জামালপুর জিলা স্কুল
জামালপুর জিলা স্কুল বাংলাদেশের একটি প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৮৮১ সালে ডনো হাই স্কুল নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৯ সালে জামালপুর জেলার মর্যাদা পেলে বিদ্যালয়টির নাম পরিবর্তন করে জামালপুর জিলা স্কুল রাখা হয়। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে প্রভাতী ও দিবা দুটি শাখায় তৃতীয় শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। [1]
জামালপুর জিলা স্কুল | |
---|---|
অবস্থান | |
তথ্য | |
ধরন | সরকারি বিদ্যালয় |
নীতিবাক্য | "জ্ঞানই শক্তি" |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৮৮১ |
বিদ্যালয় বোর্ড | মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা |
শ্রেণী | তৃতীয় - দশম |
লিঙ্গ | বালক বিদ্যালয় |
শিক্ষার্থী সংখ্যা | ১৫০০+ |
ভাষা | বাংলা |
ক্যাম্পাসের ধরন | ব্রহ্মপুত্র নদের একেবারে পাড়ে অবস্থিত, খোলামেলা, মাঝখানে মাঝারি একটু মাঠ আছে, |
ক্রীড়া | ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন |
ডাকনাম | JZS |
বিশেষ প্রকল্প | ব্রিটিশ কাউন্সিল এর অধীনে ক্লাস পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম। |
ওয়েবসাইট | www |
ইতিহাস
১৮৫৬ সালে তৎকালীন জামালপুর মহকুমা প্রশাসক টি.এ ডনো স্থানীয়দের মাঝে ইংরেজি শিক্ষাপ্রসারের লক্ষ্যে নিজ বাসভবনে একটি পাঠশালা প্রতিষ্ঠা করেন। স্থানীয়দের কাছে এটি ডনো সাহেবের পাঠশালা নামে পরিচিত ছিল। ছোট ছোট ছেলেদের নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে এ বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। কয়েক বছর পরে পাঠশালাটি মাইনর স্কুলে পরিণত হয়। ১৮৮১ সালে মাইনর স্কুলটিকে এন্ট্রান্স স্কুলে (বর্তমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়) উন্নীত করে ‘‘ডনো হাই স্কুল’’ নামকরণ করা হয় । ১৮৮২ সালে স্যার রিচার্ড টেম্পল বিদ্যালয়টিকে সরকারি সাহায্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। এ সময় নামকরণ করা হয় ‘জামালপুর ডনো ইংলিশ হাই স্কুল’। এই সময়ে বিদ্যালয়ের ছাত্র সংখ্যা ছিল ২২৩ জন। ১৯১২ সালে স্কুলটির পরিপূর্ণ জাতীয়করণ হয় এবং বিদ্যালয়ের নাম হয় ‘‘জামালপুর সরকারি বিদ্যালয়’’। ১৯৭৯ সালে জামালপুর জেলা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ‘‘জামালপুর জিলা স্কুল’’ হিসেবে এর নতুন নামকরণ হয়।
১৮৯০ থেকে ১৯০৮ সালের মধ্যে শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য দুটি ছাত্রাবাস নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে একটি ছিল হিন্দু ছাত্রদের জন্য হিন্দু বোডিং। বর্তমানে এ ছাত্রাবাসটির অস্তিত্ব নেই, সেখানে রয়েছে খেলার মাঠ ও বিদ্যালয় ভবন। অপরটি মুসলিম ছাত্রদের জন্য ম্যাক্সি মোহামেডান হোস্টেল। ১৯০৮ সালে তৎকালীন জামালপুরের মহকুমা প্রশাসক মি. এফ. এ. মাক্সি এই ছাত্রাবাসটি প্রতিষ্ঠা করেন।
অবকাঠামো
জামালপুর শহরে অবস্থিত এ বিদ্যালয়টি সর্বমোট ১২.০৭ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। এখানে তিনটি তিনতলা একাডেমিক ভবন, একটি দোতলা ভবন, দুটি একতলা ভবন, ১টি ছাত্রাবাস, মসজিদ সহ ১৩ টি স্থাপনা রয়েছে।
শিক্ষা কার্যক্রম
১৯৯০ সাল থেকে জামালপুর জিলা স্কুলে প্রভাতী ও দিবা দুইটি শাখায় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। প্রভাতী শাখা সকাল ৭ টা ১৫ মিনিট থেকে ১১ টা ৩০ মিনিট ও দিবা শাখায় ১১ টা ৪৫ মিনিট থেকে বিকেল ৫.০০ টা পর্যন্ত পাঠদান করা হয়।
বর্তমানে বিদ্যালয়ের মোট ছাত্র সংখ্যা ১,৫৭০ এবং শিক্ষকশিক্ষিকার সংখ্যা ৫০ জন। এ ছাড়া অফিস সহকারী, এমএলএস ও নৈশ প্রহরী মিলে ১৪ জন প্রশাসনিক কর্মচারীর রয়েছে। বিদ্যালয়ে ছাত্রদের সুযোগ-সুবিধার মধ্যে আছে গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, কম্পিউটার ল্যাব ও ল্যাবরেটরি। এই বিদ্যালয়ে সহপাঠ কর্মকান্ডের মধ্যে রয়েছে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, বার্ষিক সাংস্কৃতিক ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, বার্ষিক মিলাদ মাহফিল, আন্তঃকক্ষ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং স্কাউটিং, বিএনসিসি ও রেডক্রিসেন্ট কর্মসূচি।
শিক্ষার্থীদের পোশাক
শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুলে নির্ধারিত পোশাক নিম্নরূপ
- সাদা শার্ট (হাফ হাতা)
- খাকী ফুল প্যান্ট
- সাদা জুতা
- খয়েরী সোয়েটার
- স্কুলের মনোগ্রাম যুক্ত ব্যাজ (শার্টের বাম পকেটে লাগানো)
শিক্ষা-সহায়ক কার্যক্রম
- বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা
- জামালপুর জিলা স্কুল বিতর্ক ক্লাব
- জামালপুর জিলা স্কুল বিজ্ঞান ক্লাব
- জামালপুর জিলা স্কুল ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব
- সাংস্কৃতিক সংগঠন
- বাংলাদেশ স্কাউটস
- বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি)
- বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট
উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- আলহাজ্ব মির্জা আজম এমপি, সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী
- মনোরঞ্জন সরকার
- আব্দুল করিম, সাবেক পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদের প্রথম স্পিকার
- গিয়াস উদ্দিন আহম্মদ, সাবেক প্রাদেশিক খাদ্য ও মৎস্য মন্ত্রী
- খান বাহাদুর ফজলুর রহমান, সাবেক পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের চিফ হুইপ
- সফি সামী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা
- নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর
- ওস্তাদ ফজলুল হক, সঙ্গীতজ্ঞ
- আব্দুল্লাহ আল মামুন, অভিনেতা
- এডভোকেট হায়দার আলী মল্লিক, সাবেক সংসদ সদস্য
- মির্জা সুলতান রাজা, রাজনীতিবিদ
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- "জামালপুর জিলা স্কুল - বাংলাপিডিয়া"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-১৮।