জীমূতবাহন

জীমূতবাহন প্রাচীন বঙ্গদেশের একজন সুবিখ্যাত ধর্মশাস্ত্র রচয়িতা ছিলেন।

সময়কাল

জীমূতবাহনের সময়কাল নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তিনি তার রচনায় রাজা ভোজ ও গোবিন্দরাজের উল্লেখ করেছেন, সেই হিসেবে তার সময়কাল একাদশ শতাব্দীর পূর্বে হওয়া অসম্ভব। অন্যদিকে বাচস্পতি মিশ্র, শূলপাণি ও রঘুনন্দন নামক চতুর্দশ শতকের তিন পণ্ডিত জীমূতবাহন রচিত গ্রন্থসমূহ আলোচনা করেছিলেন, সেই হিসেবে জীমূতবাহনের কাল চতুর্দশ শতকের পরে হওয়াও সম্ভব নয়। ঐতিহাসিক নীহাররঞ্জন রায়ের মতে তিনি দ্বাদশ বা ত্রয়োদশ শতকে জীবিত ছিলেন।[1]:৬১৫

রচনা

জীমূতবাহন কালবিবেক, ব্যবহারমাতৃকা ও দায়ভাগ নামক তিনটি গ্রন্থ রচনা করেন। কালবিবেক গ্রন্থে জীমূতবাহন ব্রাহ্মণ্য ধর্মের বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালনের শুভ ও অশুভ কাল ছাড়া সৌরমাস ও চান্দ্রমাস সবন্ধে আলোচনা করেছেন। ব্যবহারমাতৃকা গ্রন্থে তিনি ব্রাহ্মণ্য ধর্মের আদর্শ অনুযায়ী বিচারপদ্ধতির আলোচনা করেছেন। এই গ্রন্থ ব্যবহারমুখ, ভাষাপাদ, উত্তরপাদ, ক্রিয়াপদ ও নির্ণয়পাদ এই পাঁচটি বিভাগে বিভক্ত। এই পাঁচটি বিভাগে তিনি ব্যবহারের সংজ্ঞা, বিচারকের গুণ ও কর্তব্য, ধর্মাধিকরণ নামক সভ্যদের কর্তব্য, বিচারপ্রার্থীর আবেদন বা পূর্বপক্ষ, প্রতিভূ বা জামীন, প্রত্যার্থীদের চার প্রকার উত্তর, প্রমাণ, মানব ও দৈব সাক্ষ্য, বিচার ও বিচারফল সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছে। জীমূতবাহন তার দায়ভাগ গ্রন্থে হিন্দুসমাজে উত্তরাধিকার, সম্পত্তি-বিভাগ ও স্ত্রীধন সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।[1]:৬১৫,৬১৬

তথ্যসূত্র

  1. নীহাররঞ্জন রায়, বাঙ্গালীর ইতিহাস – আদি পর্ব, ষষ্ঠ সংস্করণ, মাঘ ১৪১৪, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা-৭০০০৭৩ আইএসবিএন ৮১-৭০৭৯-২৭০-৩

আরো পড়ুন

  • Rocher, Ludo. Jīmūtavāhana's Dāyabhāga, Oxford Univ Press, 2002, আইএসবিএন ০-১৯-৫১৩৮১৭-১
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.