গ্যারি ব্রেন্ট

গ্যারি বাজিল ব্রেন্ট (ইংরেজি: Gary Brent; জন্ম: ১৩ জানুয়ারি, ১৯৭৬) রোডেশিয়ার সিনোইয়া এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক জিম্বাবুয়ীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯৬ থেকে ২০০৮ সময়কালে জিম্বাবুয়ের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।[1][2][3]

গ্যারি ব্রেন্ট
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামগ্যারি বাজিল ব্রেন্ট
জন্ম (1976-01-13) ১৩ জানুয়ারি ১৯৭৬
সিনোইয়া, রোডেশিয়া
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট
ভূমিকাবোলার
সম্পর্কজন ব্রেন্ট (কাকাতো ভাই) ও ডেভিড ব্রেন্ট (কাকাতো ভাই)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪২)
১৮ নভেম্বর ১৯৯৯ বনাম শ্রীলঙ্কা
শেষ টেস্ট২৭ ডিসেম্বর ২০০১ বনাম শ্রীলঙ্কা
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৪৬)
৩০ অক্টোবর ১৯৯৬ বনাম পাকিস্তান
শেষ ওডিআই২ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ বনাম পাকিস্তান
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০৭ - বর্তমানম্যাশোনাল্যান্ড (নর্দার্নস)
২০০৬ - ২০০৭সাউদার্নস
১৯৯৪ - ১৯৯৯ম্যাশোনাল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৭০ ৬১ ১২৯
রানের সংখ্যা ৩৫ ৪০৮ ২,০৬৬ ৯৩৪
ব্যাটিং গড় ৫.৮৩ ১২.০০ ২৬.১৫ ১৪.৮২
১০০/৫০ ০/০ ০/১ ২/৮ ০/৩
সর্বোচ্চ রান ২৫ ৫৯* ১৩০ ৬৪
বল করেছে ৮১৮ ৩,৩৯০ ১০,১৫৭ ৫,৮২৩
উইকেট ৭৫ ১৮৬ ১৩৫
বোলিং গড় ৪৪.৮৫ ৩৭.০১ ২৫.২৭ ৩৪.০৯
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং ৩/২১ ৪/২২ ৬/৪৬ ৪/২২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/– ২০/– ৩০/– ৩৩/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৩ জানুয়ারি ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটে মনিকাল্যান্ড ও ম্যাশোনাল্যান্ড দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে কার্যকরী ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করেছেন গ্যারি ব্রেন্ট

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

১৯৯৪-৯৫ মৌসুম থেকে ২০০৮-০৯ মৌসুম পর্যন্ত গ্যারি ব্রেন্টের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ব্রেন্ট ইনসুইঙ্গার সহযোগে বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। চমৎকারভাবে ধীরগতিসম্পন্ন বোলিং কৌশল প্রয়োগ করতেন তিনি। তবে, ব্যাটিংয়ে মোটেই সুবিধে করতে পারেননি। মাত্র ৫.৮৩ গড়ে রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন তিনি। এ ধরনের রানের গড় থাকা সত্ত্বেও বেশ ক্ষাণিকটা উপরের অবস্থানে ব্যাটিং করতে নামতেন। নমনীয়তা অবলম্বন করে দ্রুতলয়ে রান সংগ্রহের মাধ্যমে দলীয় রানকে স্ফীত করার সমূহ সম্ভাবনাই এর প্রধান কারণ ছিল। বল হাতে নিয়ে ৩০-এর কাছাকাছি গড়ে উইকেট সংগ্রহ করেছেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে চারটিমাত্র টেস্ট ও সত্তুরটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন গ্যারি ব্রেন্ট। ১৮ নভেম্বর, ১৯৯৯ তারিখে বুলাওয়েতে সফরকারী শ্রীলঙ্কা দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২৭ ডিসেম্বর, ২০০১ তারিখে কলম্বোয় একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করা থেকে বঞ্চিত হবার পর ২০০৩-০৪ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্যে মনোনীত হন। এরপর, ২০০৪ সালে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ডের সাথে আর্থিক মতবিরোধে জড়িয়ে পড়েন। পনেরো জন বিদ্রোহী খেলোয়াড়ের অন্যতম ছিলেন তিনি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুইবার আসা-যাওয়ার পালায় ছিলেন। ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে স্নায়বিক চাপের মাধ্যমে ২০ বছর বয়সী গ্যারি ব্রেন্টের পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। এরপর সাত বছর খেলার জগৎ থেকে দূরে ছিলেন। খেলায় স্থিরতা থাকলেও তা যথেষ্ট ছিল না। ২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে জাতীয় দলে রাখা হয়নি। এরপর, ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ন্যাটওয়েস্ট সিরিজে তেমন কোন প্রভাববিস্তার করতে পারেননি। এরফলে তার আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ী জীবন কার্যত শেষ হয়ে গিয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন

২০০৬-০৭ মৌসুমে ভারতে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি প্রতিযোগিতায় অপ্রত্যাশিতভাবে খেলার জন্যে আহুত হন। দলের জ্যেষ্ঠ ও সর্বাপেক্ষা অভিজ্ঞতাসম্পন্ন খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। তিনি আঘাতপ্রাপ্ত টেরেন্স ডাফিনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন। ঐ প্রতিযোগিতায় তিনি মাত্র একটি খেলায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ লাভ করেছিলেন। তবে বেশ কার্যকর ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। সাত ওভারে ১/২৮ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। জিম্বাবুয়ে দলের ১৩০ রানের মধ্যে তিনি করেন দশ রান।

খেলার জগতে ফিরে এসে ২০.৩১ গড়ে ১৯ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। ২০০৭ সালে হারারেতে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। এটিই একদিনের আন্তর্জাতিকে তার সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস হিসেবে রয়ে যায়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ওডিআইয়ে দূর্দান্ত খেলেন। দলের সংগ্রহ ৭২/৭ থাকা অবস্থায় বেপরোয়াভাবে ৫৯ রান তুলে শীর্ষ রান সংগ্রাহকে পরিণত হন। পাশাপাশি বল হাতে বেশ সুন্দর ভূমিকা পালন করেন তিনি। এর স্বীকৃতিস্বরূপ ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৭ সালের নভেম্বর মাসের শেষদিকে বাংলাদেশ গমনের জন্যে মনোনীত হন।

এছাড়াও, দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের বিস্ময়কর বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। রিকি পন্টিংকে থার্ডম্যান অঞ্চলে কটবিহাইন্ডে ও ব্রেট লিকে আউট করে বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন চার ওভারে ২/১৯।

অবসর

ক্রমাগত দল নির্বাচকমণ্ডলীর উপেক্ষা ও সীমিত আন্তর্জাতিক খেলা আয়োজনের কবলে পড়েন। ওয়ারউইকশায়ারের রাগবি স্কুলের পেশাদারী পর্যায়ে দুই মৌসুম ক্রিকেট খেলেন। এরপর, সেপ্টেম্বর, ২০১০ সালে নিজদেশ জিম্বাবুয়েতে প্রত্যাবর্তন করেন। সেখানে তিনি আঞ্চলিক পর্যায়ে যুব দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেন।

২০০৮ সালে ইংল্যান্ডে কোচ হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হন। বর্তমানে তিনি ইয়র্কের ইয়র্ক ক্রিকেট একাডেমিতে কোচিং করাচ্ছেন।

তথ্যসূত্র

  1. "Players / Zimbabwe / ODI caps"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০২০
  2. "Zimbabwe ODI Batting Averages"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০২০
  3. "Zimbabwe ODI Bowling Averages"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০২০

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.