জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র
জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র বাংলাদেশের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান যা গ্রন্থ ও প্রকাশনা বিষয়ে সরকারকে সহায়তা ও পরামর্শ প্রদানের কাজে নিয়োজিত।[1][2] এই প্রতিষ্ঠানটি ঢাকার গুলিস্তানে অবস্থিত এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত।[3] এর প্রধান কাজ বেসরকারি পাঠাগারগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা করা।[4]
সংক্ষেপে | এনবিসি |
---|---|
গঠিত | ১৯৭২ |
ধরন | সরকারি |
আইনি অবস্থা | সক্রিয় |
সদরদপ্তর | গুলিস্তান |
অবস্থান | |
যে অঞ্চলে কাজ করে | বাংলাদেশ |
সদস্য | সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় |
দাপ্তরিক ভাষা | বাংলা ও ইংরেজি |
পরিচালক | মিনার মনসুর |
ওয়েবসাইট | www |
ইতিহাস
১৯৬০ সালে ইউনেস্কোর সহযোগীতায় তৎকালীন পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষা বিভাগের অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘ন্যাশনাল বুক সেন্টার অব পাকিস্তান’ যার একটি শাখা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকায় স্থাপন করা হয় এবং স্বাধীনতার পর এটিকে ‘জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র বাংলাদেশ’ নামকরণ করা হয় ও পরবর্তীতে, ১৯৮৩ সালে এনাম কমিটির সুপারিশ অনুসারে একে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা দেয়া হয়।[5] ১৯৯৫ সালের ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ২৭নং আইন বলে ‘জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র’ আইন প্রণয়ন করা হয় এবং প্রতিষ্ঠানটির নতুন নামকরণ ‘জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র’ করে এটিকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়।[1]
অবস্থান
ঢাকার গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজারের বিপরীতে নিজেস্ব ভবনে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ জাতীয় গ্রন্থাগার চত্বরে অবস্থিত বহুতল ভবনে সরিয়ে নেয়া হবে বলে ২০১৬ সালে সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়।[6]
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
এই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হিসাবে বলা হয়েছে[1][7] -
- জ্ঞান ও মননশীলতার উৎকর্ষ সাধনে গ্রন্থ ও তার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ডকে তরান্বিত করা;
- সাহিত্যমনস্ক ও জ্ঞানসমৃদ্ধ জাতি ও সমাজ গঠন করা;
- দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বেসরকারীভাবে গ্রন্থাগার স্থাপনে জনসাধারনকে উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ করা;
- বেসরকারী গ্রন্থাগারের প্রচার ও প্রসার বৃদ্ধি করা;
- লেখক, কবি ও সাহিত্যিককে তার সৃষ্টিশীলতার বিকাশ ও প্রসার ঘটাতে উদ্বুদ্ধ করা;
- পুস্তক বা গ্রন্থ প্রকাশনা শিল্পকে উৎসাহিত ও লাভজনক শিল্পে পরিণত করা;
- পুস্তক বা গ্রন্থের প্রকাশ, প্রকাশনা বৃদ্ধি তরান্বিত করা;
- বইমেলাকে দেশ ও দেশের বাইরে সর্বস্তরের জনসাধারনের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া;
- সর্বসাধারনের মধ্যে লেখক, কবি, সাহিত্যিক ও তাদের প্রকাশিত পুস্তক বা গ্রন্থের পরিচিতি বাড়ানো;
- জনসাধারনকে গ্রন্থ পাঠে সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করা।
কার্যক্রম
সৃজনশীল প্রকাশনাকে উৎসাহিত করা, পাঠক সৃষ্টি করা, পাঠ সামগ্রীর উপর গ্রন্থপঞ্জি প্রকাশ, গ্রন্থ বিষয়ে বিভিন্ন গবেষণা পরিচালনা ও প্রতিবেদন প্রকাশ, বইমেলার আয়োজন করা, গ্রন্থাগার সেবার মান উন্নয়ন করা, জনসাধারনের মধ্যে পাঠ সচেতনতা সৃষ্টি করা, প্রকাশণার বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুরস্কার প্রদান করা, বেসরকারী গ্রন্থাগারকে সহায়তা প্রদান, গ্রন্থাগারের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ প্রদান, গ্রন্থ ও প্রকাশনা বিষয়ে সরকারকে সহায়তা প্রদান, গ্রন্থবিষয়ক সেমিনার ও আলোচনার আয়োজন, প্রভৃতি কার্যসম্পাদনের লক্ষ্যে এই প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করা হয়।[1][2]
এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবছর শ্রেষ্ঠ প্রকাশক ও শ্রেষ্ঠ মুদ্রাকর বিষয়ে পুরস্কার প্রদান করে থাকে।[8][9]
তথ্যসূত্র
- "জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র আইন, ১৯৯৫"। আইন ও সংসদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২০ নভেম্বর ১৯৯৫। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- "জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের কার্যাবলী"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- "অনিয়মের ঘেরাটোপে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র"। দৈনিক যুগান্তর। ৩০ জুন ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- "পাঠাগারের পৃষ্ঠপোষকতায় পিছিয়ে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র"। দৈনিক শিক্ষা ডটকম। ২৯ মার্চ ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- "সংক্ষিপ্ত ইতিহাস"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- "Jatiya Grantha Kendra and Central Public Library to share grounds"। দ্যা ডেইলি অবজারভার। ২৪ মার্চ ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- "জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- "Dam receives National Book Centre Award"। archive.thedailystar.net। The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ৩ আগস্ট ২০১৯।
- "Mohiuddin Ahmed"। The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৩ আগস্ট ২০১৯।