ক্লেয়ার ব্লুম
প্যাট্রিশিয়া ক্লেয়ার ব্লুম সিবিই (জন্ম: ১৫ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৩১) হলেন একজন ইংরেজ অভিনেত্রী। তিনি ছয় দশকের বেশি সময় ধরে অভিনয়ের সাথে জড়িত। তিনি আ স্ট্রিটকার নেমড ডিজায়ার, আ ডল্স হাউজ ও লং ডেজ জার্নি ইনটু নাইট নাটকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বিখ্যাত, এবং তিনি প্রায় ষাটটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
ক্লেয়ার ব্লুম | |
---|---|
জন্ম | প্যাট্রিশিয়া ক্লেয়ার ব্লুম ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৩১ |
মাতৃশিক্ষায়তন | সেন্ট্রাল স্কুল অব স্পিচ অ্যান্ড ড্রামা |
পেশা | অভিনেত্রী |
কর্মজীবন | ১৯৪৮–বর্তমান |
দাম্পত্য সঙ্গী | রড স্টাইগার (বি. ১৯৫৯; বিচ্ছেদ. ১৯৬৯) হিলার্ড এলকিন্স (বি. ১৯৬৯; বিচ্ছেদ. ১৯৭২) ফিলিপ রোথ (বি. ১৯৯০–১৯৯৫) |
সন্তান | আনা স্টাইগার |
যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইংল্যান্ডে শৈশব কাটানো ব্লুম নাট্য বিষয়ে পড়াশুনা করেন এবং অভিনয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ষোল বছর বয়সে তিনি লন্ডনের মঞ্চে অভিনয় শুরু করেন এবং অচিরেই তিনি বেশ কয়টি শেকসপিয়রীয় নাটকে অভিনয় করেন। যার মধ্যে রয়েছে হ্যামলেট, এতে তিনি রিচার্ড বার্টনের বিপরীতে ওফেলিয়া চরিত্রে অভিনয় করেন। বার্টনের সাথে তার প্রথম প্রণয়ও হয়েছিল। রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট নাটকে তার জুলিয়েট চরিত্রে অভিনয়ের বিষয়ে সমালোচক কেনেথ টাইনান লিখেন, "এটি ছিল আমার দেখা সেরা জুলিয়েট।" আ স্ট্রিটকার নেমড ডিজায়ার নাটকে ব্লাঞ্চ দ্যুবোয়া চরিত্রে অভিনয়ের পর নাট্যকার টেনিসি উইলিয়ামস উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেন, "আমি নিজেকে ক্লেয়ার ব্লুমের ব্যাপারে পাগল বলে ঘোষণা দিলাম।"
১৯৫২ সালে বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক চার্লি চ্যাপলিন ব্লুমকে আবিষ্কার করেন। তিনি তার লাইমলাইট চলচ্চিত্রে তার সহ-অভিনেত্রী হিসেবে বেশ কয়েক মাস যাবত "সৌন্দর্য, প্রতিভাবান ও আবেগপূর্ণ" একজন অভিনেত্রীর খোঁজ করছিলেন। এটি ছিল ব্লুমের চলচ্চিত্র অভিনয়ে অভিষেক এবং এর মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র তারকা হয়ে ওঠেন। তার দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি রিচার্ড বার্টন, লরন্স অলিভিয়ে, জন গিলগুড, পল স্কোফিল্ড, রাফ রিচার্ডসন, ইয়ুল ব্রাইনার, জর্জ সি. স্কট, জেমস ম্যাসন, পল নিউম্যান, ও রড স্টাইগারদের মত অভিনেতাদের বিপরীতে কাজ করেন। তিনি পরবর্তীতে স্টাইগারকে বিয়েও করেন।
২০১০ সালে ব্লুম দ্য কিংস স্পিচ চলচ্চিত্রে রানী ম্যারি চরিত্রে অভিনয় করেন। বর্তমানে তাকে ব্রিটিশ চলচ্চিত্রসমূহে দেখা যায়। নাটকে অবদানের জন্য ২০১৩ সালে তাকে কমান্ডার অব দি অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (সিবিই) পদে ভূষিত করা হয়।
প্রারম্ভিক জীবন
প্যাট্রিশিয়া ক্লেয়ার ব্লুম ১৯৩১ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি মিডলসেক্সের ফিঞ্চলিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতা এলিজাবেথ (জন্মনাম: গ্রিউ) এবং পিতা এডওয়ার্ড মাক্স ব্লুম। মাক্স ব্লুম বিক্রয়কর্মীর কাজ করতেন।[1] তার পিতামহ ও পিতামহীর নাম ছিল ব্লুমেন্থাল এবং তার মাতামহ ও মাতামহীর নাম ছিল গ্রাভিৎজ্কি, তারা রাশিয়ার (বর্তমান বেলারুশ, পূর্ব ইউরোপ) গ্রন্দো অঞ্চলের বাইটেনের ইহুদি অভিবাসী ছিল।[2][3]
ব্লুম ব্রিস্টলের ব্যাডমিন্টন স্কুলে মাধ্যমিক শ্রেণিতে পড়াশুনা করেন। কৈশোরে তিনি লন্ডনের গিল্ডহল স্কুলে এইলিন থর্নডিকের অধীনে মঞ্চ অভিনয় বিষয়ে পড়াশুনা করেন, এবং তৎকালীন লন্ডনের রয়্যাল আলবার্ট হলের সেন্ট্রাল স্কুল অব স্পিচ অ্যান্ড ড্রামাতে এলসি ফোরার্টির অধীনে তার পড়াশুনা চালিয়ে যান।[4]
১৯৪০ সালে জার্মানরা লন্ডনে বোমাবর্ষণ শুরু করলে, তার পরিবার তাদের খুব কাছে বোমার আক্রমণ থেকে রেহাই পায়। তিনি এবং তার ভাই জনকে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানো হয় এবং পরবর্তীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের চাচার কাছে পাঠানো হয়। তিনি এই প্রসঙ্গে বলেন, "১৯৪১ সালে আমার বয়স তখন ১০, জনের তখন প্রায় ছয় বছর বয়স। আমাদের গ্লাসগো থেকে একটি জাহাজে করে নিরাপদ স্থানে পৌঁছানোর জন্য যাত্রা শুরু করি।"[5] ফ্লোরিডায় অবস্থানকালে ব্রিটিশ ওয়ার রিলিফ সোসাইটি তাকে বিনোদন প্রদানের মাধ্যমে তহবিল জোগাড়ের জন্য বলে, এবং তিনি কয়েক সপ্তাহ এই কাজ করেন।[6] ব্লুম, তার মা ও ভাইয়ের সাথে ইংল্যান্ডে ফেরার পূর্বে আরও ১৮ মাস নিউ ইয়র্কে রয়ে যান। তার মা তার বিশতম জন্মদিন উপলক্ষ্যে তাকে ব্রডওয়ের নাটক থ্রি সিস্টার্স দেখাতে নিয়ে গেলে, নিউ ইয়র্কে থাকাকালীনই তিনি অভিনেত্রী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এরপর থেকে আমি শুধু মঞ্চে যাওয়ার কথা ভাবতাম এবং চেখভের নাটকে অভিনয়ের কথা ভাবতাম।[7]
ব্লুমের ভাই জন ব্লুম একজন চলচ্চিত্র সম্পাদক।[8]
তথ্যসূত্র
- "Claire Bloom Biography (1931–)"। ফিল্ম রেফারেন্স (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮।
- Bloom 1998, পৃ. ১–২।
- Bloom, Nate (জানুয়ারি ২১, ২০১১)। "Jewish Stars 1/21" (ইংরেজি ভাষায়)। ক্লিভল্যান্ড জিউশ নিউজ। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮।
- V&A, Theatre and Performance Special Collections, Elsie Fogerty Archive, THM/324
- Bloom 1998, পৃ. ২৬।
- Bloom 1998, পৃ. ৩০।
- Bloom 1998, পৃ. ৩৬।
- Hubbard, Kim (২৮ অক্টোবর ১৯৯৬)। Contributed to by Nina Biddle। "Life with Portnoy: Claire Bloom Has a Few Complaints of Her Own"। পিপল। 46 (18)। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮।
She and her younger brother John (now 60 and a film editor) were closer to their mother
গ্রন্থপঞ্জী
- Bloom, Claire (এপ্রিল ১৯৯৮)। Leaving a Doll's House: A Memoir (ইংরেজি ভাষায়)। ব্যাক বে বুকস। আইএসবিএন 978-0316093835।