চৌমুহনী
চৌমুহনী বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্য কেন্দ্র ও শহর। এটি বেগমগঞ্জ উপজেলার প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র। শহরটি নোয়াখালী জেলার সবচেয়ে বড় ও উন্নত শহর।
চৌমুহনী | |
---|---|
চৌমুহনী | |
স্থানাঙ্ক: ২২°৫৬′ উত্তর ৯১°৭′ পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলা | নোয়াখালী জেলা |
উপজেলা | বেগমগঞ্জ উপজেলা |
আসন | নোয়াখালী - ৩ |
আয়তন | |
• মোট | ৩৬ বর্গকিমি (১৪ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা | |
• মোট | ১,৬৫,০০০ |
• জনঘনত্ব | ৪,৬০০/বর্গকিমি (১২,০০০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৩৮২১ |
ইতিহাস
চৌমুহনী শহরের বড়পুলের নিকট ছাতারপাইয়া, আটিয়াবাড়ি, চন্দ্রগঞ্জ ও ফেনী খালের চার মোহনায় সংযোগ স্থানকে কেন্দ্র করে চৌমুহনী নামকরণ হয়। পূর্বে দেশীয় ও ভারতীয় মারোয়াড়ীদের বড় বড় দোকানপাট ও ব্যবসা ছিল। চৌমুহনীর সঙ্গে দেশের নদী বন্দর চাঁদপুর, ভৈরব, নারায়ণগঞ্জ সহ বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে নৌ-যোগাযোগ ছিল। এসব স্থান থেকে বড় বড় সাম্পান ও ডিঙ্গি নৌকায় মাল বোঝাই করে চৌমুহনী আসতো। এখানে ৬টি নৌকাঘাট ছিল।
রেল যোগাযোগ ছিল অনেক উন্নত। ১৯৬৯ সালে চট্টগ্রাম বিভাগের (বর্তমানে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ) মধ্যে বাণিজ্যিক দিক দিয়ে চৌমুহনী রেলস্টেশন প্রথম স্থান অর্জন করেছিল।
বাণিজ্য
চৌমুহনীতে বিসিক শিল্প নগরীতে ৭৪টি শিল্পকারখানা চালু রয়েছে। এছাড়া শহরে ২২টি বড় আটা কল ছাড়াও শতাধিক ক্ষুদ্র শিল্প রয়েছে। চৌমুহনীতে রয়েছে ডেলটা জুট মিল লিঃ। এছাড়া এখানে প্রায় ১০ হাজার দোকানপাট রয়েছে।
তেলশিল্প
১৯৪৯ সালে উপেন্দ্র কুমার সাহা চৌমুহনীতে শ্রী গোপাল অয়েল মিল (লাড্ডু গোপাল) স্থাপন করেন। পরে চৌমুহনীতে ৩২টি তেলের মিল স্থাপিত হয়। চৌমুহনীর তেল তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানেও রপ্তানি হতো। বিভিন্ন সমস্যায় বেশির ভাগ তেলের মিল বন্ধ হয়ে গেলেও বর্তমানে কয়েকটি চালু রয়েছে।
প্রকাশনা শিল্প
চৌমুহনীর ইসলামিয়া লাইব্রেরি ১৯৩৯ সালে ধর্মীয় প্রকাশনায় হাত দেয়। এর পর ১৯৪৫ সালে মৃত চিত্ত রঞ্জন সাহা চৌমুহনীতে বাসন্তি প্রেস প্রতিষ্ঠা করেন। পরে তিনি পুঁথিঘর প্রতিষ্ঠা করে প্রকাশনা শুরু করেন। পুঁথিঘর থেকে প্রকাশিত অধ্যাপক হরলাল রায়ের “বাংলা ব্যাকরণ ও রচনা” দেশব্যাপী ছাত্রছাত্রীদের নিকট সমাদৃত ছিল।
মুদ্রণ শিল্প
চৌমুহনীতে প্রায় একশ’ অফসেট প্রেস রয়েছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
এখানে চৌমুহনী রেলওয়ে স্টেশন নামে একটি রেল স্টেশন রয়েছে। ঢাকা-নোয়াখালী গামী রেলগাড়ি এখানে থামে। এ স্টেশনের মাধ্যমে নোয়াখালীর অধিকাংশ যাত্রী ছাড়াও সেনবাগ উপজেলা ও লক্ষ্মীপুর জেলার যাত্রীরা যাতায়াত করে।[1]
চৌমুহনীর উপর দিয়ে লক্ষ্মীপুর-চৌমুহনী সড়ক, ফেনী-নোয়াখালী সড়ক ও চৌমুহনী-মাইজদি সড়ক গেছে, এই সড়কগুলি চৌমুহনী বাজারে এসে মিলিত হয়েছে। এই সড়ক দিয়ে নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার সমস্ত লোকাল এবং আন্তঃজেলা যানবাহন ও মালবাহী গাড়ি চলাচল করে।[2]
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
চৌমুহনীতে চৌমুহনী সরকারি এস.এ কলেজ স্থাপিত হয় ১৯৪৩ সালে, যা ১৯৮৬ সালে সরকারি করণ হয়।
- চৌমুহনী সরকারি এস.এ কলেজ
- চৌমুহনী মদন মোহন উচ্চ বিদ্যালয়
- কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট বেগমগঞ্জ
- বেগমগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
- আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ
- সরকারি কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়
- বেগমগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়
- গনিপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- বেগমগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ
- জালাল উদ্দিন ডিগ্রী কলেজ
- ডেলটা জুট মিলস উচ্চ বিদ্যালয়
- ইঞ্জিনিয়ার দেলোয়ার হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়
- নোয়াখালী মৌলবী আব্দুর রহমান হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
- চৌমুহনী ইসলামিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদরাসা
এছাড়া অনেক বেসরকারি স্কুল ও কলেজ রয়েছে।
আরো দেখুন
তথ্যসূত্র
- "চৌমুহনীতে আন্তঃনগর রেল যাত্রীদের দুর্ভোগ"। দৈনিক ইত্তেফাক। ১২ আগস্ট ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০১৮।
- "চৌমুহনী শহরের প্রধান সড়কে বেচাকেনা"। দৈনিক ইত্তেফাক। ২০ অক্টোবর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০১৮।