ক্ষারক
ক্ষারক এক শ্রেণির রাসায়নিক যৌগ যা হাইড্রোজেন আয়ন গ্রহণ করতে সক্ষম। যেমন ধাতুর অক্সাইড বা হাইড্রোক্সাইডসমূহ ক্ষার। জলে দ্রবণীয় ক্ষারক যা হাইড্রোক্সাইড আয়ন (OH−) প্রদান করে তাকে ব্রনস্টেড-লাউরি অম্ল-ক্ষার তত্ত্ব অনুযায়ী ক্ষার বলা হয়। ক্ষারকের অন্যান্য মতবাদ বা সংজ্ঞার্থের মধ্যে রয়েছে ইলেক্ট্রন জোড় দান, হাইড্রোক্সাইড আয়নের উৎস বা আরহেনিয়াস মতবাদ। এইসব রাসায়নিক যৌগ জলে দ্রবীভূত হয়ে হাইড্রোজেন আয়ন অবমুক্ত করে দ্রবণের pH এর মান প্রশম পানির চেয়ে বেশি অর্থাৎ ৭ এর বেশি করে। সবচেয়ে প্রচলিত ক্ষারকসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড, অ্যামোনিয়া।
রাসায়নিকভাবে অম্লের বিপরীতধর্মী পদার্থ হল ক্ষারক। অম্ল এবং ক্ষারকের মধ্যে বিক্রিয়াকে বলা হয় প্রশমন বিক্রিয়া। অম্ল এবং ক্ষারককে বিপরীতধর্মী হিসেবে বিবেচনা করা হয় কারণ অম্ল পানিতে হাইড্রোনিয়াম আয়নের ঘনমাত্রা বৃদ্ধি করে ; অপরদিকে ক্ষারক তা হ্রাস করে। ক্ষারক অম্লের সাথে প্রশমন বিক্রিয়া করে লবণ এবং পানি উৎপন্ন করে।
যেমন: Ca(OH)2(ক্ষারক) + H2SO4(এসিড) -------> CaSO4(লবণ) + 2H2O(পানি)।[1]
ক্ষার ও ক্ষারক
যেসব ক্ষারক পানিতে দ্রবণীয় তাদেরকে বলে ক্ষার ; পক্ষান্তরে যেসব ক্ষারক পানিতে অদ্রবনীয় তারা ক্ষারক হলেও ক্ষার নয়। তাই বলা হয় সকল ক্ষারক ক্ষার নয়, কিন্তু সকল ক্ষারই ক্ষারক।
ব্যবহার
ক্ষারকের কিছু ব্যবহার আছে। যেমন : ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড আমাদের ঘরবাড়ি হোয়াইট ওয়াশ করার জন্য ব্যবহার করে থাকি। আবার পানি ও ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড এর মিশ্রিত পেস্ট, যা লাইম ওয়াটার বা চুনের পানি নামে পরিচিত। লাইম ওয়াটার পোকামাকড় দমনে ব্যবহৃত হয়। গ্যাস্ট্রিক এর ওষুধ এন্টাসিড তৈরির মূল উপাদান ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রোক্সাইড। কোথাও যদি এসিডের পরিমাণ বেড়ে যায় তাহলে সেখানে ক্ষার দিলেই তা কমে যাবে।
তথ্যসূত্র
- Dr. Colin France, Acids and Alkali। "What is an Alkali?"। GCSE Chemistry।