জল ভরার গান
জল ভরার গান বাংলার পল্লী অঞ্চলের একধরনের ব্যবহারিক (functional) বা আনুষ্ঠানিক সংগীত। মূলত বাঙালি হিন্দু বিবাহের বিভিন্ন স্ত্রী-আচার পালনের জন্য নদী বা পুকুর থেকে জল আনার সময়ে এয়োতি মহিলারা একত্রে এই গান গেয়ে থাকেন।[1]
পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গীত | |
---|---|
![]() বীরভূমে বাউল গানের একটি অনুষ্ঠান | |
ধারা | |
| |
নির্দিষ্ট ফর্ম | |
ধর্মীয় সঙ্গীত | |
জাতিগত সঙ্গীত | |
ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত | |
গণমাধ্যম ও অনুষ্ঠান | |
সঙ্গীত মাধ্যম | বেতার
টেলিভিশন ইন্টারনেট |
অঞ্চলিক সঙ্গীত | |
সম্পর্কিত এলাকা | |
অন্যান্য অঞ্চল | |
বৈশিষ্ট্য
বাঙালি হিন্দুসমাজে বিবাহের দিনে বর ও কনে উভয়কে বিবাহের আগে নিজ নিজ বাড়িতে স্নান করানোর জন্য বিজোড় সংখ্যায় (সাধারণত ৫, ৭, ৯ জন) সধবা মহিলারা একত্রে কলসী কাঁখে, বরণকূলা ও অন্যান্য বিবাহ-সম্পর্কিত সরঞ্জাম হাতে নিয়ে পুকুর বা নদীর ঘাটে জল আনতে যান; তখন তারা উলুধ্বনি ও শঙ্খধ্বনি সহযোগে এক ধরনের হালকা চালের চটুল অঙ্গের গান পরিবেশন করেন — যা জল ভরার গান নামে পরিচিত।
এই গানের কথা প্রধানত রাধা-কৃষ্ণবিষয়ক, তবে হালকা রসিকতাও এতে স্থান পায় এবং এই গান গাইবার রীতি কেবল স্ত্রী-সমাজেই সীমাবদ্ধ। এই ধরনের ব্যবহারিক সঙ্গীতের বৈশিষ্ট্য হল, এগুলি অনুষ্ঠান ব্যতীত অন্যসময় গীত হয় না। এরূপ একটি গানের নমুনা —
"ওগো, সাঁঝের বেলা কে তোরে
জল আনতে বলেছে।
কে, জল আনতে বইলাছে।
ঘরের জল বাইরে ফেলে
যমুনার জল আনতে গেলে,
না জানি কোন কালার
সনে প্রেম মইজাছে।
কে, জল আনতে বইলাছে।"
তথ্যসূত্র
- চক্রবর্তী, ড. বরুণকুমার সম্পাদিত (১৯৯৫)। বঙ্গীয় লোকসংস্কৃতিকোষ। কলকাতা: অপর্ণা বুক ডিস্ট্রিবিউটার্স। পৃষ্ঠা ১৩৯। আইএসবিএন 81-86036-13-X।