কেন ক্রান্সটন

কেনেথ কেন ক্রান্সটন (ইংরেজি: Ken Cranston; জন্ম: ২০ অক্টোবর, ১৯১৭ - মৃত্যু: ৮ জানুয়ারি, ২০০৭) ল্যাঙ্কাশায়ারের লিভারপুল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও অধিনায়ক ছিলেন।[1] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য তিনি।

কেন ক্রান্সটন
১৯৪০-এর দশকের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে কেন ক্রান্সটন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামকেনেথ ক্রান্সটন
জন্ম(১৯১৭-১০-২০)২০ অক্টোবর ১৯১৭
লিভারপুল, ল্যাঙ্কাশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু৮ জানুয়ারি ২০০৭(2007-01-08) (বয়স ৮৯)
সাউথপোর্ট, ল্যাঙ্কাশায়ার, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার, অধিনায়ক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩২১)
৫ জুলাই ১৯৪৭ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট২৭ জুলাই ১৯৪৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৭৮
রানের সংখ্যা ২০৯ ৩০৯৯
ব্যাটিং গড় ১৪.৯২ ৩৪.৮২
১০০/৫০ -/- ৩/১৮
সর্বোচ্চ রান ৪৫ ১৫৬*
বল করেছে ১০১০ ১১৬৮৮
উইকেট ১৮ ১৭৯
বোলিং গড় ২৫.৬১ ২৭.৮৪
ইনিংসে ৫ উইকেট ১০
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৪/১২ ৭/৪৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৩/- ৪৬/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১২ মে ২০১৮

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে মাঝারিসারিতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন কেন ক্রান্সটন

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ১৯৪৭ থেকে ১৯৪৮ সালের মধ্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আটটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। ৫ জুলাই, ১৯৪৭ তারিখে টেস্ট অভিষেক ঘটে কেন ক্রান্সটনের। পেশায় দন্তচিকিৎসক ছিলেন কেন ক্রান্সটন। ফলশ্রুতিতে, ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর দন্তচিকিৎসায় পুরোপুরি মনোনিবেশ ঘটান তিনি।

প্রারম্ভিক জীবন

লিভারপুলের আইগবার্থ এলাকায় কেন ক্রান্সটনের জন্ম। বাবা হেনরি সেলবি ক্রান্সটন পেশায় দন্তচিকিৎসক ছিলেন। ক্রান্সটন ও জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা রোনাল্ড লিভারপুল কলেজে অধ্যয়ন করেন। কিন্তু, মাত্র ২৩ বছর বয়সে রোনাল্ড তার সহজাত ক্রিকেট প্রতিভা দেখালেও মৃত্যুমুখে পতিত হন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে মাইন কাউন্টিজ চ্যাম্পিয়নশীপে ল্যাঙ্কাশায়ার দ্বিতীয় একাদশের পক্ষে খেলেছেন। যুদ্ধকালীন তিনি রয়্যাল নেভিতে দন্তবিষয়ক কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

যুদ্ধের পর ল্যাঙ্কাশায়ারে রয়্যাল নেভি, কম্বাইন্ড সার্ভিসেস ও ক্লাব ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেন কেন ক্রান্সটন।

১৯৪৭ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন। তিনি ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক জ্যাক ফলোসের স্থলাভিষিক্ত হন। ১৪ মে ল্যাঙ্কাশায়ারের অধিনায়ক থাকা অবস্থায় প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে অভিষেক ঘটে তার। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে শুরুতেই সফলতা লাভ করেন।

টেস্ট ক্রিকেট

ফলশ্রুতিতে, প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেকের মাত্র আট সপ্তাহ পর সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট খেলার জন্য ইংল্যান্ড দলে অন্তর্ভুক্ত হন। ৫ জুলাই ওল্ড ট্রাফোর্ডে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে টেস্ট অভিষেক ঘটে কেন ক্রান্সটনের। হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত চতুর্থ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে পরপর ছয় বলে চার উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস শেষ করে দেন।

১৯৪৭-৪৮ মৌসুমে গাবি অ্যালেনের নেতৃত্বাধীন তুলনামূলকভাবে দূর্বল ইংরেজ দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যায়। ঐ সফরে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) সহকারী অধিনায়ক মনোনীত হন তিনি।

ঐ সিরিজে একবার দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ব্রিজটাউনে প্রথম টেস্টে গাবি অ্যালেনকে নৌকা থেকে টেনে পাড়ে উঠাতে গেলে তিনি মাংসপেশীতে ব্যথা অনুভব করেন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলেও চার খেলার ঐ সিরিজটিতে ইংল্যান্ড দল ২-০ ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল। পরবর্তী গ্রীষ্মের শুরুতে টেস্ট দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। কিন্তু, ১৯৪৮ সালে আবারও টেস্ট দলে ঠাঁই হয় তার যা তার সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। অ্যাশেজ সিরিজে ‘অপরাজেয়’ নামধারী ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত ৪র্থ টেস্টে অংশ নেন। চূড়ান্ত দিনে সফরকারী দল ৪০৪/৩ তুলে দলের জন্য নিশ্চিত করে।

অবসর

১৯৪৭ সালে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে ল্যাঙ্কাশায়ারকে তৃতীয় স্থানে পৌঁছে দিতে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন তিনি। তার নেতৃত্বে দলটি মাত্র একটি খেলায় পরাজিত হয়েছিল। তবে, ১৯৪৮ সালে দলটি পঞ্চম স্থান অধিকার করতে সক্ষম হয়। প্রত্যেক বছরেই ক্রান্সটন সহস্রাধিক রান তুলেন। পাশাপাশি ৮৪ ও ৭৯ উইকেট লাভে সক্ষমতা দেখান। ১৯৪৭ ও ১৯৪৮ সালে লর্ডস ও স্কারবোরায় জেন্টলম্যান বনাম প্লেয়ার্সের মধ্যকার দুইটি খেলায় জেন্টলম্যানের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

দ্বিতীয় মৌসুম শেষে ল্যাঙ্কাশায়ারের অধিনায়কত্ব থেকে ইস্তফা দেন। এর প্রধান কারণ ছিল লিভারপুলে দন্তচিকিৎসা পেশায় নিজেকে মনোনিবেশ ঘটানো।[1] ১৯৯০ সাল পর্যন্ত আইগবার্থে এ পেশায় ছিলেন। ১৯৪৯ ও ১৯৫০ সালে নর্থ অব ইংল্যান্ডের সদস্যরূপে সাউথের বিপক্ষে খেলেন। ১৯৫০ সালে সর্বশেষ প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন তিনি।

ব্যক্তিগত জীবন

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত কেন ক্রান্সটন দুইবার পাণিগ্রহণ করেন। ১৯৪২ সালে মেরি জয়েস হ্যারিসনের সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। এ দম্পতির এক কন্যা ও এক পুত্র ছিল। কিন্তু ১৯৬৪ সালে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। পরবর্তীতে ঐ বছরের শেষার্ধ্বে জোয়ান লেগকে বিয়ে করেন। এ সংসারে এক পুত্র জন্মগ্রহণ করে।

৮ জানুয়ারি, ২০০৭ তারিখে ৯০ বছর বয়সে ল্যাঙ্কাশায়ারের সাউথপোর্টে কেন ক্রান্সটনের দেহাবসান ঘটে।

অর্জনসমূহ

১৯৯৩-৯৪ মৌসুমে ল্যাঙ্কাশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়াও, ল্যাঙ্কাশায়ারের সাবেক খেলোয়াড়দের সংগঠনেরও সভাপতি ছিলেন কেন ক্রান্সটন।

২৮ ডিসেম্বর, ২০০৬ তারিখে নরম্যান ম্যান্ডি মিচেল-ইন্সের দেহাবসানের ফলে তিনি বয়োজ্যেষ্ঠ জীবিত ইংরেজ টেস্ট ক্রিকেটারের মর্যাদা লাভ করেন। কিন্তু এগারো দিন পর তার মৃত্যু ঘটলে ঐ মর্যাদা আর্থার ম্যাকইনটায়ারের কাছে চলে যায়।

তথ্যসূত্র

  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 46আইএসবিএন 1-869833-21-X।

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

আরও পড়ুন

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.