জমিয়তে উলামা ব্রিটেন
জমিয়তে উলামা ব্রিটেন (ইংরেজি: Jamiat-e Ulama Britain; সংক্ষেপে জেইউবি) যুক্তরাজ্য ভিত্তিক পাকিস্তানি বংশদ্ভূত দেওবন্দি উলামাদের একটি নেটওয়ার্ক। ১৯৭৫ সালে জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের যুক্তরাজ্য শাখা হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। হিজবুল উলামা নামে ভারতীয় বংশদ্ভূত দেওবন্দি উলামাদের এর সমতুল্য ভিন্ন সংগঠন রয়েছে।[1] ইসলামি আইনের প্রশ্নে সংগঠনটি পাকিস্তানের জামিয়া উলুমুল ইসলামিয়াকে চূড়ান্ত উৎস মনে করে। তবে তাদের যুক্তরাজ্যে এত বড় নেটওয়ার্ক রয়েছে যে তাদের খুব কমই বিদেশ থেকে নির্দেশনা নেওয়ার প্রয়োজন হয়।[1]
Jamiat-e Ulama Britain | |
গঠিত | ১৯৭৫ |
---|---|
আইনি অবস্থা | ধর্মীয় সংগঠন |
উদ্দেশ্য | যুক্তরাজ্যের মুসলিম সম্প্রদায়ের উন্নয়ন |
যে অঞ্চলে কাজ করে | যুক্তরাজ্য |
দাপ্তরিক ভাষা | ইংরেজি, উর্দু, আরবি |
মহাসচিব | ইসলাম আলী শাহ (ভারপ্রাপ্ত) |
প্রধান উপদেষ্টা | আব্দুর রশিদ রব্বানী |
সভাপতি | মুহাম্মদ আসলাম নকশবন্দি |
প্রকাশনা | আল জমিয়ত |
ওয়েবসাইট | www |
দেওবন্দি আন্দোলন |
---|
সিরিজের অংশ |
|
সংগঠন
মজলিসে আমেলা (কার্যনির্বাহী কমিটি) ও মজলিসে উমুমি (সাধারণ পরিষদ) নামে সংগঠনটির দুটি পরিচালনা কমিটি আছে। সাধারণ পরিষদের সদস্য সংখ্যা ৭১। চাঁদ কমিটি ও শিক্ষা কমিটি সংগঠনটির দুটি উপকমিটি। মাদ্রাসা আরাবিয়া ইসলামিয়ার অধীনে সংগঠনটির একটি দারুল ইফতা বা ফতোয়া বোর্ড আছে। শরিয়ত কাউন্সিল নামে একটি পরিষদও রয়েছে যার সভাপতি মুহাম্মদ আসলাম নকশবন্দি। যুক্তরাজ্য জুড়ে সংগঠনটি বহু মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছে। আল জমিয়ত নামে সংগঠনটির একটি সাময়িকী প্রকাশিত হয়।[2]
সংগঠনের নেতৃবৃন্দ কিছু আন্তঃধর্মীয় সভায় জড়িত ছিলেন। ২০০৬ সালে যুক্তরাজ্যের তৎকালীন শ্রমমন্ত্রী জ্যাক স্ট্র একটি নিবন্ধ লিখে নেকাব সম্পর্কে একটি জাতীয় বিতর্কের সূত্রপাত করেন। তখন জেইউবির প্রতিনিধিরা স্ট্রের সাথে তার ব্ল্যাকবার্ন নির্বাচনী এলাকায় একটি বৈঠক করে তার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছিলেন। সাধারণত ওয়েকফিল্ড সেন্ট্রাল মসজিদে সংগঠনটির বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনটি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিদেশী রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত নয়। যদিও পাকিস্তানের জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের (ফ) নেতা ফজলুর রহমান তাদের সম্মেলনের একজন বক্তা ছিলেন।[1] যুক্তরাজ্য জুড়ে সংগঠনটির কমিটি রয়েছে। এটি মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসবাদি পালনে চাঁদ দেখার ক্ষেত্রে জ্যোতির্বিজ্ঞানের গণনার ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করে।[3]
লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য
সংগঠনটির লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য:[4]
- ইসলামি বিশ্বাস, পরিচয়, ঐতিহ্য এবং মসজিদের সুরক্ষা।
- মুসলমানদের নাগরিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাগত অধিকার সুরক্ষিত করা।
- মুসলমানদের মধ্যে সামাজিক, শিক্ষাগত ও ধর্মীয় সংস্কার।
- মুসলমানদের শিক্ষা, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ে অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতার জন্য প্রতিষ্ঠান স্থাপন।
- ইসলামের শিক্ষা অনুসারে যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং স্থিতিশীল করা।
- আরবি ও ইসলামিক অধ্যয়নের পুনরুজ্জীবন এবং বর্তমান যুগের চাহিদা অনুযায়ী পাঠ্যক্রম প্রণয়ন।
- ইসলামের শিক্ষার প্রচার ও প্রসার।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
উদ্ধৃতি
- বোয়েন, ইনেস (২০১৪)। Medina in Birmingham, Najaf in Brent: Inside British Islam [বার্মিংহামের মদিনা, ব্রেন্টের নাজাফ: ব্রিটিশ ইসলামের ভিতরে] (ইংরেজি ভাষায়)। যুক্তরাজ্য: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা ১৪—১৫। আইএসবিএন 978-1-84904-301-4।
- "জমিয়তে উলামা ব্রিটেন"। www.jamiat.co.uk। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০২২।
- ইউসুফ, মুহাম্মদ। "The History of the UK following the Saudi Arabia Moonsighting Decision" [সৌদি আরব চাঁদ দেখার সিদ্ধান্তের পর যুক্তরাজ্যের ইতিহাস] (পিডিএফ)। ক্রয়ডন মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০২২।
- "লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য"। জমিয়তে উলামা ব্রিটেন। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০২২।
গ্রন্থপঞ্জি
- গিলিয়েট-রে, সোফি (১ জানুয়ারি ২০০৬)। "Educating the Ulama: Centres of Islamic religious training in Britain" [উলামাদের শিক্ষা: ব্রিটেনে ইসলামি ধর্মীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র]। ইসলাম এবং খ্রিস্টান-মুসলিম সম্পর্ক। ১৭ (১): ৫৫–৭৬। আইএসএসএন 0959-6410। ডিওআই:10.1080/09596410500399367।