জিমন্যাস্টিকস

জিমন্যাস্টিক্‌স (ইংরেজি: Gymnastics) শারীরিক কলা-কৌশল প্রদর্শনের ক্রীড়াবিশেষ; যাতে দৌঁড়, লাফ, ডিগবাজী, সমারসল্টিং এবং ভারসাম্য রক্ষা করার বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট থাকে। মেয়েদের ক্ষেত্রে চার ধরনের - ফ্লোর, বার (ক্রীড়া), বীম এবং ভল্ট উপকরণাদি ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে ছেলেদের ক্ষেত্রে ফ্লোর, প্যারালেল বার, হাই বার, পমেল হর্স, ভল্ট এবং রিং - এ ছয় ধরনের উপকরণ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

অফিসারদের জন্য প্রতিদিনের জন্য পৃথক জিমন্যাস্টিকস

এ ক্রীড়ায় যে প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে থাকেন, তিনি জিমন্যাস্ট নামে সর্বসমক্ষে পরিচিতি লাভ করেন। জিম্যানস্টিক্‌সে একজন প্রতিযোগী অন্য প্রতিযোগীর মোকাবেলা করে থাকে। সেখানে সবচেয়ে ভালো ক্রীড়াশৈলীর প্রদর্শনের মাধ্যমে যোগ্যতা ও বিজয়ী নির্ধারণ করা হয়। ফলাফল হিসেবে বিজয়ী প্রতিযোগী ট্রফি, ফিতা কিংবা পদক লাভ করেন। অলিম্পিক ক্রীড়ায় জিমন্যাস্টিক্‌স অন্যতম প্রধান ক্রীড়া বিষয় হিসেবে বিবেচিত।

ইতিহাস

প্রাচীন গ্রীক সভ্যতার সূচনালগ্নে জিমন্যাস্টিক্‌সের উৎপত্তি ঘটেছিল বলে ধারণা করা হয়। ষাঁড়ের উপর থেকে এক ব্যক্তির লাফ দেয়াকে কেন্দ্র করে জিমন্যাস্টিক্‌স ক্রীড়ার প্রবর্তনা। এছাড়া, অ্যাথলেটিক্‌সের একগুচ্ছ প্রতিযোগিতায় কি কি ঘটে থাকে তা থেকেও জিমন্যাস্টিক্‌স খেলাটির প্রচলন হতে পারে। এ ক্রীড়ায় দৌঁড়, ওজন বহন, রশি সহযোগে আরোহণ, লাফ দিয়ে বাঁধা প্রাচীর অতিক্রমণ ইত্যাদি বিষয়গুলো এতে সংশ্লিষ্ট থাকে। আধুনিক অলিম্পিকের সূচনালগ্নে এটি সম্পৃক্ত হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে শুধুমাত্র পুরুষদেরকেই এ খেলায় অংশগ্রহণের জন্যে অনুমতি দেয়া হয়েছিল।

আধুনিক জিমন্যাস্টিক্‌সে ফ্লোর, বার, বীম, পমেল হর্স, রিং এবং ভল্টের উপযোগী উপকরণ খেলায় ব্যবহার করা হয়। দীর্ঘদিন নারী ক্রীড়াবিদগণ এ খেলায় অংশগ্রহণের অনুমতি পাননি। তাদেরকে খেলায় অংশগ্রহণের জন্যে ভিন্ন ভিন্ন উপকরণাদি প্রদান করা হয়।

শিল্পায়িত জিমন্যাস্টিক্‌স

জিমন্যাস্টিক্‌সের অন্যতম বিভাগ হিসেবে এটি পরিগণিত হয়ে থাকে। এতে একজন জিমন্যাস্ট ৩০ থেকে ৯০ সেকেন্ডব্যাপী সময়কালের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের উপকরণের সাহায্যে নিজের দক্ষতা মেলে ধরেন। সবচেয়ে কমসময় খরচ হয় ভল্টিং বিষয়ে। পুরুষ এবং মহিলা - উভয় স্তরের জিমন্যাস্টগণ শিল্পায়িত বা আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিক্‌সে অংশগ্রহণ করেন। সচরাচর পুরুষ প্রতিযোগীগণ ৬টি বিষয় - ফ্লোর এক্সারসাইজ, পমেল হর্স, স্টিল রিংস, ভল্ট, প্যারাল্যাল বার এবং হাই বারে অংশ নেন। মহিলা প্রতিযোগীরা চারটি বিষয় - ভল্ট, আনইভেন বার, ব্যালেন্স বীম এবং ফ্লোর এক্সারসাইজে তাদের ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন। ব্যতিক্রম হিসেবে ১৯৫০-এর দশকে সোভিয়েত নারীরা রিং, হাই বার এবং প্যারাল্যাল বারেও অংশ নিয়েছিলেন। শারীরিক গঠন, শক্তিমত্তা, নমনীয়তা, সচেতনতার প্রেক্ষাপটে বিষয়গুলোকে সঙ্কুচন করতে হয়েছে।

২০০৬ সালে ফিগ কর্তৃপক্ষ শিল্পায়িত জিমন্যাস্টিক্‌সে ১০ পয়েন্টের সীমাবদ্ধতা তুলে নিয়েছে। এ পদ্ধতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় ব্যবহার করা হচ্ছে।[1]

অলিম্পিক ক্রীড়া

আধুনিক অলিম্পিক ক্রীড়ায় আর্টিস্টিক ও রিদমিক - উভয় ধরনের জিমন্যাস্টিক্‌স ক্রীড়াই রয়েছে এবং অন্যতম জনপ্রিয় ক্রীড়ায় পরিণত হয়েছে। ব্যক্তিগত ও দলগত পর্যায়ে বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীগণ অংশগ্রহণ করে থাকেন। যে সকল দেশ থেকে দলগত পর্যায়ে ক্রীড়াবিদ প্রেরণ করতে পারে না তারা এক বা দু'জন জিমন্যাস্টকে প্রেরণ করে থাকে।

রিদমিক জিমন্যাস্টিক্‌সে শুধুমাত্র মহিলা ক্রীড়াবিদগণই অংশগ্রহণের জন্য অনুমতিপ্রাপ্ত। শৈশবকাল থেকেই এতে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি-পর্ব গ্রহণ করতে হয়। বয়সের যোগ্যতা অনুসারে তাদেরকে অলিম্পিকে অংশগ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়। ১ জানুয়ারি তারিখে একজন জিমন্যাস্টের বয়স অবশ্যই ১৬ বছর হতে হবে।

তথ্যসূত্র

  1. "www.usa-gymnastics.org"। ১৩ এপ্রিল ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ আগস্ট ২০১২

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.