জর্জ অ্যান্ড্রু ওলা

জর্জ অ্যান্ড্রু ওলা (জন্মনাম: ওলা গিওর্গি,২২ মে ১৯২৭-৮ মার্চ ২০১৭) একজন হাঙ্গেরীয়-আমেরিকান রসায়নবিদ ছিলেন। সুপার-এসিড বা মহা-অম্লগুলোর কার্বোকেশন (যে আয়নে ধনাত্মক আধানযুক্ত কার্বন পরমাণু থাকে) উৎপাদন এবং বিক্রিয়ক ধর্ম নিয়ে তিনি গবেষণা করেন। কার্বোকেশন রসায়নে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৪ সালে তিনি রসায়নে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। [3]ওলা আমেরিকান রসায়ন সমিতির সবচেয়ে সম্মানজনক প্রিস্টলি পদকে ভূষিত হন। এছাড়াও রাসায়নিক গবেষণায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৯৬ সালে এফ.এ.কটন মেডেল ফর এক্সিলেন্সে ভূষিত হন। [4][5][6]

জর্জ অ্যান্ড্রু ওলা
জর্জ অ্যান্ড্রু ওলা ২০০৯ সালে বক্তব্য প্রদান করছেন
জন্ম
ওলা গিওর্গি

(১৯২৭-০৫-২২)২২ মে ১৯২৭
মৃত্যু৮ মার্চ ২০১৭(2017-03-08) (বয়স ৮৯)
নাগরিকত্বহাঙ্গেরীয় ও আমেরিকান
মাতৃশিক্ষায়তনBudapest University of Technology and Economics
পরিচিতির কারণমহা-অম্লের মাধ্যমে কার্বোকেশন প্রক্রিয়া
দাম্পত্য সঙ্গীজুডিথ লেঙ্গিয়েল (বি. ১৯৪৯)
সন্তান
পুরস্কার
  • Tolman Award (1991)
  • Nobel Prize in Chemistry (1994)
  • ForMemRS (1997)[1]
  • Arthur C. Cope Award (2001)
  • Order of the Rising Sun (2003)
  • Priestley Medal (2005)
  • Hungarian Order of Pro Merit (2006)[2]
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্ররসায়ন
প্রতিষ্ঠানসমূহ

প্রারম্ভিক জীবন

ওলা ১৯২৭ সালের ২২ মে ইহুদি দম্পতি মাগদা (ক্রাসনাই) এবং গিউলা ওলার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। গিউলা ওলা পেশায় আইনজীবী ছিলেন। [7] [8]বুদাপেস্টের পিয়ারেস্তি জিমনেসিয়ামে অধ্যয়নের পর তিনি জৈব রসায়নবিদ গেজা জেম্পলেনের অধীনে বুদাপেস্ট কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুদাপেস্ট অর্থনীতি ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যয়ন শুরু করেন। সেখান থেকে তিনি রাসায়নিক প্রকৌশলে এমএস ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।[9]১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত তিনি জৈব রসায়ন বিষয়ের অধ্যাপনা করেন। এছাড়াও তিনি হাঙ্গেরীয় বিজ্ঞান একাডেমির গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী পরিচালক ও জৈব রসায়ন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। [10]

কর্মজীবন ও গবেষণা

১৯৫৬ সালের হাঙ্গেরীয় বিপ্লবের পরে ওলা এবং তার পরিবার কানাডায় চলে যান। ওন্টারিও প্রদেশের সার্নিয়া শহরের ডাউ কেমিকেল কোম্পানিতে তিনি যোগদান করেন। আরেকজন হাঙ্গেরীয় রসায়নবিদ স্টিফেন জে কুন তার সহকর্মী ছিলেন। আট বছর ডাউ কেমিকেলে চাকরি।করার সময় ওলা কার্বোকেশন নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। [11] ১৯৬৫ সালে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি রসায়ন বিভাগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ওলা সি.এফ.মেবেরি রাসায়নিক গবেষণা অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। [10]১৯৭১ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব লাভ করেন।[9] ১৯৭৭ সালে ওলা সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন।

সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি লকার হাইড্রোকার্বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিশেষায়িত অধ্যাপক ও পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। [12]/১৯৮০ সালে ওলা ডোনাল্ড পি ও ক্যাথরিন বি লকার বিশেষায়িত অধ্যাপক পদে নিযুক্ত হন। ১৯৯৪ সালে কার্বোকেশন রসায়নে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

কানাডিয়ান রসায়নবিদ সল ভেইনস্টেইন ও ওলা পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হার্বার্ট সি ব্রাউনের সঙ্গে "অ-ধ্রুপদী" কার্বোকেশন প্রক্রিয়ার অস্তিত্ব নিয়ে জীবনভর সংগ্রামে লিপ্ত ছিলেন।

১৯৯৭ সাল থেকে ওলা পরিবার বিশেষ তহবিলের মাধ্যমে আর্থিক বৃত্তিদান করে আসছে। মেধাবী ও সম্ভাবনাময় রসায়নবিদরা এ বৃত্তি লাভ করেন। আমেরিকান রসায়নবিদ সমিতি বৃত্তিধারী শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত করে।[13]

পরবর্তী জীবনে ওলা হাইড্রোকার্বন ও মিথানল অর্থনীতি নিয়ে গবেষণা করেন। [14]রবার্ট জুবিন, অ্যান করবিন এবং জেমস উসলের সাথে একত্রে তিনি নমনীয় জ্বালানি( Flexible fuel) প্রবর্তন সংক্রান্ত উদ্যোগ গ্রহণ করেন।[15] ২০০৫ সালে তিনি নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করে হাইড্রোজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডের সাহায্যে মিথানল উৎপাদনের আহবান জানিয়ে গবেষণা প্রবন্ধ রচনা করেন।[16]

ব্যক্তিগত জীবন

১৯৪৯ সালে ওলা জুডিথ অ্যাগনেস লেঙ্গিয়েলকে বিবাহ করেন। তাদের দুই সন্তানের মধ্যে প্রথমজন, জর্জ ১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরিতে ও রোনাল্ড ১৯৫৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করে। ২০১৭ সালের ৮ মার্চ ওলা ক্যালিফোর্নিয়ার বেভারলি হিলসে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর হাঙ্গেরীয় সরকার গভীর শোক প্রকাশ করে বলে-"হাঙ্গেরি একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক ও বৈজ্ঞানিক প্রতিভাকে হারিয়েছে।"

তথ্যসূত্র

  1. "George A. Olah – A Superstar of Science"। ১০ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৭
  2. "The Nobel Prize in Chemistry 1994"NobelPrize.org
  3. George A. Olah (2000). A Life Of Magic Chemistry: Autobiographical Reflections of a Nobel Prize Winner
  4. "Exploring the Methanol Economy"NPR.org
  5. "The Nobel Prize in Chemistry 1994"NobelPrize.org
  6. "George Oláh, Nobel Prize Winning Hungarian-American Chemist, Dies at 89"। 9 মার্চ, 2017। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  7. https://www.nobelprize.org/nobel_prizes/chemistry/laureates/1994/olah-autobio.html
  8. Curriculum Vitae of George Andrew Olah। John Wiley & Sons, Ltd। 18 অক্টোবর, 2015। পৃষ্ঠা 300–305। ডিওআই:10.1002/9781118840108.oth Wiley Online Library-এর মাধ্যমে। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  9. "1991 George Olah, USC"। 20 জুন, 2013। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  10. George A. Olah (1965). Friedel-Crafts and Related Reactions. New York: John Wiley and Sons
  11. "Home > Department of Chemistry > USC Dana and David Dornsife College of Letters, Arts and Sciences"dornsifelive.usc.edu
  12. ] "George A. Olah Award in Hydrocarbon or Petroleum Chemistry", Chemical & Engineering News, January 19, 2009, p. 74
  13. "Nobel Prize winner of 1994 George Andrew Olah dies at 89"www.chemeurope.com
  14. Olah, G. (1 জানু, 1980)। "Superacid catalyzed depolymerization and conversion of coals. Final technical report. [HF:BF/sub 2//H/sub 2/]" www.osti.gov-এর মাধ্যমে। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  15. Olah, George A. (18 অক্টোবর, 2005)। "Beyond Oil and Gas: The Methanol Economy"Angewandte Chemie International Edition44 (18): 2636–2639। ডিওআই:10.1002/anie.200462121 Wiley Online Library-এর মাধ্যমে। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.