কাচ

কাচ হলো বহুবিধ ব্যবহারিক, প্রযুক্তিগত এবং আলংকারিক প্রয়োগসমৃদ্ধ অ-স্ফটিক স্বচ্ছ নিরাকার কঠিন বস্তুজানালা, টেবিল সামগ্রী, আলোকবিজ্ঞান ইত্যাদি ক্ষেত্রে কাচের ব্যবহার রয়েছে। সাধারণত গলিত অবস্থা থেকে দ্রুত শীতলীকরণের মাধ্যমে কাচ তৈরি করা হয়, তবে আগ্নেয়গিরির কাচ মূলত প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়। কাচের সর্বাধিক পরিচিত এবং প্রাচীনতম প্রকারভেদ হলো বালির প্রাথমিক উপাদান সিলিকা (সিলিকন ডাই অক্সাইড, বা কোয়ার্টজ) ভিত্তিক "সিলিকেট কাচ"। প্রায় ৭০% সিলিকা সমন্বিত সোডা-লাইম কাঁচ হলো মোট উৎপাদিত কাঁচের প্রায় ৯০%। কাচ শব্দটি প্রায়শই কেবল এইধরনের উপাদানের জন্য ব্যবহৃত হলেও আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তিতে ব্যবহারের জন্য কাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্যসমূহ প্রায়শই সিলিকা মুক্ত কাচে বিদ্যমান থাকে। কিছু বস্তু, যেমন পানির গ্লাস এবং চশমা, সাধারণত সিলিকেট-ভিত্তিক কাচ দিয়েই তৈরি হয় বলে এগুলোকে কেবল উপাদানটির নামে কাচ/গ্লাস ডাকা হয়।

একটি কাচের ভবনের সম্মুখ

ভঙ্গুর হলেও সিলিকেট গ্লাস অত্যন্ত টেকসই এবং কাচ নির্মাণকারী প্রাথমিক সংস্কৃতির কাঁচের টুকরোর অনেকগুলো উদাহরণ পাওয়া গিয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ অনুযায়ী, মেসোপটেমিয়া, মিশর বা সিরিয়ায় কমপক্ষে খ্রিস্টপূর্ব ৩,৬০০ বছর পূর্বে কাচ তৈরি শুরু হয়েছিল। প্রাচীনতম কাচের বস্তু হলো পুঁতি, যা সম্ভবত ধাতব কাজ করার সময় বা মাটির পাত্র উৎপাদনের সময় ভুলক্রমে তৈরি হয়েছিল। যে কোনও আকার দেওয়ার সক্ষমতা থাকার কারনে পাত্রসামগ্রী যেমন বাটি, ফুলদানি, বোতল, জার এবং পানির গ্লাস ইত্যাদিতে ঐতিহাসিকভাবে কাচ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর সর্বাধিক কঠিন অবস্থায় এটি পেপারওয়েট এবং মার্বেলের জন্য ব্যবহৃত হয়। ধাতব লবণ যোগ করে বা কলাইকৃত কাচ হিসাবে রঙ এবং মুদ্রণ করে কাচকে রঙিন করা যায়।কাচের প্রতিসারক, প্রতিফলক এবং প্রেষণ বৈশিষ্ট্যসমূহ কাচকে আলোক লেন্স, প্রিজম এবং আলোকতড়িৎ বিজ্ঞানের সামগ্রী প্রস্তুতের জন্য উপযুক্ত করে তোলে। কাচ তন্তুসমূহ যোগাযোগ নেটওয়ার্কে অপটিক্যাল ফাইবার হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

প্রকৃতিতে প্রাপ্তি

আগ্নেয়গিরির ম্যাগমা থেকে প্রাকৃতিকভাবে কাচ গঠিত হতে পারে। ওবিসিডিয়ান হলো উচ্চতর সিলিকাযুক্ত (SiO2) একটি সাধারণ আগ্নেয়গিরির কাচ যা আগ্নেয়গিরি থেকে বেরিয়ে আসা ফেলাসিক লাভা দ্রুত ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়ার ফলে নির্মিত হয়।[1] ইমপ্যাকটাইট হলো উল্কাপিণ্ডের আঘাতের ফলে গঠিত কাচের একটি ধরন। মোলডাভাইট (মধ্য এবং পূর্ব ইউরোপে পাওয়া যায়), এবং লিবিয়ার মরুভূমির কাচ (পূর্ব সাহারা, পূর্ব লিবিয়ান মরুভূমি এবং পশ্চিম মিশরে পাওয়া যায়) হলো এর উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।[2] বজ্রপাত বালিতে আঘাত করলে কোয়ার্টজ এর কাচীভূতকরণের মাধ্যমে ফাপা শাখা প্রশাখার মত কাঠামোবিশিষ্ট ফুলগুরাইট তৈরি হতে পারে।[3] ট্রিনিটাইট হলো ট্রিনিটি পারমাণবিক বোমা পরীক্ষার জায়গায় মরুভূমির বালু থেকে তৈরি কাচযুক্ত অবশিষ্টাংশ।[4] দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় পাওয়া এডিউই কাচ প্লাইস্টোসিন যুগে তৃণভূমির আগুন, বজ্রপাত, বা এক বা একাধিক গ্রহাণু বা ধূমকেতুর অতি উচ্চ গতির আঘাতের ফলে উৎপন্ন হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।[5]

ভৌত বৈশিষ্ট্য

প্রকারভেদ

১)সিলিকা গ্লাস ২)সোডা লাইম সিলিকা গ্লাস ৩)লেড অ্যালকালি সিলিকা গ্লাস ৪)বোরো সিলিকেট গ্লাস ৫)অ্যালুমিনো সিলিকেট গ্লাস ৬)স্পেশাল গ্লাস

উৎপাদন

ব্যবহার

তথ্যসূত্র

  1. "Obsidian: Igneous Rock – Pictures, Uses, Properties"geology.com
  2. "Impactites: Impact Breccia, Tektites, Moldavites, Shattercones"geology.com
  3. Klein, Hermann Joseph (১৮৮১-০১-০১)। Land, sea and sky; or, Wonders of life and nature, tr. from the Germ. [Die Erde und ihr organisches Leben] of H.J. Klein and dr. Thomé, by J. Minshull
  4. Giaimo, Cara (জুন ৩০, ২০১৭)। "The Long, Weird Half-Life of Trinitite"Atlas Obscura (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ৮, ২০১৭
  5. Roperch, Pierrick; Gattacceca, Jérôme; Valenzuela, Millarca; Devouard, Bertrand; Lorand, Jean-Pierre; Arriagada, Cesar; Rochette, Pierre; Latorre, Claudio; Beck, Pierre (২০১৭)। "Surface vitrification caused by natural fires in Late Pleistocene wetlands of the Atacama Desert"Earth and Planetary Science Letters469 (1 July 2017): 15–26। ডিওআই:10.1016/j.epsl.2017.04.009বিবকোড:2017E&PSL.469...15R

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.