কাটরা, জম্মু ও কাশ্মীর
কাটরা বা কাটরা বৈষ্ণবী দেবী হলো উত্তর ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের রিয়াসি জেলায় অবস্থিত একটি ছোটো শহর। শহরটি ত্রিকূট পর্বতের পাদদেশে অবস্থিত। জম্মুর বৈষ্ণবী দেবী মন্দিরটি এখানেই অবস্থিত, যা জম্মু শহর থেকে ৪২ কিলোমিটার দূরে।
কাটরা | |
---|---|
মন্দির নগর | |
কাটরা কাটরা | |
স্থানাঙ্ক: ৩২°৫৯′২২″ উত্তর ৭৪°৫৬′০″ পূর্ব | |
রাষ্ট্র | ভারত |
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল | জম্মু ও কাশ্মীর (কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল) |
জেলা | রিয়াসি |
উচ্চতা | ৮৭৫ মিটার (২,৮৭১ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১)[1] | |
• মোট | ৯,০০৮ |
ভাষা | |
• দাপ্তরিক | উর্দু[2] |
• সহদাপ্তরিক ও অন্যান্য | ডোগরি, হিন্দি, পাঞ্জাবি[2] |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+০৫:৩০) |
যানবাহন নিবন্ধন | JK, জেকে |
সাক্ষরতার হার | ৭০% |
ভূগোল
কাটরা শহরটি ৩২.৯৮° উত্তর ৭৪.৯৫° পূর্ব স্থানাঙ্কে অবস্থিত।[3] এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে গড়ে ৮৭৫ মিটার বা ২৪৭৪ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। বানগঙ্গা নদী এই শহরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত।
ভূতাত্ত্বিকগণ মতে কাটরাসহ আশেপাশে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে খনিজ তৈলভাণ্ডার থাকার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছেন।[4]
জনতত্ত্ব
২০১১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের জণনগণনা অনুসারে কাটরা শহরের জনসংখ্যা ৯০০৮ জন, যেখানে ৫১০৬ জন পুরুষ ও ৩৯০২ জন নারী। এখানে প্রতি ১০০০ পুরুষে নারী সংখ্যা ৭৬৪ জন নারী, যা ভারতের ও জম্মু-কাশ্মীরের লিঙ্গানুপাতের পরিসংখ্যান থেকে বেশ কম। ছয় বৎসর অনূর্ধ্ব শিশু সংখ্যা ১০১২ জন, যা সমগ্র জনসংখ্যার ১১.২৩ শতাংশ। শিশুদের মধ্যে লিঙ্গানুপাত প্রতি ১০০০ পুরুষে ৮১৪ জন নারী। ছয় বৎসরোর্ধ্ব জনসংখ্যার মধ্যে ৮৫.৫৬ শতাংশ তথা ৬৮৪১ জন সাক্ষর। শহরটিতে কার্যকরী পুরুষ সাক্ষরতার হার ৮৯.১৬ শতাংশ ও নারী সাক্ষরতার হার ৮০.৮০ শতাংশ। শহরটিতে তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতির সংখ্যা যথাক্রমে ১৯২৫ জন এবং ৯ জন। ২০১১ খ্রিস্টাব্দের সমীক্ষা অনুসারে কাটরা শহরে মোট ১৫৯৪টি পরিবার বসবাস করে।[1]
পরিবহন
শহরটি বহুদিন থেকে স্থানীয় রাস্তা ও একাধিক রাজ্য মহাসড়কের মাধ্যমে রাজ্যে বিভিন্ন স্থানের সাথে সংযুক্ত। সাম্প্রতিককালে কাটরা (স্থানীয় বানান কটড়া) শহরটি রেলপথে ভারতীয় রেলের অন্তর্ভুক্ত হয়। ভারতের উত্তর রেলের অন্তর্গত জম্মু থেকে উধমপুর ও শ্রীনগর হয়ে বারমুলা অবধি বিস্তৃত জম্মু–বারমুলা রেলপথটি কাটরা রেলওয়ে স্টেশনটির সাথে রেলপথে ভারতের রেল সংযোগকে সুদৃঢ় করেছে। ২০১৪ খ্রিস্টাব্দের ৪ঠা জুলাই তৎকালীন ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই স্টেশনটি উদ্বোধন করেন।[5]
পর্যটন
জম্মুর বৈষ্ণবী দেবী মন্দিরের পর্বতে ওঠার প্রথম গিরিপাদ ঘাঁটি হলো কাটরা। পর্যটকদের আগমনের কারণে এখানে বিভিন্ন দরের বিলাসবহুল আবাসস্থল, অতিথিশালা ও রেস্তোরাঁ রয়েছে। কিছু নিবন্ধিত সংস্থা এখানে গরীবদের জন্য লঙ্গরখানার আয়োজনও করে থাকে। দেবীর প্রতিমা দর্শনের জন্য বহুসংখ্যক পূণ্যার্থীর আগমন হয় এখানে। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে ১.৪ মিলিয়ন থেকে পর্যটক সংখ্যা ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে বৃদ্ধি পেয়ে ৮.২ মিলিয়ন হয়েছে। বহুবছর ধরেই এখানে শুষ্কফল, শাল, হোশিয়ারী দ্রব্য, চামড়া জ্যাকেট ও উলের বস্ত্র কেনার একটি বাজার রয়েছে, যা পর্যটকদের কাছে একইরকম সমাদৃৃৃত। কাটরা থেকে মন্দির অবধি ১৪ কিলোমিটার পর্বতারোহণের অনুমতির জন্য কাটরা থেকেই একটি ছাড়পত্র ও ১,০০,০০০ ভারতীয় টাকার সীমা পর্যন্ত জীবন বীমা দেওয়া হয়। এছাড়াও বৈষ্ণবীদেবী মন্দির থেকে ২.৫ কিলোমিটার দূরে ভৈরবনাথ মন্দির অবধি পর্বতারোহণের আলাদা ব্যবস্থাও আছে। এখানে ঘোড় সওয়ার, রজ্জুপথ ও হেলিকপ্টারের ব্যবস্থাও রয়েছে। রজ্জুপথে ঘণ্টায় ৮০০ জন যাতায়াত করতে পারেন ও প্রতি তিন মিনিটে বৈষ্ণবীদেবী মন্দির থেকে ভৈরবনাথ মন্দির যাওয়ার সুবিধা আছে।
তথ্যসূত্র
- "Census of India: Katra"। www.censusindia.gov.in। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০১৯।
- "52nd REPORT OF THE COMMISSIONER FOR LINGUISTIC MINORITIES IN INDIA" (পিডিএফ)। nclm.nic.in। Ministry of Minority Affairs। ২৫ মে ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০১৯।
- "Maps, Weather, and Airports for Katra, India"। www.fallingrain.com। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১৯।
- Naqvi, Jawed (২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৮)। "Joint search for oil in Kashmir"। DAWN.COM। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১৯।
- "Modi flags off inaugural train from Katra"। ৪ জুলাই ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১৯ – www.thehindu.com-এর মাধ্যমে।