ছত্তিশগড়ি ভাষা

ছত্তিশগড়ি বা ছত্রিশগড়ি (দেবনাগরী: छत्तीसगढ़ी) ভারতের মুলত ছত্তিশগড় রাজ্যে বসবাসকারী প্রায় ১.৭ কোটি লোকের মাতৃৃভাষা, যা ইন্দো-আর্য ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত একটি ভাষা৷[3] এটি পূর্ব হিন্দি ভাষাগুলির একটি এবং মুন্ডাদ্রাবিড় ভাষাগুলির অধিক প্রাধান্যে তৈরী হওয়া একটি স্বতন্ত্র কেন্দ্রীয় ইন্দো-আর্য ভাষা৷[4]

ছত্তিশগড়ি বা ছত্রিশগড়ি ভাষা
छत्तिसगढी़, छति्सगढी़
দেশোদ্ভবভারত
অঞ্চলছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ
মাতৃভাষী
মুল ছত্তিশগড়ি - ১,৬২,৪৫,১৯০ ও লারিয়া - ৮৯,৮৭৬ (২০১১ জনগণনা)[1]
(কিছুক্ষেত্রে প্রমিত হিন্দিভাষী হিসাবে পরিগণিত)
ইন্দো-ইউরোপীয়
দেবনাগরী লিপি, পুরাকালে ওড়িয়া লিপি
ভাষা কোডসমূহ
আইএসও ৬৩৯-৩দুইয়ের মধ্যে এক:
hne  ছত্তিশগড়ি
sgj  সরগুজিয়া
গ্লোটোলগchha1249[2]
লিঙ্গুয়াস্ফেরা59-AAF-ta

ছত্তিশগড় রাজ্যটি প্রাচীন ভারতের দক্ষিণ কোশল জনপদের অংশ ছিলো ফলে ছত্তীসগঢ়ী ভাষাটি দক্ষিণ কোশলি নামেও পরিচিত৷ ছত্তীসগঢ়ী ভাষাটি পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি আদিবাসী ও জনজাতিদের মধ্যে খলতাহি নামে ও ওড়িয়াদের মধ্যে লারিয়া নামে পরাচিত ছিলো৷[5][6] এ ভাষাভাষীর লোক ভারতের ছত্তীসগঢ় সহ পার্শ্ববর্তী মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশাঝাড়খণ্ড রাজ্যেও বিস্তৃত৷ ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ভারতে হয়ে আসা বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলন ছত্তীসগঢ়ী ভাষা ও সংস্কৃৃতিকে অন্যদের থেকে আলাদা ও স্বয়ংসম্পুর্ণ করে তুলেছে৷ ১৫ই কার্তিক ১৪০৭ বঙ্গাব্দে (১ লা নভেম্বর ২০০০ খ্রিষ্টাব্দ) ছত্তিশগড়ি, সরগুজিয়া, গোণ্ডি প্রভৃৃতি ভাষাবহুল ১৬ টি জেলাকে পূর্বতন মধ্যপ্রদেশ রাজ্য পৃথক করে ছত্তিশগড় নাম্নী নতুন রাজ্য গঠন করা হয়৷

ভাষার রূপভেদ

ভারত সরকারের বিভিন্ন আগ্রাসী মনোভাবের শিকারে ছত্তীসগঢ়ী ভাষা আজ হিন্দি ভাষার উপভাষা, যদিও অন্যান্য বিভিন্ন ভাষাভিত্তিক গবেষণা নিবন্ধে এটি একটি পৃথক ভাষারূপে গণ্য৷

ভৌগোলিক সীমানার ওপর ভিত্তি করে ছত্তীসগঢ়ী ভাষাটির ৫ টি প্রধান উপভাষা পৃথক করা যায়৷

  • কেন্দ্রী ছত্তীসগঢ়ী

এটিই শুদ্ধ ও প্রমিত ছত্তীসগঢ়ী ভাষা, যা মহানদী অববাহিকা অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়৷ এই উপভাষাটিতে হিন্দি ভাষার প্রভাব অধিক লক্ষ করা যায়৷ বিলাসপুর, দুর্গ, বেমেতারা, রায়পুর, রাজনন্দগাঁও, ধামতরি জেলাগুলিতে এই কথন প্রচলিত৷

  • উত্তি ছত্তীসগঢ়ী

উত্তি ছত্তীসগঢ়ী, যা লারিয়া নামেও পরিচিত, রায়গঢ়, মহাসমুন্দ, গরিয়াবন্দ, রায়পুর জেলাগুলিতে প্রচলিত৷

  • খলতাহি ছত্তীসগঢ়ী

ছত্তীসগঢ়ী ভাষার এই উপভাষাতে মারাঠি ভাষা|মারাঠি শব্দের প্রয়োগ দেখা যায়৷ মধ্যপ্রদেশের বালাঘাট জেলা সহ ছত্তীসগঢ়ের কবীরধাম, বেমেতারা জেলাতে এই কথন প্রচলিত৷

  • ভন্ডার ছত্তীসগঢ়ী

ভন্ডার ছত্তীসগঢ়ী উত্তর ছত্তীসগঢ়ের করিয়া, সুরজপুর, যশপুর, সরগুজা, বলরামপুর জেলা সহ সংলগ্ন ওড়িশাঝাড়খণ্ডে প্রচলিত৷

  • রক্ষহুঁ ছত্তীসগঢ়ী

এই উপভাষাটি মূলত বস্তার বিভাগের জেলাগুলিতে দেখা যায়৷ এইক্ষেত্রে গোণ্ডিহালবি ভাষার প্রভাব লক্ষণীয়৷

ছত্তীসগঢ়ী ভাষা দিবস

ছত্তীসগঢ়ী ভাষা দিবস বা ছত্তীসগঢ়ী দিবস প্রতি বছর ১১/১২ই অগ্রহায়ণ (২৮শে নভেম্বর) পালিত হয়৷ দিনটিতে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও উদ্‌যাপন রাজ্য সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়৷

অঞ্চল

ছত্তীসগঢ় ও তৎসংলগ্ন রাজ্যগুলিতে ছত্তীসগঢ়ী ভাষাভাষীর সংখ্যা নিম্নরূপ -

২০১১ জন গণনার পরে ছত্তিশগড়ে গৌরেলা পেণ্ড্রা মারবাহী জেলাটি গঠন করা হয়, এটিও একটি ছত্তিশগড়ি ভাষী জেলা৷

তথ্যসূত্র

  1. "Statement 1: Abstract of speakers' strength of languages and mother tongues - 2011"www.censusindia.gov.in। Office of the Registrar General & Census Commissioner, India। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৭-০৭
  2. হ্যামারস্ট্রোম, হারাল্ড; ফোরকেল, রবার্ট; হাস্পেলম্যাথ, মার্টিন, সম্পাদকগণ (২০১৭)। "Chhattisgarhi"গ্লোটোলগ ৩.০ (ইংরেজি ভাষায়)। জেনা, জার্মানি: মানব ইতিহাস বিজ্ঞানের জন্য ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট।
  3. টেমপ্লেট:E16
    (includes Surgujia)
  4. Pathak, Dewangan, Rijuka, Somesh। "Natural Language Chhattis garhi: A Literature Survey" (পিডিএফ)। International Journal of Engineering Trends and Technology (IJETT) – Volume 1 2 N umber 2 - Jun 2014। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০১৫
  5. Subodh Kapoor (২০০২)। The Indian Encyclopaedia: La Behmen-Maheya। Cosmo Publications। পৃষ্ঠা 4220–। আইএসবিএন 978-81-7755-271-3।
  6. Subodh Kapoor (২০০২)। The Indian Encyclopaedia: India (Central Provinces)-Indology। Cosmo Publications। পৃষ্ঠা 3432–। আইএসবিএন 978-81-7755-268-3।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.