জর্জ ওয়াল্ড
জর্জ ওয়াল্ড (ইংরেজি: George Wald; ১৮ই নভেম্বর, ১৯০৬ – ১২ই এপ্রিল, ১৯৯৭) একজন মার্কিন বিজ্ঞানী ছিলেন যিনি চোখের অক্ষিপটে রঞ্জক নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি ১৯৬৭ সালে হলডান কেফার হার্টলাইন ও রাগনার গ্রানিতের যৌথভাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।[1] "চোখের মুখ্য শারীরতাত্ত্বিক ও রাসায়নিক দৃষ্টিগত প্রক্রিয়াগুলি সংক্রান্ত আবিষ্কারসমূহের জন্য" তাদেরকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়।
জর্জ ওয়াল্ড | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১২ এপ্রিল ১৯৯৭ ৯০) ক্যামব্রিজ, ম্যাসাচুসেটস | (বয়স
জাতীয়তা | মার্কিন |
পরিচিতির কারণ | অক্ষিপটের রঞ্জকসমূহ আবিষ্কার |
দাম্পত্য সঙ্গী | ফ্রান্সিস কিংসলি (১৯৩১-?; তালাকপ্রাপ্ত; ২ সন্তান) রুথ হাবার্ড (বিবাহ ১৯৫৮; ২ সন্তান) |
পুরস্কার | ১৯৬৭ চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | স্নায়ুজীববিজ্ঞান |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় |
আমাদের চারপাশের জগৎ থেকে আগত আলোকরশ্মিগুলি চোখের পেছনের অক্ষিপটের বহুসংখ্যক আলোক-সংবেদী কোষগুলিতে গিয়ে পড়ার মাধ্যমে আমাদের দর্শনশক্তি কাজ করে। জর্জ ওয়াল্ড আবিষ্কার করেন যে ভিটামিন এ অক্ষিপটের রডপসিন নামক আলোক-সংবেদী পদার্থের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তিনি ১৯৩০-এর দশক থেকে ১৯৬০-এর দশক পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে সম্পাদিত অনেকগুলির গবেষণার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেন যে কীভাবে আলো রডপসিনের রূপান্তর ঘটায়। এই রূপান্তরের ফলে যে সংকেতগুলি উৎপন্ন হয়, সেগুলি স্নায়ুকোষের এক জটিল জালিকাব্যবস্থার মধ্য দিয়ে বেশ কিছু সংখ্যক পুনঃসংযোগ ও রূপান্তরের পরে শেষ পর্যন্ত মস্তিষ্কে গিয়ে দৃষ্টিগত ধারণার জন্ম দেয়।
গবেষণা
ডক্টরেটোত্তর গবেষক হিসেবে কাজ করার সময় ওয়াল্ড আবিষ্কার করেন যে ভিটামিন এ অক্ষিপটের একটি উপাদান। তিনি এ ব্যাপারে আরও পরীক্ষানিরীক্ষা চালান এবং বের করেন যে যখন রডপসিন (Rhodopsin) নামক রঞ্জকটি আলোর সংস্পর্শে আসে, তখন সেটি অপসিন নামক প্রোটিন ও ভিটামিন এ সম্বলিত একটি যৌগ উৎপাদন করে। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে ভিটামিন এ অক্ষিপটের ক্রিয়ার জন্য অত্যাবশ্যক।
১৯৫০-এর দশকে ওয়াল্ড ও তার সহযোগীরা রাসায়নিক পদ্ধতিসমূহ ব্যবহার করে অক্ষিপট থেকে রঞ্জক বের করে আনেন। এরপর একটি বর্ণালি-আলোকমাপক যন্ত্র ব্যবহার করে তারা রঞ্জকগুলির আলোক অবশোষকতা পরিমাপ করতে সক্ষম হন। যেহেতু অক্ষিপটের রঞ্জকগুলি দ্বারা আলোর অবশোষকতা ও চোখের আলোকগ্রাহী কোষগুলিকে সবচেয়ে বেশি সক্রিয়কারী তরঙ্গদৈর্ঘ্যগুলির মধ্যে সম্বন্ধ আছে, তাই এই পরীক্ষার মাধ্যমে চোখ কোন কোন তরঙ্গদৈর্ঘ্যগুলি শনাক্ত করতে সবচেয়ে বেশি সক্ষম, তা বের হয়ে আসে। তবে যেহেতু দণ্ড বা বেলনকোষগুলি (রড সেল) অক্ষিপটের সিংহভাগ গঠন করে, তাই ওয়াল্ড ও তার সহযোগীরা বিশেষ করে যে ব্যাপারটি পরিমাপ করছিলেন, তা হল রডপসিনের অবশোষকতা, যা কিনা দণ্ডকোষগুলিতে অবস্থিত মূল রঞ্জক পদার্থ। পরবর্তীতে অণুবর্ণালি-আলোকমিতি (microspectrophotometry) নামক একটি কৌশল ব্যবহার করে ওয়াল্ড রঞ্জকসমূহের নির্যাসের পরিবর্তে সরাসরি কোষগুলি থেকে অবশোষকতা পরিমাপে সক্ষম হন। এভাবে তিনি শঙ্কু কোষগুলিতে (কোন সেল) রঞ্জকগুলির অবশোষকতা নির্ণয়ে সমর্থ হন। (গোল্ডস্টিন, ২০০১)
জীবনী
ওয়াল্ড নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯২৭ সালে ব্যাচেলর অব সায়েন্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৩২ সালে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণীবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৩৪ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় সাথে প্রথমে ইনস্ট্রাক্টর এবং পরবর্তীতে অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেন।[2]
তথ্যসূত্র
- The Nobel Foundation। "The Nobel Prize in Physiology or Medicine 1967"। Nobelprize.org। Nobel Media AB 2014। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ১২, ২০১৫।
- George Wald - Biographical
বহিঃসংযোগ
- Nobel Prize Biography ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ ডিসেম্বর ২০০১ তারিখে
- John E. Dowling, "George Wald, 1906–1997: A Biographical Memoir ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে" in Biographical Memoirs, Washington, D.C.: The National Academy Press (National Academy of Sciences), Volume 78, 298:317.
- A remembrance by his son Elijah
- Papers of George Wald : an inventory