গোয়েন্দা

গোয়েন্দা (ইংরেজি: Detective) হচ্ছেন একজন পেশাদার অনুসন্ধানকারী বা তদন্তকারী কর্মকর্তা। তিনি কোন পুলিশ বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য অথবা নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তি কর্তৃক মনোনীত গুপ্তচর হতে পারেন। সাম্প্রতিককালে গোয়েন্দাকে 'ব্যক্তিগত গোয়েন্দা' বা 'ব্যক্তির অন্তঃদৃষ্টি' নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে। অনানুষ্ঠানিকভাবে, বিশেষত কথাসাহিত্যে একজন গোয়েন্দাকে নিবন্ধন বা লাইসেন্সধারী কিংবা লাইসেন্সবিহীন অবস্থায় দেখা যায়। শার্লক হোমস এবং ইন্সপেক্টর ক্লোসিও অত্যন্ত জনপ্রিয় গোয়েন্দা ঔপন্যাসিক হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত নাম।

গোয়েন্দার জিজ্ঞাসাবাদে মেয়ের ল্যানস্কি

গোয়েন্দার প্রধান কাজই হচ্ছে কোন গুরুতরভাবে লুক্কায়িত অপরাধ বা অমিমাংসিত ঐতিহাসিক অপরাধের ঘটনাপ্রবাহ তদন্তের স্বার্থে তৃণমূল পর্যায় থেকে সংগ্রহ করে সংবাদের পিছনের সংবাদ জনসমক্ষে তুলে ধরা। এছাড়াও, গোয়েন্দা হিসেবে একজন ব্যক্তি 'ডিটেকটিভ' হিসেবেও সকলের কাছে পরিচিতি পেয়ে থাকেন।

বৈশিষ্ট্যাবলী

সাধারণ অর্থে যিনি গুপ্তচর বৃত্তির মাধ্যমে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন, তিনি 'গোয়েন্দা' নামে পরিচিত।[1] সাধারণত একজন সফল ও স্বার্থক গোয়েন্দাকে নিম্নবর্ণিত বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হতে হয়

  • অপরাধ বা রহস্যজনক কর্মকাণ্ড মনোঃবিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রমাণ করবেন।
  • রহস্যমূলক কর্মকাণ্ডে সর্বক্ষণ সম্পৃক্ত থেকে তীক্ষ্ণ ও শাণিত মেধা প্রয়োগ করবেন।
  • উপস্থিত বিচার-বুদ্ধি যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি বা বস্তুকে জনসমক্ষে উপস্থাপন করবেন।
  • নির্দোষ ব্যক্তি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত বা দোষী না হন এবং প্রকৃত দোষীকে আইনে সোপর্দ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
  • অপরাধী বা ঘটনার ছোট্ট ক্লু, সঙ্কেত বা চিহ্নের সাহায্যে অপরাধের গতি-প্রকৃতি ও অবস্থান চিহ্নিত করবেন।

প্রেক্ষাপট

কিছু কিছু পুলিশ অধিদপ্তরে 'গোয়েন্দা' পদে সরাসরি লোক নিয়োগ করা হয় না। গোয়েন্দাকে ঐ পদে নিয়োগের জন্যে নির্দিষ্ট কিছু শর্তাবলী পূরণ করতে হয়। তন্মধ্যে লিখিত পরীক্ষা একটি অন্যতম মানদণ্ড। পুলিশ কর্মকর্তাকে এ যোগ্যতা অর্জনের মাধ্যমেই কেবল গোয়েন্দা পদে নিয়োগ দেয়া হয়।

ব্রিটিশ আইন অনুসারে, পুলিশ গোয়েন্দাকে কমপক্ষে দু'বছর পোশাকধারী বা উর্দি পরিহিত কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করতে হয়। এরফলে তিনি 'অপরাধী তদন্ত অধিদপ্তরে' যোগদানের জন্য আবেদন করার যোগ্যতা অর্জন করেন। গোয়েন্দা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবার জন্য যুক্তরাজ্যের পুলিশবাহিনীতে চাকরির পাশাপাশি অপরাধ তদন্ত উন্নয়ন পরিকল্পনার অধীনে 'জাতীয় তদন্ত পরীক্ষায়' অবশ্যই কৃতকার্য হতে হয়।

অনেক পুলিশ অধিদপ্তরে গোয়েন্দা হিসেবে স্নাতক উত্তীর্ণ সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে পোশাকবিহীন অবস্থায় সরাসরি নিয়োগ দেয়া হয়। অনেকের মতে, গোয়েন্দারা সম্পূর্ণ পৃথক ধরনের চাকরি করেন ও পৃথক ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হয়। গোয়েন্দাদের মাঝে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ধরনের গুণাবলী, সক্ষমতা, যোগ্যতার অধিকারী হতে হয় যা পোশাক বা উর্দিধারী পুলিশ কর্মকর্তাদের চেয়ে পৃথক।

অপরদিকে সমালোচকেরা বলেন যে, কোনরূপ পূর্ব অভিজ্ঞতা বা পুলিশ বিভাগে চাকরি না করে একজন গোয়েন্দা সম্পূর্ণরূপে সফলকাম হতে পারেন না। বরঞ্চ আদর্শ পুলিশী কার্যক্রমে তাদের কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত সৃষ্টিসহ নানাবিধ সমস্যা তৈরী হয়। পোশাক পরিহিত পুলিশ সহকর্মীদের সাথে কাজ করতে গিয়ে তারা কাজের পরিবেশকে আরো কঠিন ও দুরূহ করে তোলেন।

গোয়েন্দাকে তার অবস্থান ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়। তন্মধ্যে - তদন্তকার্যে নীতিবোধ, চর্চা এবং প্রক্রিয়া রয়েছে। সাক্ষাৎকার ও প্রশ্নমূলক দৃষ্টিভঙ্গী; অপরাধ আইন ও প্রক্রিয়া, প্রচলিত আইনে গ্রেফতার, অনুসন্ধান ও মালামাল জব্দ, ওয়ারেন্ট ও প্রমাণ; পুলিশ বিভাগে রক্ষিত নথিপত্র ও প্রতিবেদন সম্পর্কে ধারণা; আদালতে প্রমাণ বা স্বাক্ষ্য হিসেবে পুলিশ বিভাগের নীতিমালা, চর্চা ও উদ্দেশ্য; এবং পুলিশ বিভাগের পদ্ধতি ও স্বাক্ষ্য অন্যতম। সাধারণতঃ উভয়ক্ষেত্রেই পুলিশ কর্মকতা এবং গোয়েন্দাকে প্রশ্নমূলক দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে অগ্রসর হতে হয়। কিন্তু গোয়েন্দাকে আরো বেশি প্রতিকূল পরিবেশের মুখোমুখি ও মোকাবেলা করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হয়।

বেসরকারী পর্যায়ে গোয়েন্দাকে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিবন্ধনের মাধ্যমে অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু এর জন্যে তাকে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা এবং অপরাধীর অতীত ইতিহাস সম্পর্কেও সম্যক অবগত হতে হয়। কয়েকটি রাজ্যে শ্রেণীকক্ষে প্রশিক্ষণ, সঠিকভাবে ও দক্ষতার সাথে অস্ত্র পরিচালনাসহ অভিজ্ঞতার প্রয়োজনকে গুরুত্ব প্রদান করে।

সংস্থা

প্রশিক্ষিত গোয়েন্দাদেরকে একত্রিত করে গঠিত 'গোয়েন্দা শাখা' আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে সামরিক বাহিনী কিংবা পুলিশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শাখা। অভ্যন্তরীণ ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা রক্ষায় এ শাখার ভূমিকা অপরিসীম। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অন্যান্য দল কিংবা বিভাগের তুলনায় সবচেয়ে বড় ও মর্যাদাসম্পন্ন শাখা হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে গোয়েন্দা শাখাকে।

লুক্কায়িত, অমিমাংসিত বা গোপনীয় অপরাধের গুরুত্ব অনুসারে গোয়েন্দা শাখাকে বিশেষায়িত করে অনেকগুলো স্তরে বিভাজন করা হয়। সেগুলো হলো - নরহত্যা; দস্যুতা বা ডাকাতি; সংগঠিত অপরাধ; নিখোঁজ; প্রতারণা; মাদকদ্রব্য; যৌন হয়রানী; কম্পিউটার অপরাধ; অভ্যন্তরীণ সহিংসতা; নজরদারী ইত্যাদি।

পরিচয়

একজন ব্যক্তি যখন গোয়েন্দা হিসেবে কর্মরত থাকেন তখন তিনি একটি আইডেন্টি কার্ড সঙ্গে রাখেন। প্রয়োজনে কেউ তার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে প্রশ্নবিদ্ধ করলে নিজ পরিচয় প্রদান করেন। সাধারণতঃ গোয়েন্দা বা ডিটেকটিভ পদবীধারী ব্যক্তির নামের পূর্বে ডিটেকটিভ লেখা থাকে যা সংক্ষেপে 'ডিট (Det), নামে পরিচিতি পায়।

কার্যধারা

মাঠ পর্যায়ে

গোয়েন্দা কার্য পরিচালনার জন্য একজন গোয়েন্দাকে বিভিন্ন ধরনের ব্যাপক ও বিস্তৃত চিন্তাধারার অধিকারী হতে হয়। নিত্য-নতুন কলা-কৌশল, ছলনার আশ্রয় গ্রহণ করতে হয় তাকে। এছাড়াও, অধিকাংশ মামলা কার্য সম্পূর্ণকরণের জন্য নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর তদন্তকার্য ও প্রত্যক্ষদর্শী বা স্বাক্ষীদের উপযুক্ত স্বাক্ষ্য-প্রমাণাদির উপর নির্ভর করতে হয়, যা বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তদন্তকার্য পরিচালনার পাশাপাশি যদি গোয়েন্দা কার্যক্রমে চরদের বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সম্পৃক্ত করা হয়, তাহলে অতি দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি করা সম্ভবপর। চরগণ ব্যক্তির সাথে নিরবচ্ছিন্ন কিংবা মাঝে মাঝে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকেন। গোয়েন্দারা পরবর্তীতে চরদের কাছ তাদের মধ্যকার কথাবার্তা থেকে এ সংক্রান্ত বিষয়াদি সম্পর্কে জানেন ও তথ্য সংগ্রহ করেন; কিন্তু তিনি তা কোথাও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেন না। পরবর্তীতে গোয়েন্দারা পর্যাপ্ত প্রমাণ সংগ্রহ এবং তথ্য সংরক্ষণের উপরই সম্ভাব্য ব্যক্তি বা ইপ্সিত বস্তুর অবস্থান নিশ্চিত করেন।

ফৌজদারী তদন্তের কার্যকলাপগুলো খতিয়ে দেখতে বা তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে পুলিশ। ফৌজদারী তদন্তে দ্রুতবেগে গাড়ী চালানো, মাতলামী করে গাড়ী চালানো, চৌর্য্যবৃত্তি, হত্যাকাণ্ড, জালিয়াতি, প্রতারণা ইত্যাদি বিষয়াবলী অন্তর্ভুক্ত। যখন পুলিশ তদন্ত কার্যের সমাপণী ঘোষণা করেন, তখন তারা কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন।

কোন কারণে ফৌজদারী তদন্তে একজন গোয়েন্দার মনে যদি সন্দেহজনক কোন কিছুর উদ্রেক হয়, তাহলে তিনি স্বাক্ষ্য-প্রমাণাদি সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এর মাধ্যমেই তিনি আদালতের সম্মুখে পর্যাপ্ত স্বাক্ষ্য-প্রমাণাদি উপস্থাপন করেন।

ময়না তদন্ত

সাধারণতঃ মৃতদেহের শারীরিক বা দৈহিক বৈশিষ্ট্য জানার জন্য ময়না তদন্তের প্রয়োজন পড়ে। বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি জেলায়ই ময়না তদন্তের ব্যবস্থা রয়েছে। ময়না তদন্তের মাধ্যমেও একটি মামলা সুচারুরূপে নিষ্পত্তি হওয়া সম্ভব যা গোয়েন্দাদের কার্যক্রম এবং তদন্তের অন্যতম প্রধান মাধ্যম ও হাতিয়ার হিসেবে গণ্য করা হয়। আইন অনুযায়ী 'ফরেনসিক বিজ্ঞান' এমন একটি পদ্ধতি যা বিস্তারিত ও বিজ্ঞানসম্মতভাবে যে-কোন ব্যক্তির প্রশ্নের ব্যাখ্যা বা উত্তর প্রদান করা সম্ভব হয়ে থাকে। এ পদ্ধতির মাধ্যমে অপরাধ অথবা দেওয়ানী মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভবপর।

অতীত ইতিহাস

অনেক ক্ষেত্রে গোয়েন্দারা সরকারী এবং ব্যক্তিগত নথিপত্র ঘেঁটে অপরাধ বা রহস্য সম্পর্কীয় বিষয়কে পটভূমিকায় নিয়ে ও তথ্য সংযোগ করে অগ্রসর হন। পুলিশ বাহিনীর গোয়েন্দারা শুধুমাত্র নথিপত্র কিংবা ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাঁপের সাহায্যে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে থাকেন। পুলিশ কর্তৃপক্ষ গুরুতর অপরাধী থেকে শুরু করে সামান্য অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তির জন্যেও 'ব্যক্তিগত নথি' খুলে রক্ষণাবেক্ষন করে থাকেন। এরফলে, গোয়েন্দারা অপরাধীর গ্রেফতার হওয়া সংক্রান্ত বিবরণ, ব্যক্তিগত তথ্যাবলী, ছবি ইত্যাদির সাহায্যে নির্দিষ্ট ব্যক্তির গতিবিধি অনুসন্ধানসহ নজরদারী করতে পারেন। এছাড়াও, অপরাধী যদি মোটর সাইকেলের মালিক হন, তাহলে ড্রাইভিং লাইসেন্সের তথ্যাবলীও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

ওয়ারেন্ট সাথে নিয়ে পুলিশের গোয়েন্দারা ক্রেডিট কার্ডের রেকর্ড এবং ব্যাংক বিবৃতির মতো বিষয়গুলোও অনুসন্ধান করে থাকেন। হোটেলের নিবন্ধন তথ্য, ক্রেডিট প্রতিবেদন, আনসার মেশিনের বার্তা এবং ফোনের কথোপকথনও এর অন্তর্ভুক্ত।

অবদান

দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে গোয়েন্দা বা গোয়েন্দা দল প্রয়োজনে জীবনবাজী রেখে নিজ রাষ্ট্রের নির্দেশনা ও সহযোগিতায় অন্য দেশে অবস্থান করেন যা আইনের পরিভাষায় 'গোয়েন্দাগিরি' বা 'গুপ্তচরবৃত্তি' নামে পরিচিত।

আধুনিক বিশ্বে গোয়েন্দা তৎপরতার উপরই একটি দেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক স্বার্থ লুকিয়ে রয়েছে। কখনো তারা সাফল্য পান ও নিজ রাষ্ট্রে প্রয়োজনীয় তথ্য কিংবা উপকরণ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রেরণ দেশের স্বার্থ রক্ষা করে থাকেন। আবার ব্যর্থতায় তাদের জীবনহানী ঘটে কিংবা কারাগারে ঠাঁই হয় বছরের পর বছর ধরে। অনেক সময় গোয়েন্দাগিরির অভিযোগে দু'দেশের মধ্যেকার পারস্পরিক চমৎকার ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট হতে দেখা যায়। সৌভাগ্যবশতঃ দেশগুলোর পারস্পরিক বন্দী বিনিময় চুক্তির আওতায় কদাচিৎ কেউ কেউ মুক্তিলাভ করেন। গোয়েন্দাদের দক্ষ করে তুলতে নির্দিষ্ট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে কিংবা প্রশিক্ষণের জন্য উন্নত দেশে প্রেরণ করা হয়। অপরাধী সনাক্তকরণে তারা বহুবিধ নিত্য-নতুন কৌশল ও পন্থা গ্রহণ করেন।

বাংলা সাহিত্যে

কিশোর, তরুণদেরকে উদ্দীপ্ত করতে গোয়েন্দা(দের) রোমাঞ্চকর অনুসন্ধান প্রক্রিয়াকে ঘিরে মুদ্রণ আকারে প্রকাশিত হয়েছে। অনেক খ্যাতিমান লেখক, প্রকাশক বিভিন্নভাবে 'গোয়েন্দা উপন্যাস' প্রকাশ করে যথেষ্ট খ্যাতি ও সুনাম অর্জন করেছেন। সাধারণতঃ এতে তাদের সাফল্যগাঁথাকে প্রাধান্য দেয়া হয়। দলগত পর্যায়ে গোয়েন্দাদেরকে ঘিরে রচিত হয়েছে - তিন গোয়েন্দা, পাণ্ডব গোয়েন্দা, এমিলের গোয়েন্দা দল ইত্যাদি গোয়েন্দা কাহিনী সিরিজ। বাংলা সাহিত্যের মধ্যে গোয়েন্দা সিরিজ: ফেলুদা,কাকাবাবু ইত্যাদি। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গোয়েন্দা চরিত্র হলো ব্যোমকেশ বক্সী যার স্রষ্টা শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। তাকে গোয়েন্দা সিরিজের জনক বলা হয়। কাকাবাবুর স্রষ্টা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। ফেলুদার স্রষ্টা সত্যজিত রায়। এর মধ্যে বাঙালির প্রিয় চরিত্র হিসেবে বিবেচিত হয় ফেলুদা। ফেলুদার প্রথম দুটি চলচ্চিত্র তৈরী করেন স্বয়ং এর স্রষ্টা সত্যজিত রায়। চলচ্চিত্র দুটি:সোনার কেল্লা ও জয়বাবা ফেলুনাথ।

চলচ্চিত্র অঙ্গনে

গোয়েন্দাদের দক্ষতা, সমস্যা সমাধানে সক্ষমতা, কৌশল অবলম্বন, ব্যক্তিগত জীবন, ব্যর্থতা ইত্যাদির বিভিন্ন নিত্য-নতুন ধারা নিয়ে বিশ্বে অনেক চলচ্চিত্র, নাটক প্রদর্শিত হয়েছে। তন্মধ্যে - জেমস বন্ড বিশ্ব চলচ্চিত্র অঙ্গনে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। সাধারণতঃ এ ধারার সিনেমাগুলো চলচ্চিত্রকার ব্যতীত অন্য কোন লেখক, ঔপন্যাসিকের লেখা গল্প বা উপন্যাসকে অবলম্বন করে চলচ্চিত্র উপযোগী করা হয়।

অনেকগুলো চলচ্চিত্রে গোয়েন্দাকে প্রধান চরিত্র কিংবা অপ্রধান চরিত্র হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। বাংলা ভাষায় বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার হিসেবে সম্ভবতঃ সত্যজিৎ রায় সর্বাগ্রে এগিয়ে রয়েছেন। তিনি গোয়েন্দাদের ঘিরে অনেকগুলো চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন। তন্মধ্যে - চিড়িয়াখানা, জয় বাবা ফেলুনাথ তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান, সম্পাদনাঃ ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক ও শিবপ্রসন্ন লাহিড়ী, বাংলা একাডেমী, ঢাকা, ২০১০, পৃঃ ৩৭৩

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.