চকবাজার

চকবাজার পুরান ঢাকার লালবাগে অবস্থিত একটি জনপ্রিয় বাজার। রমজান মাসে এখানে রকমারি ইফতারের পশরা বসে।[1] কাবাবের কথা আসলেই চকবাজারের নামটিও আসবে। চকবাজারের কাবাব খুব বিখ্যাত। ঢাকার পুরানো বাজারগুলির মধ্যে চকবাজার অন্যতম।

১৯০৪ সালের চকবাজার

চকবাজার বর্তমানে সারা বাংলাদেশের পাইকারী বিক্রেতাদের নির্ভরযোগ্য স্থান। সকল ধরনের পাইকারি মালামাল চকবাজারের সকল রাস্তা, বাড়ি, মার্কেটজুরে রয়েছে। যেমনঃ প্রসাধনী, কাপড়, খেলনা, নিত্য ব্যবহার‍ সামগ্রী, বেকারী প্রণ্য।

শিল্প কারখানার কাচামাল। যেমনঃ কেমিক্যাল, মেডিকেল সামগ্রি, হালকা মেশিনারিজ ইত্যাদি।

প্লাস্টিক সামগ্র, ভোগ্য পন্য সহ অসংখ্য পন্যের বিশাল পাইকারি বাজার।

বন্ধের দিনঃ সরকারি বিধি অনুযায়ী শুক্রবার সারা দিন ও শনিবার অর্ধদিবস বন্দ্ধ থাকে।

তবে শনিবার অনেকেই সকাল থেকেই দোকানপাট খুলে থাকে।

সপ্তাহের অন্যান্য দিন ভোর থেকে সন্ধ্যা ৮ পর্যন্ত খোলা রাখার সরকারি নির্দেশ থাকলেও পাইকারী বাজারগুলো গভীর রাত পর্যন্তও খোলা থাকে।

ইতিহাস

মুঘল আমলে চকবাজারের পত্তন হয়। মুঘল আমলে সেনাপতি মানসিংহ পূর্ববঙ্গে এসেছিলেন বিদ্রোহ দমন করতে। ১৬০২ সালে তিনি ভাওয়াল থেকে সদর দফতর স্থানান্তর করেছিলেন বর্তমান কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গায়। সেখানেই মুঘল দুর্গ স্থাপিত হয়েছিল। মুঘল দুর্গের পাশেই গড়ে উঠে চকবাজার।[2]

তবে একসময় এই চকবাজারকে বহুলোক চৌক বন্দর নামে ডাকতেন। মানসিংহের আমল থেকে চকবাজার যাত্রা শুরু করলেও এটি পূর্ণতা লাভ করেছিল মুর্শীদকুলি খাঁর সময়ে। মুর্শিদ কুলি খাঁর পর ওয়াল্টার সাহেব নতুন করে চকবাজার তৈরি করেন। সে সময় তিনি কোমর পর্যন্ত উঁচু দেওয়াল দিয়ে চকবাজার ঘিরে দিয়েছিলেন এবং বাজারে প্রবেশের জন্য ১৬ টি গেট করে দিয়েছিলেন। [3] এখানে বিশিষ্ঠ ওলী হযরত হাফিয আহমদ জৌনপুরী (রহ) এর

১৮৮৫ সালে চকবাজারে বিবি মরিয়ম কামান

মাযার রয়েছে। ১৮৯৯ সালের ২৬ জানুয়ারি ঢাকার সদরঘাটে তার মৃত্যু হয়। চকবাজার শাহী জামে মসজিদের দক্ষিণ পার্শ্বে তার মাযার অবস্থিত।[4]

ইফতারের জন্য চকবাজারের বিশেষ সুনাম রয়েছে। বিশ শতকের গোড়ার দিকে যেমন, এখনও তেমনি রমজানে ইফতারীর সময় চকবাজারে প্রচন্ড ভিড় হয়। [2]

চকবাজারের ছোলাভুনা

স্থিরচিত্র

তথ্যসূত্র

  1. "যে কারণে বিখ্যাত পুরান ঢাকার চকবাজার"দৈনিক কালের কণ্ঠ। ২০১৯-০২-২১। ২০২০-০৬-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৩
  2. মুনতাসীর মামুন, "ঢাকা: স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী", পরিবর্ধিত সংস্করণ, জুলাই ২০০৮, অনন্যা প্রকাশনী, ঢাকা, পৃষ্ঠা ৭৫, আইএসবিএন ৯৮৪-৪১২-১০৪-৩
  3. নাজির হোসেন, "কিংবদন্তির ঢাকা", তৃতীয় সংস্করণ, এপ্রিল ১৯৯৫, থ্রিস্টার কো-অপারেটিভ মালটিপারপাস সোসাইটি লিঃ, ঢাকা, পৃষ্ঠা ৩০৮-৩০৯
  4. আহমদ, হাফিজ। "জৌনপুরী"বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-১২
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.