গিনি উপসাগর

গিনি উপসাগর গ্যাবনের কেপ লোপেজ থেকে উত্তর এবং পশ্চিমে লাইবেরিয়ার কেপ পালমাস পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এটি ক্রান্তীয় আটলান্টিক মহাসাগরের উত্তর-পূর্বতম অংশে অবস্থিত।[1] নিরক্ষ রেখা এবং মূল মধ্যরেখার ছেদবিন্দুতে (শূন্য ডিগ্রি অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমাংশ) উপসাগরটি অবস্থিত।

গিনি উপসাগর
গিনি উপসাগরে মানচিত্রে আগ্নেয়গিরির ক্যামেরুন শৃঙ্খল আগ্নেয়গিরিমালার দ্বারা সৃষ্ট দ্বীপপুঞ্জের শৃঙ্খল দেখা যাচ্ছে।
স্থানাঙ্ক০°০′ উত্তর ০°০′ পূর্ব
স্থানীয় নামফরাসি: গল্ফ দে গিনি
পর্তুগিজ: গল্ফ দা গিনি {{স্থানীয় নামের পরীক্ষক}} ত্রুটি: একাধিক নামের জন্য তালিকাযুক্ত মার্কআপ প্রত্যাশিত (সাহায্য)
নদীর উৎসনাইজার
মহাসাগর/সমুদ্রের উৎসআটলান্টিক মহাসাগর
অববাহিকার দেশসমূহলাইবেরিয়া, আইভরি কোস্ট, ঘানা, টোগো, বেনিন, নাইজেরিয়া, ฃক্যামেরুন (আমবাজোনিয়া), বিষুবীয় গিনি, গ্যাবন, সাঁউ তুমি ও প্রিন্সিপি, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, অ্যাঙ্গোলা
পৃষ্ঠতল অঞ্চল২৩,৫০,০০০ কিমি (৯,১০,০০০ মা)
দ্বীপপুঞ্জবায়োকো, সাঁও তোমে, প্রিন্সিপে, ইলহেউ বোম বোম, ইলহেউ ক্যারোকো, এলোবে গ্র্যান্দে, এলোবে চিকো, আন্নোবোন, করিসকো, বোবোওয়াসি

গিনি উপসাগরে বহু নদী পতিত হয়েছে, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাইজার এবং ভোল্টা নদী। উপসাগরের উপকূলরেখার মধ্যে আরও রয়েছে বেনিন উপসাগর এবং বন্নি উপসাগর

নাম

গিনি নামের উৎস হিসাবে এই অঞ্চললের একটি এলাকাকে মনে করা হয়, যদিও সুনির্দিষ্ট বিষয়টি বিতর্কিত। বোভিল (১৯৯৫) একটি বিস্তারিত বিবরণ দেয়:[2]

গিনি নামটি সাধারণত মাগরেবে পর্তুগিজদের দখল করা ঘানা নামটির একটি বিকৃত রূপ বলে মনে করা হয়। লেখক এটিকে অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন। গিনি নামটি মাগরেব এবং ইউরোপ উভয় স্থানে প্রিন্স হেনরির সময়কাল থেকেই প্রচলিত ছিল। উদাহরণস্বরূপ, জেনোভার মানচিত্রকার জিওভান্নি দি ক্যারিগানোর ১৩২০ সালের মানচিত্র, তিনি সিজিলমাসে [উত্তর আফ্রিকার প্রাচীন বাণিজ্য শহর] তার স্বদেশী-সহকর্মী থেকে আফ্রিকা সম্পর্কে তথ্য পেয়েছিলেন, আমরা গুনুইয়া এবং ১৩৭৫ সালের কাতালান মানচিত্রে গিনিয়া হিসাবে দেখতে পাই। লিওর একটি উদ্ধৃতি [আফ্রিকানীয়] (তৃতীয় খন্ড, ৮২২) গিনির প্রতি ইঙ্গিত করে যে এটি জেন্নে [নাইজার নদীর তীরে মধ্য মালিতে অবস্থিত ২,০০০ বছরের পুরানো একটি শহর] -এর বিকৃত রূপ, এটি ঘানার চেয়ে কম বিখ্যাত তবে বহু শতাব্দী ধরে মাগরেব অঞ্চলে একটি বৃহৎ বাজার এবং শিক্ষার একটি পিঠস্থান হিসাবে খ্যাতি পেয়েছে। প্রাসঙ্গিক উদ্ধৃতি: "ঘিনি রাজ্য ... আমাদের জাতি জেনোভার বণিকগণ দ্বারা আখ্যায়িত করা হয়েছে, এর প্রাকৃতিক বাসিন্দারা একে গেন্নি এবং পর্তুগাল এবং ইউরোপের অন্যান্য লোকেরা একে ঘিনি বলে।"। তবে এটি আরও সম্ভাব্য বলে মনে হয় যে গিনি আগুইনাউ থেকে এসেছে, নেগ্রোর ক্ষেত্রে বারবার। মেরাকেচ [দক্ষিণ-পূর্ব মরক্কোর শহর] এ দ্বাদশ শতাব্দীতে নির্মিত একটি ফটক রয়েছে, এটি বাব আগুইনাউ অর্থাৎ নিগ্রোর দরজা নামে পরিচিত দক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকা(ডেলাফোস, হাউট-সেনেগাল-নাইজার, দ্বিতীয় খন্ড, ২৭৭-২৭৮। উপকূলটিতে গিনি নামের আধুনিক প্রয়োগটি ৪৮১ সাল থেকে পাওয়া যায়। সে বছরে পর্তুগিজরা গোল্ড কোস্ট অঞ্চলে সাও জর্জি দা মিনা (বর্তমান কালের এলমিনা) নামে একটি দুর্গ তৈরি করেছিল এবং পোপ [দ্বিতীয় সিক্সটাস বা ইনোসেন্ট অষ্টম] তাদের রাজা দ্বিতীয় জনকে গিনির লর্ড হিসাবে নিজেকে আখ্যয়িত করার অনুমতি দিয়েছিল, এটি একটি পদবি যা রাজতন্ত্রের সাম্প্রতিক বিলুপ্তি পর্যন্ত টিকে ছিল।

"গিনি" নামটি পশ্চিম আফ্রিকার দক্ষিণ উপকূল, গিনি উপসাগরের উত্তরেও দেখা যায়, যা আগে "উচ্চ গিনি" নামে পরিচিত ছিল এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকার পশ্চিম উপকূল থেকে পূর্ব দিকে "নিম্ন গিনি" নামে পরিচিত ছিল। "গিনি" নামটি এখনও আফ্রিকার তিনটি দেশের নাম: গিনি, গিনি-বিসাউ এবং বিষুবীয় গিনি, পাশাপাশি মেলানেশিয়ার নিউ গিনি পাওয়া যায়।

ভূগোল

উপসাগরে পতিত হওয়া প্রধান নদী হচ্ছে নাইজার নদী

গিনি উপসাগরের ভৌগোলিক সীমার বিভিন্ন সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে; আন্তর্জাতিক পানিসম্পদ বিষয়ক সংস্থা গিনি উপসাগরের সীমানা চিহ্নিত করেছে এভাবে দক্ষিণ-পশ্চিমে "গিনির লোপেজ অন্তরীপ (০°৩৭′ দক্ষিণ ৮°৪৩′ পূর্ব) থেকে উত্তর-পশ্চিমে ইহলেউ গ্যাগো কৌতিনহো (ইলহেউ দাস রোলাস) (০°০১′ দক্ষিণ ৬°৩২′ পূর্ব) পর্যন্ত: এবং তারপর ইহলেউ গাগো কৌতিনহো থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে লাইবেরিয়ার পালমাস অন্তরীপ (৪°২২′ উত্তর ৭°৪৪′ পশ্চিম) পর্যন্ত।[1]

গিনি উপসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ

গিনি উপসাগরে বেশ কয়েকটি দ্বীপ রয়েছে, যার মধ্যে বৃহত্তমগুলো দক্ষিণপশ্চিম-উত্তরপূর্ব চেইনে অবস্থিত, এটি ক্যামেরুন আগ্নেয়গিরির চেইন দ্বারা গঠিত হয়েছে।

আন্নোবোন, যা পাগালু বা পিগালু নামেও পরিচিত, একটি দ্বীপ যা বিষুরীয় গিনির অংশ।

বোবোওয়াসি দ্বীপ গিনি উপসাগরের আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত একটি দ্বীপ, এটি ঘানার পশ্চিম অঞ্চলের অংশ ।

বায়োকো বিষুবীয় গিনির সার্বভৌমত্বের অধীনে গিনি উপসাগরে ক্যামেরুনের আম্বাজোনীয় অঞ্চলের একটি দ্বীপ

করিসকো বিষুবীয় গিনির অংশভুক্ত একটি দ্বীপ।

এলোবে গ্র্যান্দে এবং এলোবে চিকো বিষুবীয় গিনির অন্তর্ভুক্ত দুটি ছোট দ্বীপ।

সাঁও তোমে এবং প্রিন্সিপে (সরকারী নাম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রী সাঁও তোমে এবং প্রিন্সিপে) গিনি উপসাগরের একটি পর্তুগিজ ভাষী দ্বীপ রাষ্ট্র যেটি ১৯৭৫ সালে পর্তুগাল থেকে স্বাধীন হয়। এটি আফ্রিকার পশ্চিম নিরক্ষীয় উপকূলে অবস্থিত এবং দুটি দ্বীপ, সাঁও তোমে এবং প্রিন্সিপে নিয়ে গঠিত। দ্বীপগুলি পরস্পর প্রায় ১৪০ কিলোমিটার (৮৭ মাইল) দূরে অবস্থিত এবং গ্যাবনের উত্তর-পশ্চিম উপকূল থেকে যথাক্রমে প্রায় ২৫০ এবং ২২৫ কিলোমিটার (১৫৫ এবং ১৪০ মাইল) দূরে অবস্থিত। দুটি দ্বীপই মৃত আগ্নেয় পর্বতমালার অংশ। দক্ষিণের বিশাল আকারের সাঁও তোমে দ্বীপটি নিরক্ষরেখার ঠিক উত্তরে অবস্থিত।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "Limits of Oceans and Seas, Draft 4th Edition: North Atlantic Ocean and its Sub-Divisions"। International Hydrographic Organization। ২০০২। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০১৭
  2. Hale, Thomas A.। "From the Griot of Roots to the Roots of Griot: A New Look at the Origins of a Controversial African Term for Bard" (পিডিএফ)Oral Tradition। ২ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.