গৌতম বসু

গৌতম বসু (১৩ মে ১৯৫৫ - ১৮ জুন ২০২১) ছিলেন আশির দশকের বিখ্যাত ভারতীয় বাঙালি কবি ও প্রাবন্ধিক। সুগভীর অন্তর্দৃষ্টিতে দেখেছেন জীবনের কাছের বা বহুদূরের মুহূর্তগুলিকে আর খুবই সংযতভাবে সৃষ্টি করেছেন তার কাব্যমোদীদের অনুসন্ধিষ্ণু মনের খোরাক। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাকে রবীন্দ্র পুরস্কার প্রদান করে। [2]

গৌতম বসু
জন্ম(১৯৫৫-০৫-১৩)১৩ মে ১৯৫৫
মৃত্যু১৮ জুন ২০২১(2021-06-18) (বয়স ৬৬)[1]
জাতীয়তাভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তনকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাকবি ও প্রাবন্ধিক
পরিচিতির কারণরসাতল, স্বর্ণগরুড়চূড়া
পুরস্কাররবীন্দ্র পুরস্কার (২০১৫)

কবি গৌতম বসুর জন্ম ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দের ১৩ মে (১৩৬২ বঙ্গাব্দের ২৯ বৈশাখ) পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং-এ পিতার কর্মস্থলে। তার পূর্বপুরুষের আদি নিবাস ছিল মেদিনীপুর জেলার পিংলায়।[3] তবে তার বেড়ে ওঠা ও শিক্ষাদীক্ষা সবই কলকাতা শহরে। বিশ শতকের সত্তর দশকের গোড়ার দিকে তার সহপাঠীদের উদ্যোগে প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় অধুনালুপ্ত “শতভিষা” সাহিত্য পত্রিকায়। স্বল্প দৈর্ঘ্যের শিরোনামহীন বাইশটি কবিতার সংকলন - “অন্নপূর্ণা ও শুভকাল” প্রকাশিত হয় ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে। তার কবিতা মায়াময় স্বাদের ও জাদুকরী হওয়ার কারণে বাংলার বহু তরুণ কবি ও কাব্যমোদীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছিল। পেশায় গৌতম ছিলেন একজন ব্যাঙ্ক কর্মচারী এবং কর্মসূত্রে ঘুরতে হয়েছিল নানা জায়গায়।[2] তাই প্রথমদিকে ধীরে ধীরে প্রকাশিত হয়েছে 'অতিশয় তৃণাঙ্কুরের পথে', 'রসাতল', 'নয়নপথগামী' প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থ। কবিতা ছাড়াও তিনি সাহিত্যবিষয়ক (অবশ্যই কবিতাকেন্দ্রিক) প্রবন্ধ-নিবন্ধ লিখতেন বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়, তারই সংকলন হল- 'গদ্যসংগ্রহ'।[4] কবিতায় যেমন তিনি জীবনের সাংঘাতিক সত্যকে অনায়াসে উন্মোচন করেছেন, নিবন্ধ রচনায় ছিলেন নিরপেক্ষ নিরাবেগ এবং তারফলে সেগুলি ছিল বেশ ধারালো, নিষ্ঠুর এবং বিশ্লেষণাত্মক।

প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ

  • অন্নপূর্ণা ও শুভকাল (১৯৮১)
  • অতিশয় তৃণাঙ্কুর পথে (১৯৯১)
  • রসাতল (২০০১)
  • নয়নপথগামী (২০০৭)
  • কবিতা সমগ্র (২০০৮)
  • স্বর্ণগরুড়চূড়া (২০১৩)
  • কবিতা সংগ্রহ (২০১৫), আদম, কলকাতা
  • মঞ্জুশ্রী (২০১৬)
  • জরাবর্গ (২০১৮) তালপাতা, কলকাতা
  • সুকুমারীকে না-বলা কথা (২০১৯)
  • গদ্যসংগ্রহ

সম্মাননা ও পুরস্কার

কবি গৌতম বসু ২০০৩ খ্রিস্টাব্দে প্রথম রসাতল কাব্যগ্রন্থের জন্য কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় স্মরণ কমিটি কর্তৃক বীরেন্দ্র পুরস্কারে সম্মানিত হন। এরপর ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে স্বর্ণগরুড়চূড়া কাব্যগ্রন্থের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন।

জীবনাবসান

কবি গৌতম বসু দীর্ঘদিন ধরে সিওপিডি’র সমস্যায় ভুগছিলেন। ২০২১ খ্রিস্টাব্দের ১৭ জুন (২ আষাঢ়, ১৪২৮) বৃহস্পতিবার বিকালে অসুস্থ বোধ করায় তাকে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তার কিডনি বিকল হতে শুরু করে। পরদিন অর্থাৎ ১৮ জুন শুক্রবার (৩ আষাঢ়, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ) সকাল ৯ টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। [5][1]

তথ্যসূত্র

  1. "প্রয়াত হলেন কবি গৌতম বসু"। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-১১
  2. "প্রয়াত কবি গৌতম বসু, শোকস্তব্ধ পাঠকমহল"। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-১১
  3. "কবি গৌতম বসুর সঙ্গে আলাপবিস্তার"। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-১১
  4. "ধারলো ও নিরাবেগ বিশ্লেষণ — সুদীপ বসু"। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-১১
  5. "চিরনিদ্রার দেশে কবি গৌতম বসু"। ২০২২-০৭-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-১১
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.