কাঠবিড়ালী (চলচ্চিত্র)

এই ছায়াছবির প্রধান দুইটি চরিত্র কলেজ পড়ুয়া কাজল ও হাসু'র ভূমিকায় রয়েছেন অর্চিতা স্পর্শিয়া ও আসাদুজ্জামান আবীর।[12][13] প্বার্শ চরিত্র রূপদান করেছেন সাইদ জামান শাওন, শিল্পী সরকার অপু, একে আজাদ সেতু, শাহরিয়ার ফেরদৌস সজীব, হিন্দোল রায়, তানজিনা রহমান তাসনিম, ফকির সাহেব প্রমুখ[2][14][15] অভিনয়ের জন্য শিল্পী ও কলাকুশলীরা কোন পারিশ্রমিক নেননি।[5][16] চরিত্র অনুযায়ী অভিনয় শিল্পীদের ভূমিকা নিম্নরূপ-

আদিত্য মনির 'কাঠবিড়ালী'র চিত্র গ্রহণ করেছেন।[4][17] সম্পাদনা করেছেন আশিকুর রহমান সুজন। রংবিন্যাস করেছেন রাশেদুজ্জামান সোহাগ ও লিয়ন রোজারিও। শব্দ গ্রহণ করেছেন রিপন নাথ।[18] আদেল ইমাম অনুপ শিল্প নির্দেশনা দিয়েছেন। কে এম কনক এই চলচ্চিত্রের প্রধান সহকারী পরিচালকের কাজ করেছেন। কল্লোল কবির, কামরুল জিন্নাহ,ও ফ্রাঙ্ক উইলসন তালুকদার এই চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালকের কাজ করেছেন। লোগো ও পোস্টার তৈরী করেছেন লিটন কর।[19]

কাঠবিড়ালী'র সকল গান ছায়াচিত্রটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান চিলেকোঠা ফিল্মস, পরিবেশক জাজ মাল্টিমিডিয়া, এম রেকর্ডস ও প্রথম আলো পত্রিকার আনুষ্ঠানিক ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হয়[7]-

• সুন্দর কন্যা গানটি ০৮ জানুয়ারি, ২০২০-এ অবমুক্ত করা হয়।[27][28][29][30] এই গান অবমুক্তির মাধ্যমে কাঠবিড়ালী'র সঙ্গীত প্রকাশ শুরু হয়।[25][31]
• পতি শিরোনামে নয়ানচাঁদ ঘোষের 'তোমারে দেখিবো আমি' গানটি ১৫ জানুয়ারি, ২০২০ তারিখে অবমুক্ত হয়।[32]
• জীবন যায় গানটি ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ তারিখে অবমুক্ত করা হয়।[33]

মার্চ, ২০১৯-এ চিলেকোঠা ফিল্মস মুক্তির আগ পর্যন্ত প্রতি শুক্রবার এই চলচ্চিত্রের ফেসবুক পাতায় প্রচারণা চালানোর ঘোষণা দেয়।[3][14] পর্যায়ক্রমে চলচ্চিত্রটির লোগো ও কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়।[4] ১৭ অক্টোবর, ২০১৯-এ চিলেকোঠা ফিল্মস তাদের আনুষ্ঠানিক ইউটিউব চ্যানেলে এক মিনিট আঠারো সেকেন্ডের একটি 'টিজার' প্রকাশের মাধ্যমে চলচ্চিত্রটির আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করে।[2][19][22][23] ৯ ডিসেম্বর, ২০১৯-এ চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড হতে বিনা কর্তনে প্রদর্শনের ছাড়পত্র পায়।[17][34][35][36] ট্রেইলার ও পোস্টার প্রকাশের পাশাপাশি পত্রপত্রিকা ও গণমাধ্যমে ছবির পরিচালক ও অভিনেতাগণ প্রচারণামূলক সাক্ষাৎকার দেন।[37]

 বাংলাদেশ: চলচ্চিত্রটির পূর্ণ চিত্রগ্রহণ পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার গজারমারা গ্রামে করা হয়, তাই গজারমারা গ্রামবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা সরূপ ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৯-এ চলচ্চিত্রটির প্রথম প্রদর্শনী গজারমারায় উম্মুক্ত মাঠে করা হয়।[38][39] একইদিন পাবনার 'লাবণী' প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়া হয়।[6] ১৭ জানুয়ারি, ২০২০ সালে চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশের ১৮টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেয়া হয়।[8][40][41][42][43][44] কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহে কাঠবিড়ালীর প্রদর্শনী তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত চলে।[45] প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি ছাড়াও চলচ্চিত্রটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ আয়োজিত "আমার ভাষার চলচ্চিত্র-১৪২৬" উৎসবে ১৯টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের সাথে প্রদর্শিত হয়।[46]

  সুইজারল্যান্ড: ২৫ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি,২০২০ তারিখে চলচ্চিত্রটি সুইজারল্যান্ডের জুরিখের বাংলা স্কুলের হলরুমে দুইটি প্রদর্শনী করা হয়।[10][47]

২৪ এপ্রিল, ২০২০ তারিখে হইচই-এ উম্মুক্ত করার মাধ্যমে প্রথম বারের মত কোন ভিডিও স্ট্রিমিং মাধ্যমে মুক্তি দেয়া হয়।[48][49] ২০২১ সালের ১৮ মে, ঈদুল ফিতরের সপ্তাহে চলচ্চিত্রটি প্রথমবারের মত টেলিভিশন দর্শকদের জন্য চ্যানেল আইয়ের মাধ্যমে উম্মুক্ত করা হয়।[50]

কাঠবিড়ালী মুক্তির পূর্বেই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড-এর সদস্যদের প্রশংসা পায়। সেন্সর বোর্ডের সদস্য নিজামুল কবীর কাঠবিড়ালী সম্পর্কে "ভালো গল্প। ছবিটি দেখতে দর্শকের মোটেও বিরক্তি আসবে না। নির্মাণও চমৎকার। সময়োপযোগী ছবি।" মর্মে মন্তব্য করেন।[36]

বৃহৎ পরিষরে মুক্তির পর কাঠবিড়ালী সমালোচক ও দর্শকদের ইতিবাচক অভ্যর্থনা পায়। সমালোচকরা সামগ্রিকভাবে কাঠবিড়ালী ছায়াছবির গল্প, অভিনয় শিল্পী নির্বাচন, অভিনয়, সঙ্গীতায়োজন, আবহ সঙ্গীতের ব্যবহার, গ্রামের অকৃত্রিম দৃশায়ন, পরিচালকের কাজের প্রশংসা করেছেন-

সমালোচকদের মূল্যায়ন
পর্যালোচনা স্কোর
সমালোচক	সূত্র	রেটিং
মাহফুজুর রহমান	বাংলা ট্রিবিউন
মাহাবুবুর রহমান সুমন	বার্তা২৪.কম
ফাহিম মনতাসির	বাংলা মুভি ডেটাবেজ
রহমান মতি
	আইএমডিবি[51]

• প্রথম আলো পত্রিকায় সমালোচক জিনাত শারমিন এই চলচ্চিত্রকে এক কথায় "প্রথম অর্ধেক নিছক প্রেমের ছবি, বাকিটা ক্রাইম থ্রিলার" হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সামগ্রিকভাবে তিনি এই চলচ্চিত্রের চরিত্র গুলির জন্য শিল্পী নির্বাচন, প্রতিটি সঙ্গীত, সঙ্গীতায়জন ও দৃশ্যায়ন, গজারমারা গ্রামের বৈচিত্রময় উপস্থাপন, চিত্রগ্রহণ, পোশাক ও শিল্প নির্দেশনার প্রশংসা করেন।[1]
• সমালোচক জাহিদ আকবর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকায় নিয়ামুল মুক্তার পরিচালনা সম্পর্কে "কোথাও প্রথম ছবি বানানোর অদক্ষতা চোখে পড়েনি" মর্মে মন্তব্য করেন। তিনি সামগ্রিকভাবে মুখ্য চরিত্রগুলির অভিনয়, আবহ সঙ্গীত, গ্রাম বাংলার চিত্রায়নের প্রশংসা করেন।[9]
• বার্তা২৪.কম-এ মাহাবুবুর রহমান সুমন 'কাঠবিড়ালী'র পরিচালনা সম্পর্কে "সিনেমার নির্মাণ দেখলে মনে হওয়ার উপায় নেই এই সিনেমাটি পরিচালক নিয়ামুল মুক্তার প্রথম সিনেমা। খুব যত্নে আর সময় নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘কাঠবিড়ালী’" মন্তব্য করেন। তিনি তার সমালোচনায় চলচ্চিত্রের গল্প, অভিনয়, গান, আবহ সঙ্গীত, শব্দ ও দৃশ্য সম্পাদনা, প্রস্ফুটন, আলোর ব্যবহার নিয়ে আলোকপাত করেন এবং সামগ্রিকভাবে রেটিং করেন।[52]
• কাঠবিড়ালী নিয়ে বাংলা মুভি ডেটাবেজ-এ দুইটি ভিন্ন সমালোচনা প্রকাশিত হয়। একটি সমালোচনায় ফাহিম মনতাসির এই ছায়াচিত্রের গল্প সম্পর্কে লিখেছেন- "খুবই ভালো গল্পের একটি ছবি, যার শুরুটা সাদামাটা হলেও ধীরেধীরে শক্তপোক্ত হয়েছে।" তিনি রেটিং প্রদান করেন। অপর সমালোচনায় রহমান মতি এই ছবিকে '২০২০ সালের প্রথম মানসম্মত সুনির্মিত ছবি' আখ্যা দেন। তিনি রেটিং প্রদান করেন।[53][54]
• বাংলা ট্রিবিউনে মাহফুজুর রহমান তার সমালোচনায় মন্তব্য করেন- "‘কাঠবিড়ালী’র গল্প শেষদিকে দর্শকদের একটা ধাক্কা দিতে সক্ষম হয়। এই ধাক্কাটা না থাকলে দর্শকরা অতৃপ্ত হয়েই থিয়েটার ছাড়তেন"। ছায়াচিত্রটি এই সমালোচকের কাছ থেকে রেটিং অর্জন করে।[34]
• প্রথম আলো-তে নির্মাতা আবু শাহেদ ইমন তার সমালোচনায় কাঠবিড়ালীকে এক কথায় ‘আধুনিক গ্রামে সম্পর্কের ট্র্যাজেডি’ অবহিত করেন। তার মতে "সম্ভাবনার বিচারে কাঠবিড়ালী সমালোচক গুণমান ও বাণিজ্যিক—এই দুই উপাদানেই নির্মিত"। তিনি সামগ্রিকভাবে কুশীলবদের অভিনয়, সঙ্গীতায়জন, শব্দগ্রহণ, চিত্রগ্রহণ, রংবিন্যাস, চিত্রনাট্য ও সংলাপ, সম্পাদনা ও সর্বপোরি চিত্র পরিচালনার প্রশংসা করেন।[18]

জানুয়ারি,২০২০-এ বৃহৎ কলেবরেকাঠবিড়ালী মুক্তি দেয়ার চারমাসের মধ্যে চলচ্চিত্রটিতে লগ্নিকৃত টাকা উঠে আসে। চলচ্চিত্রটি 'ব্যবসা সফল চলচ্চিত্র' হিসেবে বিবেচিত।[55]