কান্ডুকোন্ডেইন কান্ডুকোন্ডেইন
কান্ডুকোন্ডেইন কান্ডুকোন্ডেইন (তামিল: கண்டுகொண்டேன் கண்டுகொண்டேன், অনুবাদ 'আমি দেখেছি, আমি দেখেছি') ২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি তামিল রোমান্টিক চলচ্চিত্র যেটি ইংরেজ নারী ঔপন্যাসিক জেন অস্টেন এর 'সেন্স এ্যান্ড সেন্সিবিলিটি' (উপন্যাস, ১৮১১) অবলম্বনে নির্মিত হয়। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন রাজীব মেনন যিনি কাহিনীর সহ-লেখকও ছিলেন (সুজাতা রঙ্গরজন মূল কাহিনী লেখেন)। চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেন মামুট্টি, অজিত কুমার, তাবু, ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন এবং আব্বাস। এছাড়াও ছিলেন শ্রীবিদ্যা, রঘুবরণ এবং মণিভন্নন সাহায্যকারী ভূমিকায়।[1] চলচ্চিত্রটির গানগুলো অনেক জনপ্রিয় হয় এবং সঙ্গীত পরিচালনা এ আর রহমান করেন, সিনেমাটোগ্রাফার ছিলেন রবি কে চন্দ্রন।[2]
কান্ডুকোন্ডেইন কান্ডুকোন্ডেইন | |
---|---|
পরিচালক | রাজীব মেনন |
প্রযোজক | এস দানু |
রচয়িতা | সুজাতা রঙ্গরজন |
চিত্রনাট্যকার | রাজীব মেনন |
উৎস | জেন অস্টেন এর 'সেন্স এ্যান্ড সেন্সিবিলিটি' উপন্যাস অবলম্বনে |
শ্রেষ্ঠাংশে | মামুট্টি অজিত কুমার আব্বাস তাবু ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন রঘুবরণ শ্রীবিদ্যা মণিভন্নন নিড়ালগাল রবি |
সুরকার | এ আর রহমান |
চিত্রগ্রাহক | রবি কে চন্দ্রন |
সম্পাদক | সুরেশ উরস |
প্রযোজনা কোম্পানি | ভি ক্রিয়েশন্স |
পরিবেশক | ভি ক্রিয়েশন্স |
মুক্তি | ৫ মে ২০০০ |
দৈর্ঘ্য | ১৫৮ মিনিট |
দেশ | ভারত |
ভাষা | তামিল |
চলচ্চিত্রটি ২০০০ সালের ৫ মে তারিখে মুক্তি পায়, পজিটিভ রিভিউ পেয়ে এবং মুক্তির পর বক্স অফিসে সফলতা পায়। চলচ্চিত্রটিকে তেলুগু ভাষায় অনুবাদ করে 'প্রিয়ুরালু পিলিচিন্ডি' নামে মুক্তি দেওয়া হয়েছিলো।[3] বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে কান্ডুকোন্ডেইন কান্ডুকোন্ডেইন প্রদর্শিত হয়।[4] গায়ক শঙ্কর মহাদেবন 'এন্না সোল্লা পোগিরায়' গানের জন্য 'শ্রেষ্ঠ পুরুষ নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার' লাভ করেন।[5] চলচ্চিত্রটি ফিল্মফেয়ার সেরা চলচ্চিত্র পুরস্কার - তামিল জিতেছিলো।
কাহিনী
সামরিক বাহিনীর মেজর বালা (মামুট্টি) একটি যুদ্ধ করেন এবং গ্রেনেড দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে বাম পা হারান। সৌমিয়া (তাবু) এবং মীনাক্ষী "মিনু" (ঐশ্বর্য রাই) পদ্মা (শ্রীবিদ্যা) এর কন্যা যারা তামিলনাড়ুর কালাইকুড়ির চেট্টিয়ার ম্যানশনে নানা চন্দ্রশেখর (উন্নীকৃষ্ণন নাম্বুদিরি), গৃহপরিচারিকা চেল্লাতা (এস এন লক্ষ্মী) এবং ছোটো বোন কমলার (শামিলী) সাথে থাকে। সৌমিয়া একটি স্কুল অধ্যক্ষ এবং মিনা ক্লাসিক তামিল কবিতা, সঙ্গীত এবং নাচ সম্পর্কে উৎসাহী। মেজর বালা মিনুকে ভালোবাসে, কিন্তু মিনু শ্রীকান্ত (আব্বাস) কে ভালোবাসে। মনোহর (অজিত কুমার) একজন চলচ্চিত্র পরিচালক মিনুর বাড়িতে আসে চলচ্চিত্র শুটিং এর জন্য। সৌমিয়া ও মনোহর একে অপরের প্রেমে পড়ে যায় কিন্তু তাদের মধ্যে একটা সমস্যা তৈরি হয় সিনেমার কাহিনীর পরে মনোহর সৌমিয়ার মন জয়ের চেষ্টা করে।
চন্দ্রশেখর তার মৃত্যুরশয্যায়, উইল সম্বন্ধে কিছু বলার চেষ্টা করে যা তাঁর দ্বারা যা লেখা ছিল এবং একটি বাক্সে রাখা ছিলো, অনেক আগে। কেউ তাকে বুঝতে পারে না। তার মৃত্যুর পর, তার আইনজীবী বাক্সটি খোলা ভাঙ্গেন এবং খুঁজে পান যে তিনি তার ছোট ছেলে স্বামীনাথান (নিড়ালগাল রবি)কে তার সমস্ত সম্পত্তিকে বরাদ্দ করেছেন, এই সত্যটি স্মরণ করিয়েছেন যে, তার বড় মেয়ে পদ্মা তাকে না জানিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেছে।
চেন্নাইতে, সোয়ামায় একটি সফটওয়্যার কোম্পানীর একটি সম্মানজনক চাকরি খুঁজে পাওয়া যায়, যখন মেইন বেলের সহায়তায় মেইনু একটি প্লেব্যাক গায়ক হন। এদিকে শ্রীকান্তের আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া হয়ে যায় এবং তাকে তার বিনিয়োগকারীদের অর্থ ফেরত দিতে হয়। শ্রীকান্ত তাঁর কন্যাকে বিয়ে করে শ্রীকান্ত ও তার কোম্পানীকে বের করে দেওয়ার জন্য একটি মন্ত্রী প্রস্তাব দেন। শ্রীকান্ত সম্মত এবং যখন মেনু সুযোগ দ্বারা এই খুঁজে বের করে, তিনি শ্রীকান্ত এর ভণ্ডামি এ আতঙ্কিত এবং উদ্বিগ্ন হয়। তিনি একটি খোলা ম্যানহোল মধ্যে পড়ে এবং বালা দ্বারা উদ্ধার পায়। বালা তার সত্যিকারের ভালবাসার অনুভূতি উপলব্ধি করে, মেনু তার সাথে ভালবাসে। স্বামীনাথানের স্ত্রীর ম্যানশনের পাওয়ার অধিকার এবং খারাপ আচরণ সহ্য করতে না পেরে সৌমিয়া এবং তার পরিবার চেন্নাইতে চলে যায়।
চেন্নাইতে সৌমিয়া একটি সফটওয়ার কম্পানীতে চাকরি পেয়ে যায় আর মিনু মেজর বালার সাহায্যে গায়িকা হয়ে যায়। শ্রীকান্তের ফাইনান্স কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে যায় আর তাকে তার বিনিয়োগকারীদর টাকা পরিশোধ করতে হবে। একজন মন্ত্রী শ্রীকান্তকে সাহায্য করবে বলে যে যদি ষে তার মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি হয়। শ্রীকান্ত রাজি হয় এবং মিনু এটা জেনে মনে কষ্ট পায়। মিনু মনমরা হয়ে রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে ম্যানহোলে পড়ে যায় আর মেজর বালা তাকে উঠায়, মেজর বালার মহানুভবতায় এবং ভালোবাসায় মিনু তার প্রেমে পড়ে যায়।
মনোহরের প্রথম চলচ্চিত্র প্রকল্প ভেস্তে যায় এবং তাকে বের করে দেওয়া হয় উক্ত প্রকল্প থেকে। সে তার নিজের সিনেমা বানানোর পরিকল্পনা করে নন্দিনী বর্মা (পুজা বাত্রা) কে নিয়ে। নন্দিনী মনোহরের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে যায় যদিও প্রেমের উদ্দেশ্য নিয়ে নয়। মনোহর এবং নন্দিনীর সম্পর্কের গুজবের কথা সৌমিয়ার মনে কষ্ট এনে দেয়। নন্দিনীকে নিয়ে বানানো চলচ্চিত্রটি ভালো বাণিজ্যিক সাফল্যতা পেয়ে যায়। যখন মনোহর চেন্নাইতে সৌমিয়ার বাসায় যায়, সে জানতে পারে যে সৌমিয়া ক্যালিফোর্নিয়া যাচ্ছে। মনোহর আর সৌমিয়া দুজনেই অনেকক্ষণ কথা বলে আবেগের সাথে, মনোহর সৌমিয়াকে নিজের আকৃষ্ট করার অনেক চেষ্টা করে। সিনেমার শেষ দিকে মনোহর সৌমিয়াকে আর বালা মিনুকে বিয়ে করে।
অভিনয়ে
- মামুট্টি - মেজর বালা
- অজিত কুমার - মনোহর
- তাবু - সৌমিয়া (অভিনেত্রী রেবতী দ্বারা কণ্ঠ ডাবিংকৃত)
- ঐশ্বর্যা রাই - মীনাক্ষী "মিনু" (ডাবিং শিল্পী জয়গীতা দ্বারা কণ্ঠ ডাবিংকৃত)
- আব্বাস - শ্রীকান্ত (অভিনেতা বিক্রম দ্বারা কণ্ঠ ডাবিংকৃত)
- মণিভন্নন - শিবাগননম
- শ্রীবিদ্যা - পদ্মা
- রঘুবরণ - সৌমিয়ার কোম্পানির বস
- নিড়ালগাল রবি - স্বামীনাথান
- শামিলি - কমলা
- উন্নীকৃষ্ণন নাম্বুদিরি - চন্দ্রশেখর
- কুমারী রুক্মিণী - শিবাগননমের মা
- অনিতা রত্নম - সৌমিয়ার রাগী মসী
- পূজা বাত্রা - নন্দিনী বর্মা
- দিনো মোরিয়া - ক্যাপ্টেন বিনোদ
- মোহন রমণ - শ্রীকান্তের সহকারী
- এন মাত্রুবুদাম - মনোহরের পিতা
- শ্রীরা রবি - সৌমিয়ার গর্ভবতী সহকর্মী
- চলচ্চিত্রটির সঙ্গীত পরিচালক এ আর রহমান নিজ চরিত্রে আবির্ভূত হন, এছাড়া সঙ্গীতকার গঙ্গই অমর এবং সেন্থিল অতিথি চরিত্রে ছিলেন।
তথ্যসূত্র
- Krishna, Sandya (মে ২০০০)। "The Kandu Kondaen Kandu Kondaen Special" (ইংরেজি ভাষায়)। Indolink। ২০১১-০৬-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০১-০৩।
- "Rahman does it again" (ইংরেজি ভাষায়)। Rediff। ৭ সেপ্টেম্বর ২০০০। ১৪ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০১-০৩।
- Gupta, Shubhra (৩ নভেম্বর ২০০০)। "Catering to a larger audience" (ইংরেজি ভাষায়)। Indolink.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০১-০৩।
- Kamath, Sudhish (৯ নভেম্বর ২০০০)। "West End success story" (ইংরেজি ভাষায়)। The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০১-০৩।
- "Shankar Mahadevan Awards & Nominations, National Awards, Filmfare Awards, Cine Awards, IIFA, Screen Awards" (ইংরেজি ভাষায়)। entertainment.oneindia.in। ৫ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৮-১৪।