কাংড়ি ভাষা
কাংড়ি ভাষা (টাকরী: 𑚊𑚭𑚫𑚌𑚪𑚯) পশ্চিমা পাহাড়ী ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত একটি ভাষা, যা মূলত উত্তর ভারতের হিমাচল প্রদেশ রাজ্যের কাংড়া, হামিরপুর এবং উনা জেলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ লোক ও পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর এবং হোশিয়ারপুর জেলার অল্প সংখ্যক লোকের মাতৃভাষা৷[2] এটি মূলত কাংড়া উপত্যকা অঞ্চলের কথ্য ভাষা৷ ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে ১৭ লক্ষ লোকের মাতৃভাষা ছিলো এটি[2] কিন্তু জন সচেতনতার অভাবে উনা ও হামিরপুরের বিপুল সংখ্যক লোক নিজেদের হিন্দি এবং পাহাড়ী ভাষা (পাহাড়ি মূলত হিমাচলের ভাষাগুলিকে একত্রিত করতে কেন্দ্রীয় সরকার প্রবর্তিত নাম) বলে উল্লেখ করেছেন৷ ২০১১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুসারে ১১,১৭,৩৪২ জন এই ভাষাকে নিজের ভাষা চিহ্নিত করেছেন,[3] যেখানে ২০০১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনায় ১১,২২,৮৪৩ জন এটিকে নিজের মাতৃভাষা চিহ্নিত করেছিলেন৷[4]
কাংড়ি | |
---|---|
𑚊𑚭𑚫𑚌𑚪𑚯, कांगड़ी | |
দেশোদ্ভব | ভারত |
অঞ্চল | হিমাচল প্রদেশ, পাঞ্জাব |
মাতৃভাষী | ১১.২ লক্ষ (২০১১)
|
কাংড়ি টাকরী, দেবনাগরী | |
ভাষা কোডসমূহ | |
আইএসও ৬৩৯-৩ | xnr |
গ্লোটোলগ | kang1280 [1] |
ইন্দো-আর্য ভাষাগোষ্ঠীর মধ্যে কাংড়ি ভাষার অবস্থান নিয়ে যথেষ্ট মত বিরোধ রয়েছে৷ কিছু বিদ্বজ্জনের মতে এটি পশ্চিমের ডোগরি ভাষারই একটি প্রলম্বিত উপভাষা ফলে এটি বৃহত্তর পাঞ্জাবি ভাষার অন্তর্ভুক্ত৷ আবার কারো মতে এটি একটি পশ্চিমা পাহাড়ী ভাষা এবং মাণ্ডিয়ালী, চম্বিয়ালী, কুলুবি প্রভৃতি পাহাড়ি ভাষাগুলির অনুরূপ৷[5]
লিপি
কাংড়ি ভাষার জন্য ব্যবহৃত মূল লিপি হলো টাকরী লিপির একটি বিশেষ স্থানীয় প্রকার, যা কাংড়ি-টাকরী লিপি নামে পরিচিত৷ তবে ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর দেবনাগরী লিপি এই লিপিটিকে প্রতিস্থাপিত করে৷
জনসংখ্যা
কাংড়ি ভাষাভাষী লোক মূলত কাংড়া উপত্যকায় সীমাবদ্ধ৷ ভারতে কাংড়ি ভাষাভাষীর সংখ্যা ১১,১৭,৩৪২ জন৷ ঐতিহাসিকভাবে উনা এবং হামিরপুর জেলা দুটিও কাংড়িভাষী জেলা তবে ভাষাবিষয়ক জনসচেতনতার অভাব রয়েছে।
- ভারত - ১১,১৭,৩৪২
- হিমাচল প্রদেশ - ১১,১৫,৩৮৩ (১৬.২৫%)
- কাংড়া জেলা - ১০,৭০,৩৬৫ (৭০.৮৮%)
- নূরপুর ব্লক - ৫৭,০০২ (৩২.২৯%)
- ইন্দোরা ব্লক - ৩০,৮১৮ (৩৭.৯৪%)
- ফতেপুর ব্লক - ৫৭,৫৬২ (৯২.৭৮%)
- জওয়ালি ব্লক - ১,০৪,০৭৪ (৯২.৩১%)
- হরচাকিয়াঁ ব্লক - ১৩,৩০৬ (৯৬.১৩%)
- শাহপুর ব্লক - ৫৭,৭১৯ (৮৫.১৮%)
- ধর্মশালা ব্লক - ৬৮,৪৯৭ (৫০.১৬%)
- কাংড়া ব্লক - ৭৮,৭৭২ (৮০.৭৭%)
- নগরোটা বাগোয়ান ব্লক - ৭২,৫৬৭ (৯৪.৩৭%)
- বারো ব্লক - ২৫,৫৩০ (৯৮.৯৯%)
- দেরা গোপীপুর ব্লক - ১,০৮,২১৫ (৮৯.৫৯%)
- জ্বালামুখী ব্লক - ৩২,৫৮৪ (৭৪.৯০%)
- যশোয়া ব্লক - ৪,৫০১ (১৩.৮৫%)
- রাক্কার ব্লক - ২৪,১১১ (৮১.৭২%)
- কুণ্ডিয়ান ব্লক - ৩৫,৭৫৩ (৯৩.৫২%)
- থুরাল ব্লক - ১৮,২৭১ (৯৪.৭৩%)
- ধীরা ব্লক - ১৬,৪০৬ (৭৪.১৭%)
- জয়সিংপুর ব্লক - ৫৬,৯৫৬ (৯৩.২৫%)
- পালমপুর ব্লক - ১,৩৯,১০২ (৭৩.৪৯%)
- বৈজনাথ ব্লক - ৬৮,৬১৬ (৭২.০৬%)
- হামিরপুর জেলা - ১৬,১৬৪ (৩.৫৫%)
- গালোর ব্লক - ৪৪৯ (১.৬৭%)
- বারসার ব্লক - ৪,৯৪৯ (৮.৯১%)
- ভোরঞ্জ ব্লক - ৮,৫৭০ (৯.৪৬%)
- সিমলা জেলা - ৮,৫৮৫ (১.০৫%)
- কাংড়া জেলা - ১০,৭০,৩৬৫ (৭০.৮৮%)
বর্তমান অবস্থা
কাংড়ি ভাষাটি সাধারণভাবে পাহাড়ি অথবা হিমাচলি ভাষা নামে পরিচিত। তবে কারো কারো মতে বৃহত্তর পাঞ্জাবির ডোগরি ভাষার একটি উপভাষা। এই ভাষাটি কোন সরকারি পদমর্যাদা নেই এবং এটি বর্তমানে হিন্দি ভাষার একটি উপভাষা হিসেবে পরিগণিত হয়।[6] ইউনেস্কোর তথ্য অনুসারে এই ভাষাটি বিপন্ন ভাষার তালিকাভুক্ত, অর্থ অধিকাংশ কাংড়ি ভাষাভাষী শিশুরা নিজের মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষালাভে অক্ষম।
ভারতের সংবিধানের অষ্টম তফসিলে পাহাড়ী ভাষাগুলির অন্তর্ভুক্তির জন্য ২০১০ খ্রিস্টাব্দে সিংহভাগ সম্মতিতে বিষয়টি রাজ্য বিধানসভায় উপস্থাপিত হয়৷[7] ছোটো ছোট সংস্থাগুলির দাবীকে বাদ দিতে সরকারীভাবে বিশেষ ঐই ভাষাগুলি সংরক্ষণ ও মান্যতা দানের কোনো বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি৷[8] রাজনৈতিক প্রভাবে ভাষাগুলির অধিকাংশের সাথেই হিন্দি ভাষাগোষ্ঠীর কোনরূপ পারস্পরিক সম্পর্ক না থাকলেও পাহাড়ি এই ভাষাগুলি হিন্দি ভাষার অন্তর্গত একেকটি উপভাষা হয়ে রয়েছে৷ সরকারী মান্যতা প্রাপ্ত ডোগরি ভাষার সহিত এর মিল রয়েছে৷
তথ্যসূত্র
- হ্যামারস্ট্রোম, হারাল্ড; ফোরকেল, রবার্ট; হাস্পেলম্যাথ, মার্টিন, সম্পাদকগণ (২০১৭)। "Kangri"। গ্লোটোলগ ৩.০ (ইংরেজি ভাষায়)। জেনা, জার্মানি: মানব ইতিহাস বিজ্ঞানের জন্য ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট।
- টেমপ্লেট:E20
- "2011 Census tables: C-16, population by mother tongue"। Census of India Website। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০১৮। The precise figure is 1,117,342
- "Census of India: Abstract of speakers' strength of languages and mother tongues –2001"। censusindia.gov.in। The precise number is 1,122,843.
- Eaton 2008, পৃ. 2।
- "India Language Census" (পিডিএফ)।
- "Pahari Inclusion"। Zee News।
- "Pahari Inclusion"। The Statesman। ১৭ নভেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০২০।