গ্রিনহাউজ গ্যাস
বায়ুমন্ডলের যে সকল গ্যাস তাপীয় অবলোহিত সীমার মধ্যে বিকিরিত শক্তি শোষণ ও নির্গত করে সে সকল গ্যাসকে গ্রিনহাউস গ্যাস বলে।এটি গ্রিনহাউস প্রভাবের মৌলিক কারণ।[1] পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রাথমিক গ্রিনহাউস গ্যাস গুলোর মধ্যে আছে জলীয় বাষ্প,কার্বন ডাই অক্সাইড,মিথেন,নাইট্রাস অক্সাইড এবং ওজোন।গ্রিনহাউস গ্যাস ছাড়া পৃথিবী পৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা হত -১৮ °C (0 °F),[2] যা বর্তমানে ১৫ °C(৫৯ °F)[3][4][5] সৌর জগতের বিভিন্ন গ্রহ যেমন শুক্র ,মঙ্গল ইত্যাদির বায়ুমন্ডলেও বিভিন্ন গ্রিনহাউস গ্যাস রয়েছে।
১৭৫০ সালের দিকে শিল্প বিপ্লবের পর ২০১৭ সাল পর্যন্ত মানুষের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড বায়ুমন্ডলে ৪০% কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস বৃদ্ধি করেছে।[6] কার্বন ডাই অক্সাইডেরর এই বৃদ্ধির বেশীর ভাগই ঘটেছে মূলত জীবাশ্ম জ্বালানি ,কয়লা ,তেল ,প্রাকৃতিক গ্যাস পোড়ানোর ফলে।[7][8] এছাড়াও বন ঊজার ,ভূমি ব্যবহারে পরিবর্তন ,ভূমিক্ষয় ও কৃষিও দ্বায়ি।[9][10] ধারণা করা হয় ,বর্তমানে যে হারে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হচ্ছে তা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ২০৪৭ সালের মধ্যে বাস্তু তন্ত্র(Ecosystem) ও জীববৈচিত্র সহ বিভিন্ন প্রাণি ও মানুষের উপড় এর মারাত্মক খারাপ প্রভাব পড়বে।[11] সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণে বর্তমান নিঃসরণ হার ২০৩৬ সালের মধ্যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২ °C (ডিগ্রী সেলসিয়াস) পর্যন্ত বাড়তে পারে।[12]
পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে গ্যাস সমূহ
গ্রিনহাউস গ্যাসগুলো
বায়ুমন্ডলের যে সকল গ্যাস তাপীয় অবলোহিত সীমার মধ্যে বিকিরিত শক্তি শোষণ ও নির্গত করে সে সকল গ্যাসকে গ্রিনহাউস গ্যাস বলে।এটি গ্রিনহাউস প্রভাবের মৌলিক কারণ।[1] যেসকল গ্রিনহাউস গ্যাস পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায়ঃ
- জলীয় বাষ্প (H
2O) - কার্বন ডাই অক্সাইড (CO
2) - মিথেন (CH
4) - নাইট্রাস অক্সাইড (N
2O) - ওজোন (O
3) - ক্লোরো ফ্লোরো কার্বন সমূহ(CFCs)
- হাইড্রোফ্লুরো কার্বন সমূহ( HCFCs and HFCs সহ)
বায়ু মন্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাস এর ঘনত্ব মূলত এর উৎস(প্রাকৃতিকভাবে এবং মানুষের কর্মকন্ডের দ্বারা নির্গত) ও ব্যবহৃত হয়ে যাওয়ার(বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক যৌগে রুপান্তরের) পরিমাণ এর উপর নির্ভর করে।[13] নির্গত গ্যাসের যে অংশ বায়ুমন্ডলে থেকে যায় তাকে 'বায়ুবাহিত ভগ্নাংশ' বা "airborne fraction" (AF) বলে।২০০৬ সালে কার্বন ডাই অক্সাইডের জন্য এটি ছিল ০.৪৫। ১৯৫৯ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বাৎসরিক 'বায়ুবাহিত ভগ্নাংশ' বা "airborne fraction" বৃদ্ধি পেয়েছিল প্রতিবছর ০.২৫ ± ০.২১%।.[14]
গ্রিনহাউস গ্যাস নয় যে গ্যাস সমূহ
বায়ুমন্ডলের প্রধান উপাদান সমূহ যেমন-নাইট্রোজেন(N
2),অক্সিজেন(O
2),এবং আর্গন(Ar) গ্রিনহাউস গ্যাস নয়।কারণ তারা অবলোহিত রশ্মি শোষণ করেনা।আবার মনো অক্সাইড]] অথবা হাইড্রোজেন ক্লোরাইড অবলোহিত রশ্মি শোষণ করলেও তাদের সক্রিয়তা ও দ্রবণীয়তার জন্য তারা বায়ু মন্ডলে অতি স্বল্প সময়ের জন্য থাকতে পারে।সেজন্য,গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়া তে তাদের তাৎপর্যপূর্ণ অংশগ্রহণ না থাকায় গ্রিনহাউস গ্যাস হিসাবে বিবেচনা করে থাকে না।
বিকিরণের পরোক্ষ প্রতিক্রিয়া
তথ্যসূত্র
- "IPCC AR4 SYR Appendix Glossary" (পিডিএফ)। ১৭ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০০৮।
- "NASA GISS: Science Briefs: Greenhouse Gases: Refining the Role of Carbon Dioxide"। www.giss.nasa.gov। ২০১৬-০৫-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-২৬।
- Karl TR, Trenberth KE (২০০৩)। "Modern global climate change"। Science। 302 (5651): 1719–23। ডিওআই:10.1126/science.1090228। পিএমআইডি 14657489। বিবকোড:2003Sci...302.1719K।
- Le Treut H.; Somerville R.; Cubasch U.; Ding Y.; Mauritzen C.; Mokssit A.; Peterson T.; Prather M. (২০০৭)। Historical overview of climate change science. In: Climate change 2007: The physical science basis. Contribution of Working Group I to the Fourth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change (Solomon S., Qin D., Manning M., Chen Z., Marquis M., Averyt K. B., Tignor M. and Miller H. L., editors) (পিডিএফ)। Cambridge University Press। ২৬ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০০৮।
- "NASA Science Mission Directorate article on the water cycle"। Nasascience.nasa.gov। ১৭ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০১০।
- "Trends in Atmospheric Carbon Dioxide"।
- "Frequently asked global change questions"। Carbon Dioxide Information Analysis Center। ১৭ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৮।
- ESRL Web Team (১৪ জানুয়ারি ২০০৮)। "Trends in carbon dioxide"। Esrl.noaa.gov। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-১১।
- https://www.epa.gov/ghgemissions/global-greenhouse-gas-emissions-data
- "AR4 SYR Synthesis Report Summary for Policymakers – 2 Causes of change"। ipcc.ch। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৮।
- Mora, C (২০১৩)। "The projected timing of climate departure from recent variability"। Nature। 502 (7470): 183–187। ডিওআই:10.1038/nature12540। পিএমআইডি 24108050। বিবকোড:2013Natur.502..183M।
- Mann, Michael E. (২০১৪-০৪-০১)। "Earth Will Cross the Climate Danger Threshold by 2036"। Scientific American। সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০১৬।
- "Chapter 7: Couplings Between Changes in the Climate System and Biogeochemistry" (পিডিএফ)। IPCC WG1 AR4 Report। IPCC। ২০০৭। পৃষ্ঠা FAQ 7.1; report page 512; pdf page 14। ১৫ মার্চ ২০১১ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১১।
- Canadell, J. G.; Le Quere, C.; Raupach, M. R.; Field, C. B.; Buitenhuis, E. T.; Ciais, P.; Conway, T. J.; Gillett, N. P.; Houghton, R. A.; Marland, G. (২০০৭)। "Contributions to accelerating atmospheric CO
২ growth from economic activity, carbon intensity, and efficiency of natural sinks"। Proc. Natl. Acad. Sci. U.S.A.। 104 (47): 18866–70। ডিওআই:10.1073/pnas.0702737104। পিএমআইডি 17962418। পিএমসি 2141868 । বিবকোড:2007PNAS..10418866C। - "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২০ সেপ্টেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০১৮।