করচ

করচ (ইংরেজি: x; বৈজ্ঞানিক নাম: (Dalbergia reniformis) Liguminosae-Fabaceae গোত্রের অন্তর্ভুক্ত, মাঝারি আকারের, বহুবর্ষজীবী, দ্রুত-বর্ধনশীল, ঘন ডালপালা সমৃদ্ধ চিরসবুজ উদ্ভিদ। এটি বাংলাদেশের হাওর, মায়ানমার ও ভারতের গাছ। সাধারণত, বাংলায় করচ। আমাদের হাওর এলাকার একান্তই স্থানীয় গাছ করচ। জলজ বৃক্ষ কথাটা অদ্ভুত শোনালেও এতে অত্যুক্তি নেই নিঃসন্দেহে। হাওরের অথৈ পানিতে অনেকেই গাছটিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে খুব অবাক হন। আসলে সুদীর্ঘকালের জীবনসংগ্রামে পুরো ভেজা মৌসুম জুড়ে, দীর্ঘ সময়--বছরের প্রায় ৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে ভরপুর পানিতে টিকে থাকার জন্য অভিযোজিত হতে হয়েছে তাকে। দেশের নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ (থাকতে পারে মৌলভীবাজার, কিশোরগঞ্জের হাওরেও) ও সিলেটের হাওরগুলোতে অবস্থানকারী বৃক্ষটি খুব একটা উচ্চতা পায় না, মোটের ওপর ১০-১৩ মিটারের মতো। হিজলের মতোই ঝোপালো গড়নের ছোট বা মাঝারি আকারের গাছটি কলোনি করে, অর্থাৎ একসাথে অনেকগুলোকে অবস্থান করতে দেখা যায়। ডালপালা-পাতাবহুল গাছটির কাণ্ড কিছুটি বাদামি-রেশমি।

করচের ফল

বর্ণনা

আকার

১০-১৩ মিটার উচু, ছড়ানো-মাথা, পত্রমোচী গাছ। যৌগপত্র পক্ষল, পত্রিকা ৫-৭টি, গাড় সবুজ। ডালপালা-পাতাবহুল গাছটির কাণ্ড কিছুটি বাদামি-রেশমি। তবে কিছু দিনের মধ্যে কাণ্ডের রেশমি ভাবটি আর থাকে না। পাতাগুলো এর ছোট ছোট, আয়ত-বল্লমাকার, সামান্য পুরু। একেকটি পক্ষলের আকার ১৫-৩২ সেমি, পক্ষলে পাতাসংখ্যা ৭-৯, একান্তর, অর্থাৎ পাতাগুলো একই উৎস থেকে না গজিয়ে একটার পর একটি গজায়। জোড়ায় জোড়ায় ৩-৪ জোড়া জন্মে, আগার ঠিক মাঝখানে একটি, এ-কারণেই চূড়াপক্ষল; গাঢ় সবুজ রঙের চকচকে ও মসৃণ, উল্টোপিঠ ফ্যাকাশে সবুজ, ৬-১০ সেমি লম্বা ও ৩-৫ সেমি চওড়া, বোঁটাধারী, কিনারা সমান বা দাঁতাল নয়, গোড়ার দিকটা গোলাকার, আগায় কিছুটা সুঁচালো

ফুল

ফুলের মৌসুম বসন্ত। ১০-১৩ সেমি লম্বা কাক্ষিক আর বাদামি ও সূক্ষ্ম রোমাবৃত মঞ্জরীদণ্ডে ফুলগুলো সাদা রঙের; ফ্যাবাসি (Fabaceae) পরিবারে যা হয়, শীমফুল আকৃতির, তবে বেশ ছোট। বৃতি ৫-দন্তক, পাপড়ি ঠোঁটের মতো বাঁকানো।

বীজ

ফল উদ্ভিদবিদ্যার ভাষায় শীম, ২.৫-৩ সেমি-এর মতো লম্বা আর ৫-৭ সেমি-এর মতো। এগুলো কিডনির মতো দেখতে। শুকিয়ে গেলে গাঢ় বাদামি রঙ ধারণ করে। বীজ সাধারণত ১টি, তবে ২টিও বিচিত্র নয়। এর বীজগুলোও কিডনির মতো। ফ্যাবাসি পরিবারের অধিকাংশ সদস্যের মতো এরও বংশ বৃদ্ধি চলে বীজের মাধ্যমে।

ব্যবহার

করচের আরেক দেশীয় নাম কুরেস। গাছটির অনেক গুণ। তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ গুণ--ঝড়ঝঞ্ঝা আর প্রবল বাতাস থেকে বসতবাড়িকে রক্ষা করা। এ ছাড়া ভূমিক্ষয় রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। লাকড়ি হিসেবেও ব্যবহার করা চলে। ঔষধি গুণাবলিও রয়েছে নিশ্চয়ই, তবে তা জানা যায়নি।

বিস্তার

"করঞ্জা এবং করচ সম্পূর্ণ ভিন্ন বৃক্ষ। অনেকেই এই ভুলটি করে থাকেন। অনলাইনে সর্বত্র এবং প্রকাশিত অন্যান্য মাধ্যমেও এই ভুলটি পাওয়া যাবে।

আমাদের রাতারগুল জলাবনে করচ গাছের দেখা মেলে, ওগুলো কিন্তু করঞ্জা নয়। আমার ধারণা বাংলাদেশে করচ শুধুমাত্র বৃহত্তর সিলেট, ময়মনসিং, কিশোরগঞ্জ জলাভূমিতেই সীমাবদ্ধ। প্রাসঙ্গিক মতামত আশা করছি।

তথ্যসূত্র

https://www.facebook.com/groups/brikkhokotha/permalink/2586507561480837/

https://www.floraofbangladesh.com/

বহিঃসংযোগ

https://powo.science.kew.org/.../urn:lsid:ipni.org:names... https://en.wikipedia.org/wiki/Dalbergia_reniformis

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.