জগৎ মল্ল
শ্রীমন্ত জগৎমল্ল দেব ছিলেন মল্লরাজ বংশের উনিশতম রাজা। তিনি আনুমানিক সন্ ৯৯৪ থেকে ১০০৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত শাসন করেছিলেন। এবং মল্লভূম রাজধানী রূপে বন-বিষ্ণুপুর ও সুপ্রসিদ্ধ শ্রীশ্রী৺মৃন্ময়ী মাতা মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা ।।[1]
মল্লরাজ শ্রীমন্ত জগৎমল্ল দেব | |
---|---|
প্রাচীনমল্লভূম জনপদের উনিশতম মল্লরাজ। | |
রাজত্ব | সন্ ৯৯৪ - ১০০৭ খ্রিস্টাব্দ |
ধর্ম | সনাতন ধর্ম্ম |
ইতিহাস
শ্রীমন্ত জগৎ মল্লদেব মল্ল-রাজবংশের ইতিহাসে বিশেষ পরিচিত পান, কারণ বিশ্বাস করা হয় যে দেবী জগদম্বা মা মৃন্ময়ীর নির্দেশ অনুসারে তিনি তাঁর রাজধানী প্রদ্যুম্নপুর থেকে বন-বিষ্ণুপুরে স্থানান্তর করেছিলেন। কিংবদন্তি অনুসারে, শ্রীমন্ত জগৎমল্ল দেব একসময় শিকারের জন্য বন-বিষ্ণুপুরের গিয়েছিলেন। তৎকালীন বিষ্ণুপুর ছিল সেই সময় ঘন জঙ্গলে আচ্ছাদিত। শিকার খেলায় ক্লান্ত হয়ে মহারাজ এক বটবৃক্ষের মুলে বিশ্রামার্থে আশ্রয় নিলেন এবং ঘুমিয়ে পড়লেন। তখন স্বপ্নে মা মৃন্ময়ী দুর্গা দর্শন দিলেন এবং তরে স্বপ্নাদেশ দিলেন এই বট বৃক্ষের তলে এক দেবী মুখাবয়ব আছে তা উদ্ধার করিয়ে এই স্থানে মন্দির ও বিগ্রহ স্থাপন এবং রাজসী গরিমায় নিত্যার্চনার ব্যবস্থা করে এবং রাজধানী বিষ্ণুপুরে স্থানান্তর করতেও বলেন তাতে তার রাজবংশ দেবীর কৃপাপাত্র এবং নিষ্কণ্টক রাজত্ব লাভ করবে। রাজা জগৎমল্ল দেবও দেবীমায়ের যথা স্বপ্নাদেশানুসারে কার্য্য করলেন। বলা হয় যে বনবিষ্ণুপুর আগে একটি ছোট গ্রাম ছিল এবং প্রতিপালক ভগবান শ্রীবিষ্ণুর নাম অনুসারে এর নামকরণ করা হয়েছিল। ৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে, জগৎ মল্ল মৃন্ময়ী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর শাসনামলে বিষ্ণুপুর ছিল অত্যন্ত উন্নত এবং একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ রাজ্যও। জগৎ মল্ল তের বছর রাজত্ব করেছিলেন। জগৎমল্ল দেবের পরে বেশ কিছু মল্ল রাজা ছিলেন, তাদের মধ্যে শ্রীমন্ত পৃথ্বী মল্লদেব (১২৯৫-১৩১৯ খ্রিস্টাব্দ।), শ্রীমন্ত দীনবন্ধু মল্লদেব (১৩৩৪-১৩৪৫ খ্রিস্টাব্দ।) এবং শ্রীমন্ত শিব সিংহ মল্লদেব (১৩৭০-১৪৬০ খ্রিস্টাব্দ) উল্লেখিত।[1][2]
তথ্যসূত্র
- Dasgupta 2009, পৃ. 20।
- Pandey, Dr.S.N. (সেপ্টেম্বর ২০১০)। West Bengal General Knowledge Digest। Upkar Prakashan। পৃষ্ঠা 28। আইএসবিএন 9788174822826। সংগ্রহের তারিখ ১০ জানুয়ারি ২০১৬।
উৎস
- Dasgupta, Gautam Kumar; Biswas, Samira; Mallik, Rabiranjan (২০০৯), Heritage Tourism: An Anthropological Journey to Bishnupur, A Mittal Publication, পৃষ্ঠা 20, আইএসবিএন 978-8183242943