জন ইনভেরারিটি

রবার্ট জন ইনভেরারিটি (ইংরেজি: John Inverarity; জন্ম: ৩১ জানুয়ারি, ১৯৪৪) পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার সুবিয়াকো এলাকায় জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলীয় কোচ ও সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৬৮ থেকে ১৯৭২ সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

জন ইনভেরারিটি
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামরবার্ট জন ইনভেরারিটি
জন্ম (1944-01-31) ৩১ জানুয়ারি ১৯৪৪
সুবিয়াকো, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স
ভূমিকাব্যাটসম্যান, কোচ
সম্পর্কমার্ভ ইনভেরারিটি (পিতা)
এলিসন ইনভেরারিটি (কন্যা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৪৬)
২৫ জুলাই ১৯৬৮ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১০ আগস্ট ১৯৭২ বনাম ইংল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৬২–১৯৭৯ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া
১৯৭৯–১৯৮৫সাউথ অস্ট্রেলিয়া
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ২২৩ ৩০
রানের সংখ্যা ১৭৪ ১১,৭৭৭ ৬৮৬
ব্যাটিং গড় ১৭.৪০ ৩৫.৯০ ৩২.৬৬
১০০/৫০ ০/১ ২৬/৬০ ০/৫
সর্বোচ্চ রান ৫৬ ১৮৭ ৯০
বল করেছে ৩৭২ ১৬,৮৪০ ৬১৫
উইকেট ২২১ ১৫
বোলিং গড় ২৩.২৫ ৩০.৬৭ ২৫.৮০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/২৬ ৭/৮৬ ৩/১৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৪/- ২৫১/- ২০/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইফো.কম, ৯ জুন ২০১৯

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়াসাউথ অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন জন ইনভেরারিটি

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

পার্থের স্কচ কলেজে পড়াশোনা করেছেন তিনি। ১৯৬২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত মোট তেইশ বছর জন ইনভেরারিটি’র প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল।[1] ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়াকে পাঁচ বছর নেতৃত্ব দেন। তন্মধ্যে, চারবারই শেফিল্ড শিল্ডের শিরোপা বিজয়ে সক্ষমতা দেখায় ও স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করে।

শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন তিনি। অ্যাডিলেডে স্থানান্তরিত হলে সাউথ অস্ট্রেলিয়ায় যোগদান করেন। ১৯৮১ ও ১৯৮২ সালে শিল্ডের শিরোপা পায় তাঁর নতুন দল। অ্যাডিলেড ওভালে ব্যাটিংকালে ক্রিকেটের ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা অপ্রত্যাশিত আউটের সাথে নিজ নামকে জড়িয়ে রেখেছেন। গ্রেগ চ্যাপেলের বলে শূন্য রানে পরিষ্কার বোল্ড হলে আম্পায়ার কলিন ইগার পুনরায় তাঁকে ডেড বলের কারণে ব্যাটিং করার জন্যে আমন্ত্রিত হন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ছয়টিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। ২৫ জুলাই, ১৯৬৮ তারিখে লিডসে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে জন ইনভেরারিটি’র। একই দলের বিপক্ষে ১০ আগস্ট, ১৯৭২ তারিখে ওভালে সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

১৯৬৮ সালে অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। ওভাল টেস্টে ব্যক্তিগত সেরা ইনিংস ৫৬ রান তুলেন। ১৯৭২ সালে লিডসে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ৩/২৬ গড়েন।

খেলার ধরন

১৯৭০-এর দশকের শেষার্ধ্ব থেকে ১৯৮০-এর সূচনাকাল পর্যন্ত শেফিল্ড শিল্ডে খেলেন। তন্মধ্যে, ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ও সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে অধিনায়কেরও দায়িত্বভার বহন করেছিলেন তিনি। দীর্ঘদিনের খেলোয়াড়ী জীবনের অধিকাংশ সময়ই চমৎকার ব্যাটসম্যান হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন। তবে, সেরা অধিনায়ক ও তাত্ত্বিক হিসেবে বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেট চলাকালে জাতীয় দলের অধিনায়কত্বের বিষয়ে যদি তিনি থাকতেন তাহলে হয়তোবা অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ইতিহাস ভিন্নতর হতে পারতো। ৪০ বছর বয়সী বব সিম্পসনের কাছ থেকে গ্রাহাম ইয়ালপের কাছে অধিনায়কত্ব চলে যায়। মাইক ব্রিয়ারলি’র ইংল্যান্ড দল ৫-১ ব্যবধানে অ্যাশেজ জয় করে। চার বছরে তিনি মাত্র ছয়টি টেস্টে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান।[2]

রাজ্য ক্রিকেট দলে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃপক্ষ ওয়াকা গ্রাউন্ডের একটি স্ট্যান্ডের নাম তাঁর সম্মানার্থে নামাঙ্কিত করে। ১৯৭০ সালে ওয়াকার উদ্বোধনী টেস্টে ঐ স্ট্যান্ডের নাম ছিল ‘টেস্ট স্ট্যান্ড’। পরবর্তীতে এর নাম পুনরায় পরিবর্তন করে ‘ইনভেরারিটি-ওয়েস্টার্ন আন্ডাররাইটার্স স্ট্যান্ড’ রাখা হয়।

অবসর

৪১ বছর বয়সে ১৯৮৫ সালে ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ইংরেজ কাউন্টি ক্লাব কেন্ট ও ওয়ারউইকশায়ারের কোচের দায়িত্ব পালনের পূর্ব-পর্যন্ত শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।

খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর ২০১১ থেকে ২০১৪ সময়কালে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার দল নির্বাচকমণ্ডলীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ২ মে, ২০১৪ তারিখে রড মার্শ তার স্থলাভিষিক্ত হন।[3] ২০১১ সালে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার পূর্ণাঙ্গকালীন নির্বাচকমণ্ডলীর সভাপতি হিসেবে তাকে নির্বাচিত করা হয়। জিওফ লসন, টম মুডি, রড মার্শ ও সাবেক সভাপতি ট্রেভর হন্সের ন্যায় তারকা খেলোয়াড়দের কাছ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হয়েছিলেন।

শিক্ষকতা

ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি শিক্ষকতা পেশায় নিযুক্ত ছিলেন তিনি। যুক্তরাজ্যের টনব্রিজ স্কুল ও কিংস কলেজ স্কুলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন।[4] এছাড়াও, ১৯৮১ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত অ্যাডিলেডের পেমব্রোক স্কুলের উপাধ্যক্ষ এবং ১৯৮৯ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত পার্থভিত্তিক গিল্ডফোর্ড গ্রামার স্কুল ও হেল স্কুলে প্রধানশিক্ষক হিসেবে কাজ করেন।[5] ২০০১ সালে হেলের নতুন সঙ্গীত ও নাট্য কেন্দ্রের নাম তার সম্মানার্থে পরিবর্তন করে জন ইনভেরারিটি মিউজিক এন্ড ড্রামা সেন্টার রাখা হয়। ২০০৬ সালে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সেন্ট জর্জেস কলেজের ওয়ার্ডেন হিসেবে তাকে মনোনীত করা হয়।[5] এছাড়াও, ইউনিভার্সিটি সিনেটে গভর্নর কেন মাইকেলের মনোনীত সদস্য ছিলেন তিনি।

ব্যক্তিগত জীবন

পিতা মার্ভ ইনভেরারিটি ১৯৩০ ও ৪০-এর দশকে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছেন। পরবর্তীকালে তিনি ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ প্রশাসক হিসেবে কাজ করেছেন।

স্বীয় কন্যা এলিসন ইনভেরারিটি অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ১৯৯২, ১৯৯৬ ও ২০০০ সালের অলিম্পিক গেমসে উচ্চ লম্ফ বিভাগে অংশ নিয়েছেন।

তথ্যসূত্র

  1. HowSTAT! statistical profile of John Inverarity
  2. Cricinfo Player Profile : John Inverarity
  3. "Rod Marsh replaces John Inverarity as Australian cricket's chairman of selectors"ABC। ২ মে ২০১৪।
  4. "Sport's lessons for life"uwa.edu.au। ১১ অক্টোবর ২০১২।
  5. Brettig, Daniel (২৯ অক্টোবর ২০১১)। "Inver, the great communicator"ESPNcricinfo

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.