কুয়ান ম্যাকার্থি

কুয়ান নীল ম্যাকার্থি (ইংরেজি: Cuan McCarthy; জন্ম: ২৪ মার্চ, ১৯২৯ - মৃত্যু: ১৪ আগস্ট, ২০০০) নাটাল প্রদেশের পিটারমারিৎজবার্গে জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫১ সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে নাটাল দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিং করতেন কুয়ান ম্যাকার্থি

কুয়ান ম্যাকার্থি
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম(১৯২৯-০৩-২৪)২৪ মার্চ ১৯২৯
পিটারমারিৎজবার্গ, নাটাল, দক্ষিণ আফ্রিকা
মৃত্যু১৪ আগস্ট ২০০০(2000-08-14) (বয়স ৭১)
জোহেন্সবার্গ, ট্রান্সভাল, দক্ষিণ আফ্রিকা
উচ্চতা ফুট ২ ইঞ্চি (১.৮৮ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৬৭)
১৬ ডিসেম্বর ১৯৪৮ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১৬ আগস্ট ১৯৫১ বনাম ইংল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৫ ৬০
রানের সংখ্যা ২৮ ১৪১
ব্যাটিং গড় ৩.১১ ৪.২৭
১০০/৫০ ০/০ ০/০
সর্বোচ্চ রান ২৩*
বল করেছে ৩৪৯৯ ১১৮১৮
উইকেট ৩৬ ১৭৬
বোলিং গড় ৪১.৯৪ ২৫.৮৫
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৬/৪৩ ৮/৩৬
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৬/- ২৩/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১০ মার্চ ২০১৯

শৈশবকাল

ভিক্টর ও ফাইলিস ম্যাকার্থি দম্পতির পাঁচ সন্তানের অন্যতম ছিলেন তিনি। পিটারমারিৎজবার্গের বাইরে গ্লেনাহোমের লেবু বাগান ও গবাদিপশুর খামার এলাকায় কুয়ান ম্যাকার্থি তার শৈশবকাল অতিবাহিত করেন। সেখানে তার মাতা রোডেশিয়ান রিজব্যাক কুকুর উৎপাদনের সাথে জড়িত ছিলেন। মারিৎজবার্গ কলেজ থেকে তিনি তার মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

১৯ বছর বয়সে জাতীয় দলের পক্ষে প্রথমবারের মতো খেলার জন্যে কুয়ান ম্যাকার্থিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ছয় ফুট দুই ইঞ্চি (১.৮৮ মি.) উচ্চতার অধিকারী ছিলেন তিনি।[1] প্রকৃত মানসম্পন্ন বোলার হিসেবে তিনি মৃত্যুদূত আকারে অফ-কাটারের সুচারু প্রয়োগ ঘটাতে পারতেন।[2] ১৯৪৮ থেকে ১৯৫১ সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ১৫ টেস্টে বোলিং উদ্বোধনে নেমেছিলেন। ব্যাটসম্যান হিসেবে মোটেই সুবিধে করতে পারেননি। স্বল্প কয়েকজন টেস্ট ক্রিকেটারের অন্যতম হিসেবে সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে রানের তুলনায় উইকেট পেয়েছেন অধিক।

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে পনেরো টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। ১৬ আগস্ট, ১৯৪৮ তারিখে ডারবানে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে কুয়ান ম্যাকার্থি’র। সতেজ পিচে তিনি সেরা বোলিং প্রদর্শনে সক্ষম ছিলেন।[3] টেস্ট অভিষেকে দারুণ বোলিংশৈলী প্রদর্শন করেন। কিংসমিডে নিজ শহরে সফরকারী ইংরেজ দলের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৬/৪৩ পান।[4] শেষ খেলাটিতে আরও পূর্ণাঙ্গ শক্তি প্রয়োগে মারাত্মক বোলিংয়ে অগ্রসর হয়েছিলেন। তবে, ১৯৫১ সালে ইংল্যান্ড গমনে হিতে বিপরীত হয়ে যায়। ওল্ড ট্রাফোর্ডে ব্যাটিং উপযোগী পিচে তেমন সফলতা পাননি।[5] ১৯৫১ সালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন শেষ করাকালীন পঁয়তাল্লিশটি খেলায় অংশ নিয়ে সর্বোচ্চ ইনিংস খেলেছিলেন মোটে সাত।

ঘরোয়া ক্রিকেট

১৯৫২ সালে কুয়ান ম্যাকার্থি কেমব্রিজের পেমব্রুক কলেজে ভর্তি হন।[6] এরফলে ক্রিকেটবোদ্ধাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হয়। অত্যন্ত সুন্দর বোলিংশৈলী প্রদর্শন করে গড়ে সতেরো রানের অল্প বেশি খরচায় চুয়াল্লিশ উইকেট তুলে নেন।[7] তবে, ১৯০৮ সালের পর ওরচেস্টারের খেলায় প্রথম বোলার হিসেবে বল নিক্ষেপের কারণে নো-বলের ডাক শুনলে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উপনীত হন তিনি। তাসত্ত্বেও, খেলাটির বাদ-বাকি সময়ে তাকে বোলিং করার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। এরপর লর্ডসে ও স্কারবোরা উৎসবের খেলায় জেন্টলম্যানের সদস্যরূপে খেলেন কুয়ান ম্যাকার্থি।

দলে বড় ধরনের বোলিং শক্তির অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তাকে আর না দেখার কথা ঘোষণা করেন। ১৯৫২ সালে কেমব্রিজের শিক্ষা সমাপান্তে ইংল্যান্ডেই বসবাস করতে থাকেন তিনি।[8] এ পর্যায়ে ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে দলের অন্যতম সদস্য হিসেবে ভাবা হলেও তাকে আর রাখা হয়নি। এরপর ডরসেটের পক্ষে মাইনর কাউন্টিজ চ্যাম্পিয়নশীপে ক্রিকেট খেলতে থাকেন। কয়েক বছর খেলার পর দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রত্যাবর্তন করে খামারি হিসেবে আবির্ভূত হন।[9]

ব্যক্তিগত জীবন

৩০ জানুয়ারি, ১৯৫৪ তারিখে মার্গারেট গিলিয়ান ট্রটার নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। এ দম্পতির ফিলিপ্পা জেন, নিকোলাস হিউলেট ও সারা ভিক্টোরিয়া নাম্নী তিন কন্যা ছিল। ১৯৭২ সালে রোডেশীয় ভ্যালেরি জোয়ান পারহ্যামের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এ সংসারে অ্যাঙ্গাস নীল কুয়ান নামীয় সন্তান জন্মগ্রহণ করে।

১৪ আগস্ট, ২০০০ তারিখে ৭১ বছর বয়সে ট্রান্সভালের জোহেন্সবার্গে কুয়ান ম্যাকার্থি’র দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র

  1. Louis Duffus, "The South Africans", The Cricketer, Spring Annual 1951, pp. 5–9.
  2. Wright, Graeme (editor); Wisden Cricketers' Almanack, 138th edition (2001); p. 1594; আইএসবিএন ০-৯৪৭৭৬৬-৬৩-৪
  3. Giller, Norman; "Bedser and Gladwin scurry to thrilling last-ball victory"; in The World's Greatest Cricket Matches; pp. 17-19. আইএসবিএন ০-৭০৬৪-৩৮৯৫-৭
  4. "1st Test: South Africa v England at Durban, Dec 16-20, 1948"espncricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১২-১৩
  5. Preston, Norman (editor); Wisden Cricketers' Almanack, 89th edition (1952); p. 210
  6. "Cricket" (ইংরেজি ভাষায়) দ্য টাইমস (লন্ডন)। 24 May 1952। (52320),
  7. Preston, Norman (editor); Wisden Cricketers' Almanack, 90th edition (1953); pp.642-643
  8. Webber, Roy; The Playfair Book of Test Cricket, Volume II; p. 23. Published June 1953 by Welbecson Press Limited.
  9. Wright; Wisden Cricketers' Almanack (2001); p. 1594

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.