কুয়াকাটা
কুয়াকাটা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পটুয়াখালী জেলার একটি শহর ও পর্যটনকেন্দ্র। এটি বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলায় অবস্থিত। এখানে আছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত যা পর্যটকদের কাছে "সাগরকন্যা" হিসেবে পরিচিত। ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সৈকত বিশিষ্ট কুয়াকাটা বাংলাদেশের অন্যতম নৈসর্গিক সমুদ্র সৈকত। এটি বাংলাদেশের একমাত্র সৈকত যেখান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়
কুয়াকাটা সাগর কন্যা | |
---|---|
শহর | |
উপর থেকে ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে: মৎস্য-শিকার, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে সূর্যাস্ত, বৌদ্ধ মন্দির, সমুদ্রতীর, ম্যানগ্রোভ বন এবং কুয়াকাটা গ্র্যান্ড হোটেল ও সি রিসর্ট | |
কুয়াকাটা কুয়াকাটা কুয়াকাটা | |
স্থানাঙ্ক: ২১°৪৯′১৬″ উত্তর ৯০°০৭′১১″ পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | বরিশাল বিভাগ |
জেলা | পটুয়াখালী জেলা |
উপজেলা | কলাপাড়া |
পৌরসভা | কুয়াকাটা |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
অবস্থান
পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর থানার কুয়াকাটা পৌরসভায় অবস্থিত। ঢাকা থেকে সড়কপথে এর দূরত্ব ৩৮০ কিলোমিটার ও বরিশাল থেকে ১০৮ কিলোমিটার। কুয়াকাটা পটুয়াখালী সদর থেকে ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত।
জনসংখ্যার উপাত্ত
২০১১ এর আদমশুমারি অনুযায়ী কুয়াকাটার মোট জনসংখ্যা ৯,০৭৭ জন এবং পরিবার সংখ্যা ২,০৬৫ টি।[1]
ইতিহাস
কুয়াকাটা নামের পেছনে রয়েছে আরাকানদের এদেশে আগমনের সাথে জড়িত ইতিহাস। 'কুয়া' শব্দটি এসেছে 'কুপ' থেকে। ধারণা করা হয় ১৮ শতকে মুঘল শাসকদের দ্বারা বার্মা থেকে বিতাড়িত হয়ে আরাকানরা এই অঞ্চলে এসে বসবাস শুরু করে। তখন এখানে সুপেয় জলের অভাব পূরণ করতে তারা প্রচুর কুয়ো বা কুপ খনন করেছিলেন, সেই থেকেই এই অঞ্চলের নাম হয়ে যায় কুয়াকাটা![2]
সংস্কৃতি
কুয়াকাটা হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান। অগণিত ভক্তরা এখানে 'রাস পূর্ণিমা' এবং 'মাঘী পূর্ণিমা' উৎসবে উপস্থিত হন। এই উপলক্ষে তীর্থযাত্রীরা উপসাগরে পবিত্র স্নান করেন এবং ঐতিহ্যবাহী মেলায় অংশ নেন।[3] সমুদ্র সৈকতের পাশে অবস্থিত ১০০ বছরের পুরানো বৌদ্ধ মন্দিরে গৌতম বুদ্ধের মূর্তি এবং দু'টি ২০০ বছরের পুরানো কূপ রয়েছে।
দর্শনীয় স্থান
এই শহর ও এর সন্নিকটবর্তী যেসব দর্শনীয় স্থান রয়েছে সেগুলো হল:
- কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত
- ফাতরার বন - সমুদ্রসৈকতের পশ্চিম দিকের সংরক্ষিত ম্যানগ্রোভ বন, যা 'দ্বিতীয় সুন্দরবন' হিসেবে পরিচিত;[4]
- কুয়াকাটার 'কুয়া' - কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের কাছে রাখাইন পল্লী কেরানীপাড়ার শুরুতেই একটা বৌদ্ধ বিহারের কাছে রয়েছে একটি প্রাচীন কুপ;[2], পৃষ্ঠা. ৩৭৩)
- সীমা বৌদ্ধ বিহার - প্রাচীন কুয়াটির সামনেই রয়েছে প্রাচীন সীমা বৌদ্ধ বিহার, যাতে রয়েছে প্রায় সাঁইত্রিশ মন ওজনের অষ্ট ধাতুর তৈরি ধ্যানমগ্ন বুদ্ধের মূর্তি;
- কেরানিপাড়া - সীমা বৌদ্ধ বিহারের সামনে থেকেই শুরু হয়েছে রাখাইন আদিবাসীদের পল্লী কেরানিপাড়া;
- আলীপুর মহিপুর বন্দর - কুয়াকাটা থেকে প্রায় চার কিলোমিটার উত্তরে রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বড় মৎস্য ব্যবসা কেন্দ্র আলীপুর মহিপুর;
- মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ বিহার - কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পূর্বে রাখাইন আদিবাসীদের আবাসস্থল মিশ্রিপাড়ায় রয়েছে একটি বৌদ্ধ বিহার, যাতে রয়েছে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মূর্তি;
- গঙ্গামতির জঙ্গল - কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পূব দিকে গঙ্গামতির খালের পাশে গঙ্গামতি বা গজমতির জঙ্গল।[5]
চিত্রশালা
- কুয়াকাটায় স্থানীয় জেলের মৎস্য শিকার
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- "আদমশুমারি ২০১১: পটুয়াখালী টেবল C-01" (পিডিএফ)। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। ১৩ নভেম্বর ২০১০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১৪।
- সেলিম, মোস্তফা (২০১১)। বাংলাদেশ ভ্রমণসঙ্গী। ভ্রমণ-চিত্র প্রকাশনা।
- "National Tourism Organization..[ Kuakata ]"। web.archive.org। ২০১১-০৭-১৯। Archived from the original on ২০১১-০৭-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১১।
- ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে একপলকে কুয়াকাটা, দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ০৯, ২০১১
- ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৮ আগস্ট ২০১৩ তারিখে এই গরমে কুয়াকাটা', দৈনিক ইত্তেফাক, ২০১০ মার্চ ০৯,২০১১