বিয়ে করেন।
শিক্ষাজীবন
জেনের বাবা তাকে উচ্চ শিক্ষা অর্জনে উৎসাহিত করতেন। জেন পড়ালেখা করেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে। রকফোর্ড কলেজ থেকে স্নাতক পাশের পর তিনি মাত্র ৭ মাস ফিলাডেলফিয়ার “উইমেন’স মেডিকেল কলেজ অব ফিলাডেলফিয়া” তে পড়ালেখা করেন এবং এর কিছুদিন পরই পড়ালেখা বর্জন করেন। এর কিছুদিন পর তার পিতার আকস্মিক মৃত্যুতে তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে ৫০,০০০ ইউ এস ডলার পান।
ইউরোপ ভ্রমণ
১৮৮৫ সালে তিনি ২ বছরের জন্য তার সৎ মায়ের সাথে ইউরোপ যান। ঘরে ফেরার পর তিনি বেশ একঘেয়ে হয়ে উঠেন, বিয়ের ব্যাপারে বেশ অনীহা দেখান এবং তৎকালীন সমসাময়িক মহিলারা জীবনে যা আশা করত তার চেয়ে বেশি কিছু তিনি চাইতেন। মেরুদণ্ডের বেশ জটিল এক চিকিৎসা শেষে ১৮৮৭ সালে তিনি পুনরায় ইউরোপে তার ২য় ভ্রমণে যান, এবার তার সফরসঙ্গী ছিলেন তার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু ও শিক্ষক “এলেন স্টার”।
হুল হাউজ
১৮৮৯ সালে তিনি তার কলেজ সহপাঠী “এলেন স্টার” শিকাগোতে সম্মিলিতভাবে গড়ে তুলেন “হুল হাউজ”, যা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সর্বপ্রথম Settlemenmt House। হাউজটির নামকরণ করা হয় “চার্লস হুল” এর নামানুসারে, যিনি দালানটি বানিয়েছিলেন ১৮৫৬ সালে। এবং এই হুল হাউজটি বানাতে গিয়ে জেন উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ৫০,০০০ ইউ এস ডলার এর পুরোটাই খরচ করেন। “হুল হাউজ” এর স্পন্সর হয়েছিলেন “হেলেন কালভার”, যিনি একজন বিত্তবান রিয়েল স্টেট ব্যবসায়ী ছিলেন।
১ম বিশ্বযুদ্ধে তার খোলাখুলি শান্তিবাদী মন্তব্য এবং যখন নৈরাজ্যবাদ ও সমাজতন্ত্র সবচাইতে আতঙ্কগ্রস্থ করে তুলেছিল যুক্তরাষ্ট্রকে, তখন তার “ডিফেন্স অব ইমিগ্র্যান্টস সিভিল রাইটস” এর কারণে জেন সবচাইতে রূঢ় সমালোচনার সম্মুখীন হন। কিন্তু তা জেনকে “হুল হাউস” কার্যক্রম কে সামনের দিকে এগিয়ে চলার আপ্রাণ চেষ্টাকে থামিয়ে রাখতে পারেনি। ১৯১২ সালে “থিয়োডোর রুজভেল্ট” এর প্রেসিডেন্সিয়াল ক্যাম্পেইন এ তিনি যোগদান করেন ব্যাপকভাবে এবং এতে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বক্তব্যও দেন।
শান্তি আন্দোলন
জেন “উইমেন’স ইন্টারন্যাশনাল লীগ ফর পীস এন্ড ফ্রীডম” এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, যার দায়িত্ব পালনের স্বার্থে তিনি ১ম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে এবং তার পরবর্তীকালে ইউরোপ এবং এশিয়া ভ্রমণে যেতে বাধ্য হন। জেন Carnegie Hall এ “শান্তিবাদ” এর উপর একটি ভাষণ দেন যা পত্র-পত্রিকা এবং মিডিয়া ভুলভাবে উপস্থাপন করে; এবং তাকে দেশদ্রোহী হিসেবে অভিহিত করে। এটা ছিল তার জীবনের সবচাইতে কঠিন সময়। পরবর্তীতে, তিনি বিভিন্ন শ্রেণীর কূটনীতিকদের সাথে মিলিত হন ও তাদের সাথে সাক্ষাতের মাধ্যমেই তার সময় অতিবাহিত করতে থাকেন এবং শান্তি রক্ষায় নারী আন্দোলনের ভূমিকা টিকিয়ে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। তার এই চেষ্টার স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ১৯৩১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী হিসেবে তিনি এই পুরস্কার লাভ করেছিলেন।
তথ্যসূত্র
- নোবলে পুরস্কার তথ্যতীর্থ
- নোবেল তথ্যতীর্থ
- Kathryn Cullen-DuPont (২০০০)। Encyclopedia of women's history in America। Infobase Publishing। পৃষ্ঠা 4–5। আইএসবিএন 978-0-8160-4100-8।
বহিঃসংযোগ
- Jane Addams স্ট্যানফোর্ড এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ফিলোসফি-র ভুক্তি, লিখেছেন Maurice Hamington Looks at her as "the first woman 'public philosopher' in United States history".
- গুটেনবের্গ প্রকল্পে Jane Addams-এর সাহিত্যকর্ম ও রচনাবলী (ইংরেজি)
- Harvard University Library Open Collections Program. Women Working, 1870-1930. Jane Addams (1860-1935). A full-text searchable online database with complete access to publications written by Jane Addams.
- Works by Jane Addams listed at the Online Books Page
- Jane Addams Hull-House Museum
- The Bitter Cry of Outcast London ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ মার্চ ২০১৯ তারিখে by Rev. Andrew Mearns
- Online photograph exhibit of Jane Addams from Swarthmore College's Peace Collection
- Gay Great article in Fyne Times magazine
- Taylor Street Archives; Hull House: Bowen Country Club
টেমপ্লেট:Social work