কৃষ্ণনগর সরকারি কলেজ
কৃষ্ণনগর সরকারি কলেজ নদিয়া জেলার প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যশালী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই কলেজ অতীতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন থাকলেও বর্তমানে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন, সশস্ত্র বিপ্লবে এই মহাবিদ্যালয় একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে। এই কলেজের অনেক ছাত্র ছাত্রী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে খ্যাতি অর্জন করেছেন।[1][2]
কৃষ্ণনগর কলেজ | |
অন্যান্য নাম | কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজ |
---|---|
ধরন | রাজ্য সরকার পোষিত |
স্থাপিত | ১৮৪৬ |
অধিভুক্তি | কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় |
অধ্যক্ষ | জয়শ্রী রায়চৌধুরী |
ঠিকানা | কৃষ্ণনগর, নদীয়া , , , |
ভাষা | বাংলা |
ক্রীড়া | আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা |
ওয়েবসাইট | http://www.krishnagargovtcollege.org |
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
প্রথমে কৃষ্ণনগর শহরে একটি ভাড়াবাড়িতে এই কলেজ চালু হয়েছিল। পরে তৎকালীন বড়োলাট লর্ড হার্ডিঞ্জ ১৮৪৬ সালের ১ জানুয়ারি এই কলেজের অনুমোদন দেন। নদীয়ার মহারাজা শ্রীশচন্দ্র রায় এবং মুর্শিদাবাদ জেলার কাশিমবাজারের মহারাণী স্বর্ণময়ী কলেজের জন্যে শতাধিক বিঘা জমি দান করলে স্থানীয় শিক্ষাহিতৈষী ব্যক্তিবর্গের আর্থিক সহযোগিতায় ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দে একটি প্রাসাদোপম ভবন নির্মিত হয় যা অধুনা কৃষ্ণনগর সরকারি কলেজ নামে খ্যাত। এই মহাবিদ্যালয়ের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন বিশিষ্ট শেক্সপিয়ার বিশেষজ্ঞ, প্রেসিডেন্সি কলেজের অন্যতম অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন ডি.এল. রিচার্ডসন। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে মি: রকফোর্ট, স্যার রোপার লেথব্রিজ, উমেশচন্দ্র দত্ত, জ্যোতিভূষণ ভাদুড়ী, রাখালরাজ বিশ্বাস, সতীশ চন্দ্র দে, রাজেন্দ্রনাথ সেন, আর. এন. গিলক্রিষ্ট. ইগারটন স্মিথ প্রমুখ যশস্বি শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গ অধ্যক্ষের পদ অলংকৃত করেছেন। এখানকার খ্যাতনামা অধ্যাপকদের মধ্যে শিক্ষাবিদ রামতনু লাহিড়ী, পণ্ডিত মদনমোহন তর্কালঙ্কার, চিন্তাহরণ চক্রবর্তী, সুবোধ চন্দ্র সেনগুপ্ত, মুহম্মদ আবদুল হাই, কবি বিষ্ণু দে,ক্ষুদিরাম দাস, সুধীর চক্রবর্তী প্রমুখের নাম করা যায়[1]।
শিক্ষা বিভাগ
এই প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মূলত স্নাতক স্তরে শিক্ষাদান করা হয় কলা, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য তিন বিভাগেই শিক্ষা দান করা হয়[3]।
কলা বিভাগ
- বাংলা
- ইংরেজি
- ইতিহাস
- ভূগোল
- রাষ্ট্রবিজ্ঞান
- দর্শন
- সমাজ বিজ্ঞান
- শিক্ষাবিজ্ঞান
বিজ্ঞান বিভাগ
- গণিত
- পদার্থবিদ্যা
- রসায়ন
- জীববিদ্যা
- উদ্ভিদ বিদ্যা
- মাইক্রো বায়োলজি
বাণিজ্য বিভাগ
- অর্থনীতি
- হিসাব শাস্ত্র
এছাড়াও এই কলেজে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর বাংলা, দর্শণ ও ভূগোল বিভাগের রেগুলার পঠন পাঠন হয়।
কৃতী ছাত্র ছাত্রী
- দ্বিজেন্দ্রলাল রায় (প্রখ্যাত কবি ও নাট্যকার)
- সতীশচন্দ্র আচার্য বিদ্যাভূষণ (সংস্কৃত ও পালি ভাষার পণ্ডিত)
- নীহাররঞ্জন গুপ্ত (সাহিত্যিক)
- মনমোহন ঘোষ (প্রথম ভারতীয় ব্যারিস্টার ও রাজনীতিবিদ)
- লালমোহন ঘোষ (জাতীয় কংগ্রেস নেতা ও খ্যাতনামা ব্যারিস্টার)
- প্রমোদরঞ্জন সেনগুপ্ত ( সশস্ত্র বিপ্লববাদী ও বামপন্থী চিন্তাবিদ)
- গোবিন্দপদ দত্ত ( সশস্ত্র বিপ্লববাদী )
- হরিপদ চট্টোপাধ্যায় (স্বাধীনতা সংগ্রামী ও সাংসদ)
- দীনেন্দ্রকুমার রায় (সাহিত্যিক)
- মহাদেব সরকার ( সশস্ত্র বিপ্লববাদী )
- হেমন্তকুমার সরকার (স্বাধীনতা সংগ্রামী )
- বিজয়লাল চট্টোপাধ্যায় (কবি ও স্বাধীনতা সংগ্রামী )
- হেমচন্দ্র বাগচী ( কবি )
- তারাপদ বন্দ্যোপাধ্যায় (স্বাধীনতা সংগ্রামী ও আইনবিদ)
- রাজকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় (ভাষাবিদ, ঐতিহাসিক গবেষক ও পণ্ডিত)
- নারায়ণ সান্যাল (সাহিত্যিক)
- প্রমথনাথ বসু (বিখ্যাত ভূতাত্ত্বিক)
- দ্বারকানাথ অধিকারী (কবি)
- দিলীপ বাগচী (গণসংগীত শিল্পী)
- অনিল বিশ্বাস (রাজনীতিবিদ)
- সুধীর চক্রবর্তী ( লোকসংস্কৃতি গবেষক )
- দেবাশিস বিশ্বাস[4] ( বাঙালি পর্বতারোহী )
- গৌতম মন্ডল (বাঙালি বিজ্ঞানী)
- গগনচন্দ্র বিশ্বাস (বাঙালী সমাজসেবী ও বাস্তুকার)
কলেজ ময়দান
সরকারি কলেজের মাঠটি খুব বড়। এখানে কলেজের বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠান, খেলাধুলা অনুষ্ঠিত হয়। এই মাঠে বিভিন্ন সরকারি উৎসব হয়ে থাকে। এখানে অনুষ্ঠিত বাৎসরিক নদীয়া জেলা হস্ত শিল্প মেলা খুবই উল্লেখযোগ্য উৎসব।[5]
আরও দেখুন
- ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থা
- পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থা
তথ্যসূত্র
- তত্বাবধায়ক সুধীর চক্রবর্তী (১৯৭৩)। কৃষ্ণনগর কলেজ পত্রিকা। কৃষ্ণনগর: পত্রিকা পরিষদ। পৃষ্ঠা ৬, ১১২, ১১৩।
- "কৃষ্ণনগর গভঃ কলেজ"।
- "আনন্দবাজার পত্রিকা । ৬জুন ২০১৩"।
- "মাকালু জয় করল দেবাশিস বিশ্বাস"।
- "বেনারসের শিল্পীরা প্রশিক্ষণ দেবেন বাংলায়"।