জড়তা
জড়তা বা জাড্য বলতে, কোনো বস্তু যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায় থাকতে চাওয়ার যে প্রবণতা, বা সেই অবস্থা যেমন গতি বা স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে চাওয়ার যে ধর্ম, তা বোঝানো হয়ে থাকে। জড়তার ধারণা পদার্থবিজ্ঞানের একটি মৌলিক বিষয় যা বস্তুর গতীয় অবস্থা সম্পর্কে ধারণা দেয় এবং বস্তুর উপর প্রযুক্ত বলের প্রভাব বর্ণনা করে। বিজ্ঞানী নিউটন তার ফিলোসোফিয়া ন্যাচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথম্যটিকা বইতে জড়তাকে তার প্রথম সূত্রের সাহায্যে ব্যাখ্যা করেন। নিউটনের প্রথম সূত্রটি হল:
“বাহ্যিক বল প্রয়োগ না করলে স্থির বস্তু স্থিরই থাকে এবং গতিশীল বস্তু সুষম দ্রুতিতে সরল পথে চলতে থাকে।”[1]
প্রকারভেদ
জড়তা দুই ধরনের। যথা: এক. স্থিতি জড়তা বা স্থিতিজাড্য দুই. গতি জড়তা বা গতিজাড্য
জড়তার পরিমাপ
বস্তুর জড়তা এর ভর এবং বেগের উপর নির্ভর করে। কোন বস্তুর বেগ যত বেশি হবে বা ভর যত বেশি হবে সেটির জড়তা তত বেশি হবে। বস্তুর ভরবেগ হল এর জড়তার একটি পরিমাপ। কোন গতিশীল বস্তুর ভর ও বেগের গুণফলকে ভরবেগ বলা হয়। কোন বস্তুর ভরবেগ যত বেশি তার জড়তা তত বেশি হবে এবং এটি চলার পথে কোন বস্তুকে তত বেশি বল প্রয়োগ করতে পারবে। এবং বস্তুটিকে স্থির অবস্থায় আনতে তত বেশি বল প্রয়োগ করতে হবে।
গানিতিকভাবেঃ
কোন বস্তুর ভরবেগ , বেগ , ভর হলে
=
আবার কোন স্থির বস্তুর ভর যত বেশি হবে তকে গতিশীল করতে তত বেশি বল প্রয়োগ করতে হবে। কারণ ভর বেশি হলে এর জড়তাও বেশি হবে।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে ২০০মিটার/সেকেন্ড বেগের ০.০৫কিলোগ্রাম ভরের একটি বুলেট যে পরিমাণ জড়তা সম্পন্ন ১০০০ কিলোগ্রাম ভরের ০.০১ মিটার/সেকেন্ড বেগের একটি গাড়ির জড়তা সমান এবং দুটিকে থামাতেই সমান পরিমাণ বল প্রয়োগ করতে হবে। কারণ উভয়েরই ভরবেগ ১০কিলোগ্রামxমিটার/সেকেন্ড।
তথ্যসূত্র
- Andrew Motte's English translation:Newton, Isaac (১৮৪৬), Newton's Principia : the mathematical principles of natural philosophy, New York: Daniel Adee, পৃষ্ঠা 72