কোর্টনি ওয়ালশ

কোর্টনি অ্যান্ড্রু ওয়ালশ, ওজে (ইংরেজি: Courtney Andrew Walsh; জন্ম: ৩০ অক্টোবর, ১৯৬২) জামাইকার কিংস্টনে জন্মগ্রহণকারী খ্যাতিমান ও সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

কোর্টনি ওয়ালশ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামকোর্টনি অ্যান্ড্রু ওয়ালশ
জন্ম (1962-10-30) ৩০ অক্টোবর ১৯৬২
কিংস্টন, জামাইকা
উচ্চতা ফুট ৫.৫ ইঞ্চি (১.৯৭ মিটার)[1]
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট
ভূমিকাবোলার, অধিনায়ক, দল নির্বাচক[2]
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৮৩)
৯ নভেম্বর ১৯৮৪ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট১৯ এপ্রিল ২০০১ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৪৫)
১০ জানুয়ারি ১৯৮৫ বনাম শ্রীলঙ্কা
শেষ ওডিআই১১ জানুয়ারি ২০০০ বনাম নিউজিল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৮১/৮২-২০০০/০১জামাইকা
১৯৮৪-১৯৯৮গ্লুচেস্টারশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ১৩২ ২০৫ ৪২৯ ৪৪০
রানের সংখ্যা ৯৩৬ ৩২১ ৪৫৩০ ১৩০৪
ব্যাটিং গড় ৭.৫৪ ৬.৯৭ ১১.৩২ ৮.৭৫
১০০/৫০ ০/০ ০/০ ০/৮ ০/০
সর্বোচ্চ রান ৩০* ৩০ ৬৬ ৩৮
বল করেছে ৩০০১৯ ১০৮২২ ৮৫৪৪৩ ২১৮৮১
উইকেট ৫১৯ ২২৭ ১৮০৭ ৫৫১
বোলিং গড় ২৪.৪৪ ৩০.৪৭ ২১.৭১ ২৫.১৪
ইনিংসে ৫ উইকেট ২২ ১০৪
ম্যাচে ১০ উইকেট - ২০ -
সেরা বোলিং ৭/৩৭ ৫/১ ৯/৭২ ৬/২১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২৯/– ২৭/– ১১৭/– ৬৮/–
উৎস: ক্রিকইনফো, ৭ জুলাই ২০১৭

১৯৮৪ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের ফাস্ট বোলাররূপে প্রতিনিধিত্ব করেন। এছাড়াও, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলকে ২২টি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ১৯৯০-এর দশকে দলীয় সঙ্গী কার্টলি অ্যামব্রোসের সাথে বোলিং উদ্বোধনে নেতৃত্ব দিয়ে বেশ কয়েকবছর দূর্দান্ত নৈপুণ্য প্রদর্শনে স্মরণীয় হয়ে আছেন। ২০০০ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত সর্বাধিক ৫১৯ টেস্ট উইকেট সংগ্রহের বিশ্বরেকর্ড ধারণ করেছিলেন।[3]

খেলোয়াড়ী জীবন

১৯৭৯ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন সময়ে ইনিংসে ১০ উইকেট নিয়ে খ্যাতির শিখরে প্রবেশ করেন ওয়ালশ। তিন বছর পর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৯৮৪ সালে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে গ্লুচেস্টারশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবে প্রথমবারের মতো খেলেন এবং ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত দলের প্রধান চালিকাশক্তি ছিলেন তিনি।

খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুতে ওয়ালশ স্টক বোলার হিসেবে ছিলেন। ম্যালকম মার্শাল, জোয়েল গার্নার ও পরবর্তীকালে অ্যামব্রোসের বোলিং আক্রমণের সময় তাকে পরবর্তীতে বোলিং করতে হতো। কিন্তু মার্শালের অবসরপ্রাপ্তির ফলে গার্নারের সাথে উদ্বোধনী বোলিং জুটিতে আসেন ওয়ালশ। দীর্ঘ দূরত্ব থেকে বোলিংয়ে আসতেন ছয় ফুট ছয় ইঞ্চি দীর্ঘদেহী ওয়ালশ। তিনি প্রায়শঃই বাউন্স করতেন।

সতেরো বছরের খেলোয়াড়ী জীবন শেষে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে পঞ্চম সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহকের ভূমিকায় রয়েছেন। ম্যালকম মার্শাল, মাইকেল হোল্ডিং ও জোয়েল গার্নারের ন্যায় প্রথিতযশা বোলারদের সহায়তা পেযেছেন তিনি।[4]

১৯৮৪ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার পার্থে অনুষ্ঠিত অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত টেস্টের মাধ্যমে ওয়ালশের টেস্ট অভিষেক ঘটে। ঐ টেস্টে তিনি ৪৩ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট দখল করেন। এ মৌসুমের পর সফরকারী শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোবার্টে অনুষ্ঠিত একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষিক্ত হন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ওয়ালস ৫১৯টি টেস্ট উইকেট নেন। এরফলে তিনি ভারতের বোলিং তারকা কপিল দেবের রেকর্ড ভেঙ্গে দেন। পরবর্তীকালে ২০০৪ সালে অস্ট্রেলীয় স্পিনার শেন ওয়ার্ন তার রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলেন। ১৯৯৪ সালে রিচি রিচার্ডসনের শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক নির্বাচিত হন। ১৯৯৫ সালে ২১.৭৫ রান গড়ে টেস্টে ৬২ উইকেট নেন। ২০০০ সালে নেন ১৮.৬৯ রান গড়ে ৬৬ উইকেট। তন্মধ্যে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত সিরিজে ৩৪ উইকেট শিকার করেন ১২.৮২ রান গড়ে। ওয়ালশ তার সর্বশেষ ওডিআই খেলেন ২০০০ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ও ২০০১ সালে নিজ জন্মভূমি জামাইকায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষ সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন।

অর্জনসমূহ

১৯৮৭ সালে উইজডেন কর্তৃপক্ষ তাকে বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কারে ভূষিত করে। কোর্টনি ওয়ালশ ১৯৮৮-৮৯ মৌসুমে ব্রিসবেন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত ১ম টেস্টের দুই ইনিংস মিলিয়ে তিনি তার হ্যাট্রিক পূরণ করেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিনি প্রথম ইনিংসের শেষ দুই ব্যাটসম্যান টনি ডোডেমাইডমাইক ভেলেটা এবং দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম বলে গ্রেইম উডকে এলবিডব্লিউ’র সাহায্যে আউট করার মাধ্যমে এ ব্যতিক্রমধর্মী হ্যাট্রিক সম্পন্ন করেন।[5] ঐ মৌসুমের শীতকালে কিংস্টনে অনুষ্ঠিত টেস্টে ভারতের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো খেলায় ১০ উইকেট লাভ করেন। হার্ট অব দ্য লায়ন শিরোনামে আত্মজীবনী রচনা করেছেন তিনি।

জুলাই, ২০১৭ সাল পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটে সর্বাধিক শূন্য রানের অ-গৌরবজনক রেকর্ড ধারণ করে আছেন তিনি। তিনি সর্বমোট ৪৩বার শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফেরৎ যেতে বাধ্য হন।[6] তবে, টেস্টে সর্বাধিক ৬১বার অপরাজিত থাকারও রেকর্ড গড়েছেন তিনি।

কোচিং

আগস্ট, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বিশেষজ্ঞ বোলিং কোচ হিসেবে নিযুক্তি লাভ করেন।[7] বাংলাদেশ দলের বোলিং কোচ নিযুক্তির ফলে প্রথমবারের মতো কোন আন্তর্জাতিক দলের কোচের মর্যাদা পেয়েছেন। তিনি প্রধান কোচ হাথুরুসিংহা’র সাথে সহকারী হিসেবে কাজ করবেন। ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফি বিজয়ের পর ১৯৯৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে যোগ্যতালাভকারী বাংলাদেশ দলের সফল কোচ গর্ডন গ্রীনিজঅ্যান্ডি রবার্টসের পর তৃতীয় ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান হিসেবে ওয়ালশ কোচিংয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। তিন বছর মেয়াদে বাংলাদেশ দলের বোলিং কোচ হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি যা ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে শেষ হবে।

তথ্যসূত্র

  1. Green, David (২৭ জুলাই ১৯৯৮)। "D Green: Walsh still scaling heights (27 Jul 1998)"ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১৪
  2. Warne issues Lara SOS for Windies
  3. "Test matches – Bowling records – Most wickets in career". Cricinfo. ESPN. Retrieved 30 August 2009.
  4. Isam, Mohammad (৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। "Walsh aims to find a new Ambrose in Bangladesh"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৯ আগস্ট ২০১৬
  5. "West Indies tour of Australia, 1988/89: The Frank Worrell Trophy – 1st Test"। ESPNcricinfo। সংগৃহীত 4 January 2013।
  6. "Tests – Most Ducks in Career"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৭-০৭
  7. "Cricket: Courtney Walsh becomes Bangladesh bowling coach"। The Daily Star। ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০১৬

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
রিচি রিচার্ডসন
ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৯৩/৯৪–১৯৯৭/৯৮
উত্তরসূরী
ব্রায়ান লারা
পুরস্কার ও স্বীকৃতি
পূর্বসূরী
ডিওন বার্টন
জামাইকা বর্ষসেরা ক্রীড়াব্যক্তিত্ব
১৯৯৮২০০০
উত্তরসূরী
ক্রিস্টোফার উইলিয়ামস
রেকর্ড
পূর্বসূরী
কপিল দেব
বিশ্বরেকর্ড - টেস্ট ক্রিকেট সর্বাধিক উইকেট সংগ্রহ
৫১৯ উইকেট (২৪.৪৪), ১৩২ টেস্টে
রেকর্ড ধারণ: ২৭ মার্চ, ২০০০ থেকে ৮ মে, ২০০৪
উত্তরসূরী
মুত্তিয়া মুরালিধরন
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.