জর্জিয়ার (রাষ্ট্র) ভূগোল

জর্জিয়া হল ককেসাস অঞ্চলের একটি দেশ। পশ্চিম এশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপের সংযোগস্থলে অবস্থিত [2] জর্জিয়ার পশ্চিমে কৃষ্ণ সাগর, উত্তরে রাশিয়া, দক্ষিণে তুরস্কআর্মেনিয়া, এবং পূর্বে আজারবাইজান। জর্জিয়া দেশটি ৬৯,৭০০ বর্গকিলোমিটার (২৬,৯০০ মা) অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত।

জর্জিয়া ভূগোল
মহাদেশএশিয়া / ইউরোপ
অঞ্চলককেসাস
স্থানাঙ্ক৪২°০০′ উত্তর ৪৩°৩০′ পূর্ব
আয়তন১১৯
  মোট৬৯,৭০০ কিমি (২৬,৯০০ মা)
  স্থলভাগ100%
  জলভাগ0%
উপকূলরেখা৩১০ কিমি (১৯০ মা)
সীমানা১,৮১৪ কিমি (১,১২৭ মা)
সর্বোচ্চ বিন্দুশ্কারা পর্বত ৫,২০১ মি (১৭,০৬৪ ফু)
সর্বনিম্ন বিন্দুপোটি এবং কুলেভির মধ্যে, (-১.৫-২.৩ মি)[1]
দীর্ঘতম নদীআলাজানি নদী ৪০৭ কিমি (২৫৩ মা)
বৃহত্তম হ্রদপারভানি হ্রদ, ৩৭.৫ কিমি (১৪.৫ মা)
জলবায়ুনাতিশীতোষ্ণ থেকে সাবট্রপিক্যাল জলবায়ু
ভূখণ্ডউপকূলীয় সমভূমি সহ পাহাড়
প্রাকৃতিক সম্পদকাঠ, জলবিদ্যুৎ, ম্যাঙ্গানিজ সঞ্চয়, আকরিক লোহা, তামা, খণিজ কয়লা এবং জ্বালানী সঞ্চয়; উপকূলীয় আবহাওয়া এবং মৃত্তিকা গুরুত্বপূর্ণ চা এবং লেবু জাতীয় ফল চাষের উপযোগী
প্রাকৃতিক বিপত্তিসমূহভূমিকম্প
পরিবেশগত সমস্যাবিষাক্ত রাসায়নিক থেকে বায়ু, জল এবং মৃত্তিকা দূষণ
এক্সক্লুসিভ অর্থনৈতিক অঞ্চল২১,৯৪৬ কিমি (৮,৪৭৩ মা)

অবস্থান

কৃষ্ণ সাগর পশ্চিম জর্জিয়ার উপকূল, দিগন্তে বাটুমি এর আকাশরেখা সহ।

ইউরেশিয়ার দক্ষিণ ককেসাসের পার্বত্য অঞ্চলে জর্জিয়া অবস্থিত, কৃষ্ণ সাগর এবং ক্যাস্পিয়ান সাগরের মধ্যে পশ্চিম এশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপে বিস্তৃত।[2]রাশিয়ার সাথে জর্জিয়ার উত্তর সীমানায় প্রায় পুরোটা জুড়েই বিস্তৃত বৃহত্তর ককেসাস পর্বতমালা – যেটি ইউরোপ এবং এশিয়ার মধ্যে একটি সাধারণ স্বীকৃত সীমা। ফিলিপ জোহান ফন স্ট্রাহলেনবার্গের ১৭৩০ সালের ইউরোপের সংজ্ঞায়, মহাদেশীয় সীমানাটি কুমা-ম্যানিখ নিম্নতা থেকে ক্যাস্পিয়ান সাগরের দিকে টানা হয়েছিল, যার ফলে সমগ্র জর্জিয়া (এবং পুরো ককেসাস) এশিয়ার মধ্যে পড়েছিল। এই সংজ্ঞাটি রাশিয়ান জারেরা ব্যবহার করেছিলেন এবং প্রথম এটি উরালকে মহাদেশের পূর্ব সীমানা হিসাবে স্থির করেছিল।

ইউরোপের বেশিরভাগ অংশের সঙ্গে জর্জিয়ার সান্নিধ্য, এর সঙ্গে বিভিন্ন ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক কারণ মিলিত হয়ে, ধীরে ধীরে ইউরোপে জর্জিয়ার ক্রমবর্ধমান অন্তর্ভুক্তিতে সহায়তা করেছে। কিছু কিছু সূত্র দেশটিকে ইউরোপীয় অঞ্চলের বলেই বর্ণনা করে;[2] পাশাপাশি, জর্জিয়া কিছু ইউরোপীয় সংস্থায় যেমন কাউন্সিল অব ইউরোপে যোগ দিয়েছে, ন্যাটোর সদস্যপদ চেয়েছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশের আবেদন করেছে। নেপলস, মাদ্রিদ, ইস্তাম্বুল, নিউ ইয়র্ক, শিকাগো, লন্ডন, টরন্টো (কানাডা), ওমাহা (ইউএসএ), ইউরেকা (ইউএসএ), ওডেট (জাপান), শেনিয়াং (চীন) এবং তিরানার সঙ্গে জর্জিয়া সমান্তরাল অবস্থায় রয়েছে।

ভূসংস্থান

ভূসংস্থান
বসন্তকালের শেষের দিকে জর্জিয়ার উপগ্রহ চিত্র

ছোট অঞ্চল থাকা সত্ত্বেও, প্রাক্তন সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলির মধ্যে জর্জিয়ায় সর্বাধিক বৈচিত্রপূর্ণ ভূসংস্থান রয়েছে।[3] জর্জিয়ার বেশিরভাগ অংশ ককেসাস পর্বতমালায় অবস্থিত, এবং বৃহৎ ককেসাস আংশিকভাবে এর উত্তর সীমানা চিহ্নিত করেছে।[3] তুর্কি এবং আর্মেনিয়ান সীমান্তের সঙ্গে সমান্তরালে চলা ক্ষুদ্র ককেশাসের ব্যাপ্তি, এবং বৃহৎ ককেশাস ও ক্ষুদ্র ককেশাসকে সংযুক্তকারী সুরামি এবং ইমেরেটি পর্বতমালা, প্রাকৃতিকভাবে একটি অন্তরায় সৃষ্টি করেছে, যেটি অঞ্চলগুলির মধ্যে সাংস্কৃতিক এবং ভাষাগত পার্থক্যের জন্য আংশিকভাবে দায়ী।[3] উচ্চতা এবং পরিবহন পরিকাঠামোর অব্যবস্থার কারণে, শীতকালে অনেক পার্বত্য গ্রাম কার্যত বাইরের বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।[3] পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিকম্প এবং ভূমিধস, এই অঞ্চলের মানুষের জীবন ও সম্পদের জন্য ভয়াবহ এক বিপদজনক অবস্থা।[3] সর্বশেষ সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে ছিল ১৯৮৯ সালে আজারিয়ায় প্রচণ্ড শিলা ও মাটি ধস যা দক্ষিণ-পশ্চিম জর্জিয়ার হাজার হাজার মানুষকে বিপদগ্রস্ত করেছিল এবং ১৯৯১ সালের দুটি ভূমিকম্প উত্তর-মধ্য জর্জিয়া এবং দক্ষিণ ওসেটিয়ার বেশ কয়েকটি গ্রামকে ধ্বংস করে দিয়েছিল।[3]

জর্জিয়ায় প্রায় ২৫,০০০ নদী রয়েছে যার মধ্যে অনেকগুলির জলেই ছোট ছোট জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি হয়েছে।[3] পশ্চিমদিকের নিকাশী ব্যবস্থা কৃষ্ণ সাগরে গিয়ে মুক্ত হয় এবং পূর্ব দিকে আজারবাইজান হয়ে ক্যাস্পিয়ান সাগরে গিয়ে পড়ে।[3] এখানকার বৃহত্তম নদী হল কুরা নদী, যা পূর্ব জর্জিয়ার সমভূমি জুড়ে উত্তর-পূর্ব তুরস্ক থেকে ১,৩৬৪ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়েছে, রাজধানী তিবিলিসি দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ক্যাস্পিয়ান সাগরে গিয়ে পড়েছে।[3] পশ্চিম জর্জিয়ার বৃহত্তম নদী রিওনি নদী, বৃহৎ ককেসাসে উৎপন্ন হয়ে পোটি বন্দরের কাছে কৃষ্ণ সাগরে গিয়ে মিশেছে।[3] সোভিয়েত প্রকৌশলীরা কৃষ্ণ সাগরের উপকূলে নদী অঞ্চলের নিম্নভূমিকে প্রধান উপ-গ্রীষ্মমন্ডলীয় কৃষিজমিতে পরিণত করেছিল, নদীর গতিপথে বাঁধ দিয়েছিল এবং বক্র গতিপথকে সোজা করেছিল। এছাড়াও তারা বিস্তৃত খাল-ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল।[3] গভীর গিরিসঙ্কটগুলি বৃহৎ ককেসাসের মধ্যে ভূসংস্থানিক বলয় গঠন করেছে।[3]

See also

  • Glaciers of Georgia
  • List of earthquakes in Georgia (country)

তথ্যসূত্র

  1. Geography of Georgia - 9th grade book; G. Chanturia, D. Kereselidze; p. 43
  2. Georgia may be considered to be in Asia and/or Europe. The UN classification of world regions places Georgia in Western Asia; the CIA World Factbook ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে, National Geographic, and Encyclopædia Britannica also place Georgia in Asia. Conversely, numerous sources place Georgia in Europe such as the BBC , Oxford Reference Online , Merriam-Webster's Collegiate Dictionary, and www.worldatlas.com.
  3. Curtis, Glenn E. (১৯৯৫)। Armenia, Azerbaijan, and Georgia : country studies (1st সংস্করণ)। Washington, D.C.: Federal Research Division। পৃষ্ঠা 175–177। আইএসবিএন 0-8444-0848-4। ওসিএলসি 31709972. এই উৎস থেকে এই নিবন্ধে লেখা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা পাবলিক ডোমেইনে রয়েছে।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.