গোকুলচন্দ্র নাগ

গোকুলচন্দ্র নাগ (২৮ জুন ১৮৯৪ — ২৪ সেপ্টেম্বর ১৯২৫) একজন চিত্রশিল্পী, প্রখ্যাত 'কল্লোল' পত্রিকার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সহকারী সম্পাদক।[1]

গোকুলচন্দ্র নাগ
জন্ম(১৮৯৪-০৬-২৮)২৮ জুন ১৮৯৪
মৃত্যু২৪ সেপ্টেম্বর ১৯২৫(1925-09-24) (বয়স ৩১)
পেশালেখক ও সম্পাদক
পিতা-মাতামতিলাল নাগ (পিতা), কমলা দেবী (মাতা)

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন

গোকুলচন্দ্র নাগের জন্ম বৃটিশ ভারতের (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের) কলকাতায় ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দের ২৮ শে জুন। পিতা মতিলাল নাগ মাতা কমলা দেবী। আদি পৈত্রিক নিবাস ছিল বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরে। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ড. কালিদাস নাগ তার অগ্রজ। শৈশবেই মাতৃপিতৃহীন হয়ে মানুষ হন মাতুলালয়ে গোঁড়া ব্রাহ্ম পরিবারের আবহাওয়ায়। অতি অল্প বয়সে চিত্রাঙ্কন ও সাহিত্য চর্চা শুরু করেন। কৃতি ফটোগ্রাফার ছিলেন তিনি।

কর্মজীবন

আর্ট স্কুল থেকে বেরিয়ে, গোকুলচন্দ্র প্রত্নতত্ববিদ রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজে নিযুক্ত হয়ে পুনেতে চলে যান| কিন্তু বছর খানেক বাদে তিনি সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বম্বের এক সলিসিটর দম্পতির পরিচর্চায় সুস্থ হয়ে উঠলেও কাজ করার অবস্থায় ছিলেন না। সুতরাং ফিরে আসেন কলকাতায় বিধবা দিদির কাছে। সাথে পেলেন অকৃত্রিম বন্ধুবর দীনেশরঞ্জন দাশকে। দুজনে মিলে যৎসামান্য অর্থে নতুন লেখকদের নিয়ে ১৩৩০ বঙ্গাব্দের পয়লা বৈশাখ প্রকাশ করেন 'কল্লোল' মাসিক সাহিত্য পত্রিকা। পত্রিকায় প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়ে নতুন ধারা প্রবর্তন করেন সম্পাদক দীনেশরঞ্জন দাশ। এক ঝাঁক নবীনদের রচনায় সমৃদ্ধ সেই পত্রিকা লেখক ও পাঠক মহলে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টিকারী বাংলা সাহিত্যের সেই সময় 'কল্লোল যুগ' হিসাবে চিহ্নিত হয়। গোকুলচন্দ্র সহকারী সম্পাদক হিসাবে থাকলেও আসল কর্ণধার ছিলেন কিন্তু তিনিই। অর্থক্লিষ্ট পত্রিকাকে বাঁচাতে বিজ্ঞাপন সংগ্রহ, গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি, মুদ্রণ কার্যের তদারকি গোকুলচন্দ্রই করতেন। বন্ধুবর দীনেশরঞ্জন দাশের ন্যায় তিনি 'সোল অফ এ শ্লেভ' ছবির প্রযোজনায় সাহায্য ও তাতে অভিনয় করেছিলেন। এসবের পাশাপাশি তিনি সাহিত্যচর্চা বজায় রেখেছেন। তার রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল -

  • 'রূপরেখা' (কথিকা সংকলন) - ১৯২২
  • 'রাজকন্যা ও পরীস্থান' (অনুবাদ রচনা) - ১৯২৪
  • 'মায়ামুকুল' ছোটগল্প সংকলন) - ১৯২৭
  • 'পথিক' (উপন্যাস) - ১৯২৫
  • ঝড়ের দোলা[2]

ইউরোপ হতে অগ্রজ কালিদাস নাগ শিক্ষান্তে দেশে ফিরলে তিনি হাওড়ার শিবপুরের বাড়িতে চলে যান কিন্তু আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থ অবস্থাতেই চলে তার সাহিত্য রচনা। শেষে যক্ষায় আক্রান্ত হয়ে পড়লেন গোকুলচন্দ্র। 'কল্লোল'-এর বন্ধুরা প্রায়ই আসতেন শিবপুরের বাড়ীতে। গভীর সহমর্মিতায় আপ্লুত সাহিত্যিক পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায় রোজ আসতেন তার কাছে। ডাক্তারের পরামর্শে গোকুলকে শেষে দার্জিলিঙে নিয়ে যাওয়া হল।

মৃত্যু

১৯২৫ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় এবং অবশেষে ২৪ শে সেপ্টেম্বর তিনি দার্জিলিংঙে মাত্র ৩১ বৎসর বয়সে প্রয়াত হন।[3]

তথ্যসূত্র

  1. সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬, পৃষ্ঠা ১৯২, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. "গোকুলচন্দ্র নাগ - উইকিসংকলন একটি মুক্ত পাঠাগার"bn.wikisource.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-১০
  3. চট্টগ্রাম, দৈনিক প্রিয় (২০২০-০৬-২৮)। "গোকুলচন্দ্র নাগ"দৈনিক প্রিয় চট্টগ্রাম (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-১০
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.