চেলেং
চেলেং বা চেলেং চাদর শরীরের ওপর অংশে পরিধান করা একধরনের অসমীয়া পরম্পরাগত বস্ত্র। সাধারণত দেহের সম্মুখের দিকে একটি অংশ রেখে বাঁ কাঁধে পিঠের দিকে চেলেঙের অন্য অংশ উল্টে নেওয়া হয়। অসমীয়া সংস্কৃতিতে চেলেং চাদরকে এক সম্মানীয় সাজরূপে গণ্য করা হয়। চেলেঙসমূহ সাধারণত পাট বা কার্পাস সূতা দিয়ে তৈরি করা হয়। একটি চেলেং প্রায় ২৭৪ সেমি দীর্ঘ এবং ১৩০ সেমি চওড়া হয় এবং এর দুই মাথায় ফুল তোলা থাকে। এই ফুলসমূহ ফুটিয়ে তুলতে সাধারণত সোনালী সূতার ব্যবহার করা হয়।[1]
প্রকার
অসমীয়া লোকরা বিভিন্ন প্রকারের চেলেং চাদরের ব্যবহার করেন।[2] যেমন:-
- সোনার সূতায় চাবধরা চেলেং
- আঁচু দেওয়া চেলেং
- গারিয়লী চেলেং
- পারি দেওয়া চেলেং
- গুণাকটা চেলেং
- দরিয়ালি গুণা করা চেলেং
- সোনীয়া চেলেং
ব্যবহার
সরু সূতার চেলেঙখনি
বৈ দিয়া সরুভনী
হুঁচরি গাবলৈ যাওঁ ঐ গোবিন্দাই রাম
-বিহু হুঁচরির ঘোষা
উত্তরীয় বস্ত্র হিসাবে পরিচিত এইধরনের বস্ত্র পুরুষ এবং মহিলা উভয়ে পরিধান করে যদিও এর ব্যবহার সীমিত। হুঁচরি বিহুতে প্রধান ব্যক্তি বিহুবান বা গামছার সাথে চেলেং চাদর পরিধান করেন। সত্রাধিকার, গোসাঁই এবং ভকত-বৈষ্ণবরা প্রায় বাধ্যতামূলকভাবে চেলেঙের ব্যবহার করেন।[2]ভাওনার গায়ন-বায়নরাও চেলেং চাদরের ব্যবহার করা দেখা যায়। অসমীয়া বিবাহ অনুষ্ঠানে রভাতলায় বর-কন্যা উভয়ে চেলেং চাদর পরিধান করেন। দরাসাজের চেলেং সাধারণত পাটে বোনা হয়। অন্যান্য মাঙ্গলিক কাজেও চেলেং নেওয়ার নিয়ম আছে।
কোনো ব্যক্তিকে সম্মান বা সংবর্ধনা জানাতে প্রশস্তি পত্র, স্মারক ইত্যাদির সাথে বহু ক্ষেত্রে অঙ্গ বস্ত্র হিসাবে চেলেং এখনো দেওয়া হয়।[3] [4]
তথ্যসূত্র
- "অতীতে প্রচলিত আসামের কিছু বস্ত্র সম্ভার"। Ancient Assamese Costumes & Designs (Handloom Research & Designing Centre, Guwahati)। মাই গভ পোর্টাল। 05 Aug 2019। সংগ্রহের তারিখ April 5, 2020। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - বরদলৈ, উপেন্দ্র নাথ (১৬ এপ্রিল ২০১৭)। "রঙালী বিহু তথা আসামের বস্ত্র অলংকারের অতীত"। INFORMATION & PUBLIC RELATIONS, DIRECTORATE OF INFORMATION AND PUBLIC RELATIONS, GOVERNMENT OF ASSAM। রাইজর বাতরি। পৃষ্ঠা ৪৪। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ৫, ২০২০।
- "৫জন সাংবাদিককে পুরস্কার প্রদান"। জনমভূমি। নভেম্বর ৩০, ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ৫, ২০২০।
- "মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোবাল প্রদান করলেন মাধবদেব পুরস্কার"। The Sentinel। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ৫, ২০২০।