চুয়াডাঙ্গা

চুয়াডাঙ্গা বাংলাদেশের পশ্চিমে অবস্থিত খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রধান শহর। এটি চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রশাসনিক রাজধানী এবং সবচেয়ে বড় শহর ও জনবহুল স্থান। ১৮৬২ সালে বাংলাদেশের প্রথম রেলওয়ে স্টেশন এবং ১৮৬০ সালে বৃটিশ ভারতের বাংলাদেশের প্রথম ডাকঘর চুয়াডাঙ্গা শহরে স্থাপিত হয়। চুয়াডাঙ্গা শহরের সাথে সারা দেশের রেলপথে ও সড়ক পথে যোগাযোগ রয়েছে। চুয়াডাঙ্গা শহরের মোট আয়তন ৩৮ বর্গ কিলোমিটার এবং মোট জনসংখ্যা ২,২৪,০০০ জন, জনসংখ্যার ভিত্তিতে যা বাংলাদেশের ১৯ তম বৃহত্তম শহর[1]

চুয়াডাঙ্গা
শহর
ঘড়ির কাঁটার ক্রম অনুযায়ী: চৌরাস্তার মোড়, চুয়াডাঙ্গা স্টেডিয়াম, হোটেল শাহীদ প্যালেস, চুয়াডাঙ্গা সদর থানা, চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন
চুয়াডাঙ্গা
বাংলাদেশে চুয়াডাঙ্গা শহরের অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৩.৬৪৩৯৯৯° উত্তর ৮৮.৮৫৫৬৩৭° পূর্ব / 23.643999; 88.855637
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগখুলনা বিভাগ
জেলাচুয়াডাঙ্গা জেলা
উপজেলাচুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা
সরকার
  ধরনপৌরসভা
  শাসকচুয়াডাঙ্গা পৌরসভা
  পৌর মেয়রজাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন
আয়তন
  পৌর এলাকা৩৮ বর্গকিমি (১৫ বর্গমাইল)
  মহানগর৬৭ বর্গকিমি (২৬ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা
  পৌর এলাকা২,২৪,৫৭৬
  মহানগর২,৬৭,০০০
সময় অঞ্চলবাংলাদেশ সময় (ইউটিসি+৬)
ডাকঘর কোড৭২০০

ইতিহাস

গ্রিক ঐতিহাসিকদের মতে এ এলাকাতেই বিখ্যাত গঙ্গারিডাই রাজ্য অবস্থিত ছিল। গাঙ্গেয় নামক একটি শহরও এ চুয়াডাঙ্গায় অবস্থিত ছিল বলে শোনা যায়। চুয়াডাঙ্গার নামকরণ সম্পর্কে কথিত আছে যে, এখানকার মল্লিক বংশের আদিপুরুষ চুঙ্গো মল্লিকের (ওরফে চুয়া মালিক) নামে এ জায়গার নাম চুয়াডাঙ্গা হয়েছে। ১৭৪০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে চুঙ্গো মল্লিক তার স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ভারতের নদীয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলার সীমানার ইটেবাড়ি-মহারাজপুর গ্রাম থেকে মাথাভাঙ্গা নদীপথে এখানে এসে প্রথম বসতি গড়েন। ১৭৯৭ সালের এক রেকর্ডে এ জায়গার নাম চুঙ্গোডাঙ্গা উল্লেখ রয়েছে। ফারসি থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করার সময় উচ্চারণের বিকৃতির কারণে বর্তমান চুয়াডাঙ্গা নামটা এসেছে। চুয়াডাঙ্গা নামকরণের আরও দুটি সম্ভাব্য কারণ প্রচলিত আছে। চুয়া < চয়া চুয়াডাঙ্গা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার নামকরণ সম্পর্কে আরেক জায়গায় কথিত আছে যে, এই অঞ্চল খুবই পরিষ্কার ছিল এক সময়ে। এই অঞ্চলের লোক পরিষ্কারকে বলতেন চুয়া এবং স্থানকে বলত ডাঙ্গা । অতএব, পরিষ্কারস্থান >চুয়াডাঙ্গা। তবে উপরের দুটি কারণ ই সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য।

১৯৬০ সালে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা গঠিত হলে এর কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৭২ সালে।[2]

প্রশাসন

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা একজন মেয়র এবং ১২ জন কাউন্সিলর এবং ৩ জন মহিলা কাউন্সিলর দ্বারা গঠিত। প্রতিটি কাউন্সিলর শহরের একটি করে ওয়ার্ডের প্রতিনিধিত্ব করেন। তারা সবাই জনগণের ভোটে সরাসরি নির্বাচিত।

জনসংখ্যা

২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গা শহরের মোট জনসংখ্যা ১২৮,৮৬৫ জন।[3] যার মধ্যে ৬৪,৪২১ জন পুরুষ এবং ৬৪,৪৪৪ জন মহিলা। এ বিপুল পরিমাণ জনসংখ্যা ৩০,৯২৭টি খানায় বাস করে। ২০০১ সালের এর জনসংখ্যা ছিল ১১৩,৯২৮জন।[4] জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১৮৬৭ জন লোক বসবাস করে। লিঙ্গ অনুপাত প্রতি ১০০০ জন পুরুষের বিপরীতে ১০০০ জন নারী রয়েছে এবং সাক্ষরতার হার ১০০% (৭ বছরের ঊর্ধ্বে)।[3]যার কারণে এটি বাংলাদেশে প্রথম নিরক্ষরমুক্ত শহর ।

তথ্যসূত্র

  1. "23: Area, Household, Population and Literacy Rate of the Cities, 2011"। Population & Housing Census-2011 [আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১] (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। জাতীয় প্রতিবেদন (ইংরেজি ভাষায়)। ভলিউম ৩: Urban Area Rport, 2011। ঢাকা: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। মার্চ ২০১৪। পৃষ্ঠা XI। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
  2. রাজীব আহমেদ (২০১২)। "চুয়াডাঙ্গা জেলা"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  3. "4.1.6 Chuadanga"। Population & Housing Census-2011 [আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১] (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। জাতীয় প্রতিবেদন (ইংরেজি ভাষায়)। ভলিউম ৩: Urban Area Rport, 2011। ঢাকা: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। মার্চ ২০১৪। পৃষ্ঠা ৬৬। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
  4. "Bangladesh: Divisions and Urban Areas - Population Statistics, Maps, Charts, Weather and Web Information"www.citypopulation.de। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-১৮
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.