চর ফ্যাশন

চর ফ্যাশন বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগের অন্তর্গত ভোলা জেলায় অবস্থিত একটি শহর। এই শহরটি চরফ্যাশন উপজেলার প্রশাসনিক কেন্দ্র এবং প্রধান শহর।

চরফ্যাসন
চরফ্যাশন
পৌরশহর
চরফ্যাশন শহরে অবস্থিত জ্যাকব টাওয়ার
চরফ্যাশন শহরে অবস্থিত জ্যাকব টাওয়ার
চরফ্যাসন বাংলাদেশ-এ অবস্থিত
চরফ্যাসন
চরফ্যাসন
বাংলাদেশে চরফ্যাশন শহরের অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২২.১৯৯৮০০° উত্তর ৯০.৭২৬১৮৯° পূর্ব / 22.199800; 90.726189
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগবরিশাল বিভাগ
জেলাভোলা জেলা
উপজেলাচরফ্যাশন উপজেলা
সরকার
  ধরনপৌরসভা
  শাসকচরফ্যাশন পৌরসভা
  পৌর মেয়রবাদল কৃষ্ণ দেবনাথ [1]
আয়তন
  মোট৩৮.৭৬ বর্গকিমি (১৪.৯৭ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
  মোট৪২,৯১৫ [2]
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৮৩৪০
কলিং কোড+৮৮০

নামকরণ

এ শহরটি মূলত চরফ্যাশন বাজার নামক একটি বাজারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। চরফ্যাশন পূর্বে কখনো নোয়াখালী কখনো বরিশাল আবার কখনো বা পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার সাথে সংযুক্ত ছিল। বর্তমানে চরফ্যাশন এর ভৌগোলিক অবস্থান পূর্বে এমন ছিল না। এ অঞ্চল ছিল অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চরের সমন্বয়ে গঠিত একটি এলাকা। তৎকালীন বরিশালের জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এইচ.জে.এইচ ফ্যাশন সাহেব ১৮৮৫-৮৭ সালের দিকে প্রশাসনিক ভাবে এ অঞ্চলের চরগুলির প্রতি দৃষ্টি দেন। তিনি এ এলাকায় একটি বাজার স্থাপন করেন। ফ্যাশন সাহেব চর এলাকায় বাজার স্থাপন করেন বলে মি. ডোনাবানের প্রস্তাবে এ বাজারের নাম হয় চর ফ্যাশন বাজার। পরবর্তীতে এ এলাকার প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠে চরফ্যাশন বাজারটি। পরবর্তীতে এলাকার প্রাণকেন্দ্র চরফ্যাশন বাজারের নাম অনুসারে গোটা এলাকার নাম করণ করা হয় চরফ্যাশন। [3]

ইতিহাস

১৮৮৫ সালে ভাসমান চরের কিছু অংশ চাষাবাদের যোগ্য হয়ে উঠে। তারপর থেকেই ধীরে ধীরে শুরু হয় জনবসতি, গড়ে উঠে জনপদ। এরপর তৎকালীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ‘জি ফ্যাশন’ এর নামানুসারে চরফ্যাশন উপজেলা নামকরণ করা হয়। ১৯০০ সালে অভয় চন্দ্র সেন নামক এক ডেপুটি কালেক্টর আসেন। এ জনমানবশূন্য এলাকায় বসতি স্থাপনের উদ্দেশ্যে অভয় চন্দ্র সেন জনসাধারণের মধ্যে জমি বিতরণ শুরু করেন। চরাঞ্চল হওয়ায় তখন মানুষের এ স্থানে বসবাসের প্রতি অনীহার কারণে তিনি মানুষের মধ্যে জোরপূর্বক জমি বিতরণ করেন। যাকে ডেকে নিয়ে জমি দিয়েছেন তিনি অঢেল সম্পত্তির মালিক হলেন, আর যে কালেক্টরের নিকট যাওয়াকে ভয় পেয়েছেন তিনি সম্পত্তির মালিক থেকে বঞ্চিত ছিলেন। ১৯২০ সালে চরফ্যাশন বাজার গড়ে উঠে। ধীরে ধীরে এ বাজারকে কেন্দ্র করে আধুনিকায়ন ও ক্রমাগত উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে বর্তমান শহর হিসেবে গড়ে উঠেছে। ১৯৪৮ সালে ভোলা শহর থেকে চরফ্যাশনের সড়ক পথের রাস্তা সম্প্রসারিত হয়। বাজারে সর্বপ্রথম আঃ সোবহান মুন্সীর হোটেল ছিল। তার পর সেখানে ঢাকা হোটেল নামক একটি হোটেল স্থাপিত হয়। বর্তমানে ওই স্থানে ক্যাফে জুয়েল হোটেল ও কামরুল ডিজিটাল ষ্টুডিও রয়েছে। পরবর্তীতে ১৯৯০ সালে চরফ্যাশন পৌরসভা স্থাপিত হলে চরফ্যাশন পৌরশহরের মর্যাদা লাভ করে। [4]

ভৌগোলিক উপাত্ত

শহরটির অবস্থানের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ হল ২২.১৯৯৮০০° উত্তর ৯০.৭২৬১৮৯° পূর্ব / 22.199800; 90.726189। সমুদ্র সমতল থেকে শহরটির উচ্চতা ৮ মিটার

জনসংখ্যা

বাংলাদেশের আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১ অনুযায়ী চরফ্যাশন শহরের মোট জনসংখ্যা ৪২,৯১৫ জন যার মধ্যে ২১,৮০৭ জন পুরুষ এবং ২১,১০৮ জন নারী। এ শহরের পুরুষ এবং নারী অনুপাত ১০৩:১০০। [5]

প্রশাসন

এ শহরটি চরফ্যাশন পৌরসভা নামক একটি স্থানীয় সরকার সংস্থা (পৌরসভা) দ্বারা পরিচালিত হয় যা ৯টি ওয়ার্ড এবং ৯টি মহল্লায় বিভক্ত। ৩৮.৭৬ বর্গ কি.মি. আয়তনের চরফ্যাশন শহরের ১৯ বর্গ কি.মি. চরফ্যাশন পৌরসভা দ্বারা শাসিত হয়। এ পৌর শহরের নাগরিকদের পৌরসেবা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদান করাই এ সংস্থার কাজ। [6]

তথ্যসূত্র

  1. "চরফ্যাশন শহরের পৌরসভার মেয়র"। bdmayor.com। ২০১৯-১০-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-০২
  2. "চরফ্যাশন শহরের জনসংখ্যা ও আয়তন"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-১২
  3. "নামকরণের ইতিহাস"। ২০১৯-১০-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-৩১
  4. "চরফ্যাশনে মানব বসতির ইতিহাস"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-০২
  5. "Urban Centers in Bangladesh"। Population & Housing Census-2011 [আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১] (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। জাতীয় প্রতিবেদন (ইংরেজি ভাষায়)। ভলিউম ৫: Urban Area Rport, 2011। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। মার্চ ২০১৪। পৃষ্ঠা ১৭৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-০২
  6. "এক নজরে পৌরসভা"www.paurainfo.gov.bd। ২০১৯-১১-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-০২
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.