কামাল হোসেন
কামাল হোসেন (জন্ম: ২০ এপ্রিল ১৯৩৭, বরিশালের শায়েস্তাবাদে) বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট আইনজীবী, রাজনীতিবিদ এবং মুক্তিযোদ্ধা।[1] সচরাচর তাকে "ডঃ কামাল হোসেন" হিসাবে উল্লেখ করা হয়। তিনি বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতাদের মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর ১৯৭২-এর ৮ই জানুয়ারি শেখ মুজিবের সঙ্গে তাকেও মুক্তি দেয়া হয়। তিনি শেখ মুজিবের সঙ্গে ১০ জানুয়ারি লন্ডন হয়ে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি সর্বদাই সোচ্চার। তাকে ব্যক্তিগত সততা, ন্যায্যতা, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের প্রবক্তা হিসাবে সাধারণভাবে সম্মান করা হয়।
ড. কামাল হোসেন | |
---|---|
![]() | |
আইন বিভাগ | |
কাজের মেয়াদ ১২ই জানুয়ারি, ১৯৭২ – মার্চ, ১৯৭৩ | |
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ মার্চ, ১৯৭৩ – আগস্ট, ১৯৭৫ | |
রাষ্ট্রপতি | মোহাম্মদ মোহাম্মাদুল্লাহ শেখ মুজিবুর রহমান |
প্রধানমন্ত্রী | শেখ মুজিবুর রহমান মোহাম্মদ মনসুর আলী |
পূর্বসূরী | আবদুস সামাদ আজাদ |
উত্তরসূরী | আবু সাঈদ চৌধুরী |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ২০ এপ্রিল ১৯৩৭ |
নাগরিকত্ব | ![]() ![]() ![]() |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
রাজনৈতিক দল | গণফোরাম
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (১৯৯০-এর পূর্বে) |
দাম্পত্য সঙ্গী | হামিদা হোসেন |
সন্তান | সারা হোসেন, দিনা হোসেন |
বাসস্থান | ঢাকা |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | রাজনীতিবিদ, রাষ্ট্রবিদ এবং আইনজীবী |
যে জন্য পরিচিত | বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির প্রধান |
জন্ম ও বংশ
সৈয়দ কামাল হোসেন ২০ এপ্রিল ১৯৩৭ খ্রীষ্টাব্দের তৎকালীন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির বাকেরগঞ্জ জেলার শায়েস্তাবাদে একটি সম্ভ্রান্ত বাঙ্গালী মোসলমান জমিদার খান্দানে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পরদাদা সৈয়দ আশরাফ হোসেন কলকাতায় থাকতেন তবে তাঁর দাদা সৈয়দ সাদত হোসেন সাদু মিঞা বিয়ে করেছিলেন শায়েস্তাবাদের নবাব খান বাহাদুর মীর মোয়াজ্জেম হোসেনের মেয়ে নবাবজাদী সৈয়দা সালেহা খাঁতুনকে।[2] তাঁর বাবা সৈয়দ আহাম্মদ হোসেন ছিলেন কলকাতার একজন চিকিৎসক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দীর আত্মীয়।[3]
শিক্ষা
১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জুরিসপ্রুডেন্সে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে ব্যাচেলর অব সিভিল ল ডিগ্রি লাভ করেন। লিংকনস ইনে বার-অ্যাট-ল অর্জনের পর আন্তর্জাতিক আইন বিষয়ে পিএইচডি করেন ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে । আইনজীবী সারা হোসেন তার কন্যা।[4]
কর্মজীবন
ড. কামাল হোসেন বাংলাদেশের সংবিধানের প্রণেতা হিসেবেই অধিক পরিচিত। রাজনীতিতে তিনি সবসময়ই সোচ্চার ছিলেন। ১৯৭০ সালের পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তান থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন। ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান রচনা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালে আইনমন্ত্রী এবং ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন ঢাকা-১৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
কামাল হোসেন জাতিসংঘের স্পেশাল রিপোর্টারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় রয়েছেন। তিনি গণফোরাম নামের রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।
সাম্প্রতিক সময়ে ড. কামালের নেতৃত্বে বাংলাদেশে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে একটি জোট গড়ে উঠেছে।[5]
সমালোচনা
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ড. কামাল হোসেনের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে একজন সাংবাদিক জামায়াত ইসলামের নিবন্ধন বাতিল হওয়ার পরেও তাদের সাথে ঐক্যফ্রন্টের জোট করা প্রসঙ্গে কামালের অবস্থান জানতে তিনি ক্ষিপ্ত হন।[6] এরপর তীব্র সমালোচনার মুখে কামাল হোসেন দুঃখ প্রকাশ করেন।[7]
বক্তৃতা
আরো দেখুন
বহিঃসংযোগ
তথ্যসূত্র
- "Law and Democracy with Dr Kamal Hossain"। University of Cambridge। ৩১ মে ২০০৬। ২৫ জুন ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১০।
- সিরাজ উদদীন আহমেদ (২০১০)। "শায়েস্তাবাদের জমিদার পরিবার"। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস। ১। ঢাকা: ভাস্কর প্রকাশনী।
- Tokai (২৭ নভেম্বর ২০১৫)। "History Wars: Kamal Hossain Interview (Part 1)"। Alalodulal.org। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
- "Nurul Kabir to continue his defence on Dec 20"। BDNews24। ২০১১-১২-০১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০২-১৭।
- হাসনাত, রাকিব (২০১৮-১০-২১)। "কামাল হোসেনের নেতৃত্ব: কী বলছে তৃণমূল বিএনপি?"। BBC News বাংলা (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১০-২৭।
- "'চুপ করো, খামোশ' ক্ষিপ্ত হয়ে বললেন কামাল হোসেন"। দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮।
- "স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে প্রশ্নে কামাল বললেন ঐক্যের কথা"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮।
পূর্বসূরী: মন্ত্রণালয় গঠন |
বাংলাদেশের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ১৩ জানুয়ারি ১৯৭২ – ১৬ মার্চ ১৯৭৩ |
উত্তরসূরী: মনোরঞ্জন ধর |