জিম স্মিথ

সেড্রিক ইভান জেমস স্মিথ (ইংরেজি: Sid Pegler; জন্ম: ২৫ আগস্ট, ১৯০৬ - মৃত্যু: ৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৯) উইল্টশায়ারের কোরশাম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন।[1] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৭ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে মিডলসেক্স দলের প্রতিনিধিত্ব করে গেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে কার্যকরী ব্যাটিংশৈলী উপস্থাপন করেছেন ‘বিগ জিম’ নামে পরিচিত জিম স্মিথ

জিম স্মিথ
১৯৩৬ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে জিম স্মিথ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামসেড্রিক ইভান জেমস স্মিথ
জন্ম(১৯০৬-০৮-২৫)২৫ আগস্ট ১৯০৬
কোরশাম, উইল্টশায়ার, যুক্তরাজ্য
মৃত্যু৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯(1979-02-08) (বয়স ৭২)
মেলর, ল্যাঙ্কাশায়ার, যুক্তরাজ্য
ডাকনামবিগ জিম
উচ্চতা ফুট ৪ ইঞ্চি (১.৯৩ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট
সম্পর্কউইলিয়াম স্মিথ (ভ্রাতা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৮১)
৮ জানুয়ারি ১৯৩৫ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ টেস্ট২৪ জুলাই ১৯৩৭ বনাম নিউজিল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২০৮
রানের সংখ্যা ১০২ ৪,০০৭
ব্যাটিং গড় ১০.১৯ ১৪.৬৭
১০০/৫০ ০/০ ১/১৫
সর্বোচ্চ রান ২৭ ১০১*
বল করেছে ৯৩০ ৪৩,০৫৮
উইকেট ১৫ ৮৪৫
বোলিং গড় ২৬.১৯ ১৯.২৫
ইনিংসে ৫ উইকেট ৪৭
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৫/১৬ ৮/১০২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/– ৯৮/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৭ জুন ২০১৯

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) মাঠকর্মী হিসেবে ১৯২৬ সালে যোগদান করেন । ১৯৩০ সাল থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত জিম স্মিথের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৯২৬ থেকে ১৯৩৩ সাল পর্যন্ত উইল্টশায়ারের পক্ষে খেলতে থাকেন জিম স্মিথ। এখানেই মিডলসেক্স কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন।

অতঃপর ১৯৩৪ সালে মিডলসেক্সের পক্ষে খেলার যোগ্যতা লাভ করেন তিনি। উদ্বোধনী মৌসুমেই ১৮.৮৮ গড়ে ১৭২ উইকেট তুলে নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের বোলিং গড়ে ৬ষ্ঠ স্থান অধিকারের কৃতিত্ব দেখান। এ বছরেই লর্ডসে প্লেয়ার্সের সদস্যরূপে জেন্টলম্যানের বিপক্ষে খেলার সুযোগ পান। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে খুব কম অংশগ্রহণ সত্ত্বেও ইংরেজ দলে খেলার জন্যে আমন্ত্রিত হন। ১৯৩৫ সালে পূর্ববর্তী মৌসুমের অনিন্দ্যসুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননা লাভ করেছিলেন।[2]

ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ দূরত্বে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। ১৯৩৭ সালে লর্ডসের উত্তর দিকে ওল্ড গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডে এ শটটি খেলেছিলেন।[3] ১৯৩৮ সালে গ্লুচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে দূর্দান্ত খেলেন। ব্রিস্টলের কাউন্টি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে মাত্র ১১ মিনিটে অর্ধ-শতরান করার রেকর্ড গড়েছেন তিনি।[4][5] এর পূর্বে ১৯৩৫ সালে মেইডস্টোনে কেন্টের বিপক্ষে মাত্র ১৪ মিনিটে ৫০ রান তুলেছিলেন। একই ক্লাবের বিপক্ষে ১৯৩৯ সালে ৮১ মিনিটে অপরাজিত ১০১ রান তুলে নিজস্ব একমাত্র শতরানের ইনিংস খেলেন।[3] এ পর্যায়ে শেষ উইকেট জুটিতে ইয়ান পিবলসের সাথে ১১৬ রান যুক্ত করেন। তন্মধ্যে, নিজে করেন ৯৮ রান। ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত মিডলসেক্সের প্রধান বোলিং মেরুদণ্ডকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে পাঁচটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করার সুযোগ হয়েছিল জিম স্মিথের। ৮ জানুয়ারি, ১৯৩৫ তারিখে ব্রিজটাউনে স্বাগতিক ওয়েস্ট বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২৪ জুলাই, ১৯৩৭ তারিখে ম্যানচেস্টারে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৩৪-৩৫ মৌসুমে দলের শক্তিমত্তা বৃদ্ধিতে এমসিসি দলের সাথে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমনের জন্যে মনোনীত হন। প্রত্যেক খেলাতেই অংশগ্রহণ ছিল তার। ব্রিজটাউনের অভিষেক টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ-উইকেট লাভের কৃতিত্ব দেখান।[6] ব্যাট হাতে নিয়েও দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী উপহার দেন।

এছাড়াও, ১৯৩৭ সালে ওল্ড ট্রাফোর্ডে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন। অংশগ্রহণকৃত টেস্টগুলোয় মাত্র ১০ ইনিংসে ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়েছিলেন। শেষ ইনিংস পর্যন্ত কখনো একই অবস্থানে থেকে উপর্যুপরী উভয় ইনিংসে ব্যাটিং করার সুযোগ পাননি। ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৮, ৯ (দুইবার) ও ১০ (দুইবার) নম্বরে ব্যাটিং করেছেন।[7]

খেলার ধরন

ছয় ফুট চার ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী দীর্ঘদেহী জিম স্মিথ বলের নিখুঁততা ভাব বজায় রাখতে সচেষ্ট ছিলেন ও এরজন্যে তিনি প্রচণ্ড পরিশ্রম করেছিলেন। খেলোয়াড়ী জীবনে ১৭.৭৫ গড়ে ৬৭৬ উইকেট পান। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে কার্যতঃ তার প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে।

মূলতঃ ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলায় অংশ নিতেন জিম স্মিথ। স্ট্যাম্প বরাবর বোলিং করে সফলতা পেয়েছেন। এছাড়াও, দীর্ঘ সময় ধরে বোলিংয়ে সক্ষমতা দেখিয়েছেন। বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডার হিসেবে সমান গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন। নিচেরসারিতে বড় ধরনের মারের কারণেও তিনি সুনাম অর্জন করেছিলেন।

৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৯ তারিখে ৭৩ বছর বয়সে ল্যাঙ্কাশায়ারের মেলর এলাকার ব্ল্যাকবার্নের কাছাকাছি নিজবাড়ীতে জিম স্মিথের দেহাবসান ঘটে। স্বীয় ভ্রাতা উইলিয়াম স্মিথ দুইটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় উইল্টশায়ারের পক্ষে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

তথ্যসূত্র

  1. ESPNcricinfo, ESPN, সংগ্রহের তারিখ: ৭ জুন ২০১৯
  2. "Wisden's Five Cricketers of the Year"ESPNcricinfoESPN। ২৩ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৫
  3. Bearshaw, Brian (১৯৮৬)। The Big Hitters। England: Queen Anne Press। পৃষ্ঠা 199। আইএসবিএন 0356106845।
  4. Frindall, Bill (১৯৯৮)। The Wisden Book of Cricket Records (Fourth সংস্করণ)। London: Headline Book Publishing। পৃষ্ঠা 124আইএসবিএন 0747222037।
  5. Williamson, Martin। "The ultimate slogger"www.ESPNCricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০১৩
  6. "1st Test: West Indies v England at Bridgetown, Jan 8-10, 1935"espncricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১২-১৮
  7. Walmsley, Keith (২০০৩)। Mosts Without in Test Cricket। Reading, England: Keith Walmsley Publishing Pty Ltd। পৃষ্ঠা 457। আইএসবিএন 0947540067।

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.