কম্বোডিয়া জাতীয় ফুটবল দল

কম্বোডিয়া জাতীয় ফুটবল দল (খ্‌মের: ក្រុមបាល់ទាត់ជម្រើសជាតិកម្ពុជា, ইংরেজি: Cambodia national football team) হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফুটবলে কম্বোডিয়ার প্রতিনিধিত্বকারী পুরুষদের জাতীয় দল, যার সকল কার্যক্রম কম্বোডিয়ার ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা কম্বোডিয়া ফুটবল ফেডারেশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।[5] এটি ১৯৭০ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত খ্‌মের প্রজাতন্ত্র জাতীয় ফুটবল দল নামে পরিচিত ছিল। এই দলটি ১৯৫৪ সাল হতে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার এবং একই বছর হতে তাদের আঞ্চলিক সংস্থা এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের সদস্য হিসেবে রয়েছে।[6][7][8] ১৯৫৬ সালের ১২ই মার্চ তারিখে, কম্বোডিয়া প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করেছে; মালয়ের কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত উক্ত ম্যাচে কম্বোডিয়া মালয়ের কাছে ৯–২ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে।

কম্বোডিয়া
ডাকনামអ្នកចម្បាំងអង្គរ (অ্যাংকর যোদ্ধা)[1]
គោព្រៃកម្ពុជា (কুপ্রে কাম্পুচেয়া)
অ্যাসোসিয়েশনকম্বোডিয়া ফুটবল ফেডারেশন
কনফেডারেশনএএফসি (এশিয়া)
প্রধান কোচহন্ডা কেস্‌কে
অধিনায়কসোয় ভিসাল
সর্বাধিক ম্যাচকুচ সকুম্পেক (৫৯)
শীর্ষ গোলদাতাহক সুচেত্রা (২০)
মাঠনমপেন অলিম্পিক স্টেডিয়াম
ফিফা কোডCAM
ওয়েবসাইটwww.ffcambodia.com
প্রথম জার্সি
দ্বিতীয় জার্সি
ফিফা র‌্যাঙ্কিং
বর্তমান ১৭১ অপরিবর্তিত (৩১ মার্চ ২০২২)[2]
সর্বোচ্চ১৫৩ (মার্চ ২০১১)
সর্বনিম্ন১৯৮ (আগস্ট ২০১৪)
এলো র‌্যাঙ্কিং
বর্তমান ২০৫ বৃদ্ধি ৩ (৩০ এপ্রিল ২০২২)[3]
সর্বোচ্চ৮৪ (নভেম্বর ১৯৭২)
সর্বনিম্ন২২৩ (মার্চ ২০১৩)
প্রথম আন্তর্জাতিক খেলা
 মালয় ৯–২ কম্বোডিয়া 
(কুয়ালালামপুর, মালয়; ১৭ মার্চ ১৯৫৬)[4]
বৃহত্তম জয়
 কম্বোডিয়া ১১–০ উত্তর ইয়েমেন 
(নমপেন, কম্বোডিয়া; ২৯ নভেম্বর ১৯৬৬)
বৃহত্তম পরাজয়
 ইরান ১৪–০ কম্বোডিয়া 
(তেহরান, ইরান; ১০ অক্টোবর ২০১৯)
এএফসি এশিয়ান কাপ
অংশগ্রহণ১ (১৯৭২-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যচতুর্থ স্থান (১৯৭২)
এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ
অংশগ্রহণ১ (২০০৬-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যগ্রুপ পর্ব (২০০৬)
এএফএফ চ্যাম্পিয়নশিপ
অংশগ্রহণ৭ (১৯৯৬-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যগ্রুপ পর্ব (১৯৯৬, ২০০০, ২০০২, ২০০৪, ২০০৮, ২০১৬, ২০১৮)

৫০,০০০ ধারণক্ষমতাবিশিষ্ট নমপেন অলিম্পিক স্টেডিয়ামে অ্যাংকর যোদ্ধা নামে পরিচিত এই দলটি তাদের সকল হোম ম্যাচ আয়োজন করে থাকে।[9] এই দলের প্রধান কার্যালয় কম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেনে অবস্থিত। বর্তমানে এই দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন হন্ডা কেস্‌কে এবং অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন প্রেয়াহ খান রিচ ভাত রিংয়ের রক্ষণভাগের খেলোয়াড় সোয় ভিসাল

কম্বোডিয়া এপর্যন্ত একবারও ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। অন্যদিকে, এএফসি এশিয়ান কাপে কম্বোডিয়া এপর্যন্ত মাত্র ১ বার অংশগ্রহণ করেছে, যেখানে তারা শুধুমাত্র গ্রুপ পর্বে অংশগ্রহণ করেছে। এএফএফ চ্যাম্পিয়নশিপে কম্বোডিয়া এপর্যন্ত ৭ বার অংশগ্রহণ করেছে, যেখানে প্রত্যেকবার শুধুমাত্র গ্রুপ পর্বে অংশগ্রহণ করেছে।

সোয় ভিসাল, সস সুহানা, তেয়াব ভাথানাক, হোক সোচেত্রা এবং কুচ সকুম্পেকের মতো খেলোয়াড়গণ কম্বোডিয়ার জার্সি গায়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন।

ইতিহাস

সূচনা

কম্বোডিয়া খ্‌মের প্রজাতন্ত্র জাতীয় ফুটবল দল হিসেবে ১৯৭২ এএফসি এশিয়ান কাপে অংশগ্রহণ করে, উক্ত সময় কম্বোডিয়া এশিয়ার সেরা জাতীয় দলগুলোর মধ্যে একটি ছিল। খ্‌মের প্রজাতন্ত্র জাতীয় ফুটবল দল হিসেবে তারা উক্ত আসরের সেমি-ফাইনালে খেলার জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছিল, সেখানে তারা শুধুমাত্র ইরানথাইল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয়েছিল এবং সামগ্রিকভাবে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছিল। এটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় কম্বোডিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ কৃতিত্ব হিসেবে বিদ্যমান রয়েছে।

১৯৯০–২০১০

দশকের পর দশক যাবত যুদ্ধের পর, যেখানে খ্‌মের রুজের গণহত্যা এবং পরবর্তী ভিয়েতনামী আগ্রাসনের সাক্ষী, কম্বোডিয়া ১৯৯৩ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে পুনরায় ফিরে আসে।

কম্বোডিয়া প্রথমবারের মতো একটি নতুন দল হিসেবে ১৯৯৬ এএফএফ চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করে, যার মধ্যে কম্বোডিয়া চার ম্যাচে পরাজিত হয়েছিল। যদিও কম্বোডিয়া উক্ত আসরে অংশগ্রহণকারী সব দলের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বলতম ছিল, তবুও কম্বোডিয়া ফুটবলের উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রদর্শন করেছে। তবে, ধারাবাহিক প্রতিযোগিতায় কম্বোডিয়া সফল ছিল না এবং তারা উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে খেলা পরিচালনা করতে পারেনি। তা সত্ত্বেও, কম্বোডিয়া হোক সোচেত্রা নামে তাদের ফুটবল ইতিহাসে প্রতিভাধর একজন খেলোয়াড়ের সন্ধান পায়।

২০১০–বর্তমান

কয়েক দশক ধরে ফুটবল থেকে দূরে থাকার পর কম্বোডিয়া ফুটবল আবারো পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। কম্বোডিয়ার পুনরুজ্জীবনের শুরু হয় দক্ষিণ কোরিয়ার লি টি-হুনের আগমনের মাধ্যমে, যা কম্বোডিয়ার ফুটবলের একটি উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের শুরু করেছিল; তিনি দলের কৌশল পরিবর্তন এবং কম্বোডীয় বয়সভিত্তিক জাতীয় দলের কাছে প্রচারের সাথে সাথে, কম্বোডিয়াতে পরিবর্তনের জন্য একটি আশা দিয়েছেন। এই দলে অনেক তরুণ প্রতিভার মধ্যে চ্যান ভাথানাকা অন্যতম ছিলেন, যিনি হচ্ছেন কম্বোডিয়ার বাইরে পেশাদার ফুটবল খেলা প্রথম কম্বোডীয় ছিলেন। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনের সময় কম্বোডিয়া আবারও একটি পূর্ণ আত্মবিশ্বাস দেখিয়েছিল, তবে বাছাইপর্বে কম্বোডিয়া জয়ের মুখ দেখতে পায়নি।

র‌্যাঙ্কিং

ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে, ২০১১ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে কম্বোডিয়া তাদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অবস্থান (১৫৩তম) অর্জন করে এবং ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে তারা ১৯৮তম স্থান অধিকার করে, যা তাদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। অন্যদিকে, বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে কম্বোডিয়ার সর্বোচ্চ অবস্থান হচ্ছে ৮৪তম (যা তারা ১৯৭২ সালে অর্জন করেছিল) এবং সর্বনিম্ন অবস্থান হচ্ছে ২২৩। নিম্নে বর্তমানে ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং এবং বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে অবস্থান উল্লেখ করা হলো:

প্রতিযোগিতামূলক তথ্য

ফিফা বিশ্বকাপ

ফিফা বিশ্বকাপবাছাইপর্ব
সালপর্বঅবস্থানম্যাচজয়ড্রহারস্বগোবিগোম্যাচজয়ড্রহারস্বগোবিগো
উরুগুয়ে ১৯৩০অংশগ্রহণ করেনিঅংশগ্রহণ করেনি
ইতালি ১৯৩৪
ফ্রান্স ১৯৩৮
ব্রাজিল ১৯৫০
সুইজারল্যান্ড ১৯৫৪
সুইডেন ১৯৫৮
চিলি ১৯৬২
ইংল্যান্ড ১৯৬৬
মেক্সিকো ১৯৭০
পশ্চিম জার্মানি ১৯৭৪
আর্জেন্টিনা ১৯৭৮
স্পেন ১৯৮২
মেক্সিকো ১৯৮৬
ইতালি ১৯৯০
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৪
ফ্রান্স ১৯৯৮উত্তীর্ণ হয়নি২৭
দক্ষিণ কোরিয়া জাপান ২০০২২২
জার্মানি ২০০৬অংশগ্রহণ করেনিঅংশগ্রহণ করেনি
দক্ষিণ আফ্রিকা ২০১০উত্তীর্ণ হয়নি
ব্রাজিল ২০১৪
রাশিয়া ২০১৮১০২৮
কাতার ২০২২অনির্ধারিতঅনির্ধারিত
মোট০/২১২৩২১১৬৯০

তথ্যসূত্র

  1. "Cambodia football 2018 Review – Honda engine fails to lift gloom over the Angkor Warriors" (ইংরেজি ভাষায়)। Fox Sports Asia। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। ১৭ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০১৯
  2. "ফিফা/কোকা-কোলা বিশ্ব র‍্যাঙ্কিং"ফিফা। ৩১ মার্চ ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০২২
  3. গত এক বছরে এলো রেটিং পরিবর্তন "বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং"eloratings.net। ৩০ এপ্রিল ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৩০ এপ্রিল ২০২২
  4. "Cambodia matches, ratings and points exchanged"। World Football Elo Ratings: Cambodia। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৬
  5. Ek Madra (৮ অক্টোবর ২০০৭)। "FEATURE-Soccer-Asia's minnows have World Cup mountain to climb"। Reuters। ১২ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৬
  6. "Asian soccer championship next year"The Straits Times। ২৭ মে ১৯৫৪।
  7. "ASIAN SOCCER FINALS IN SINGAPORE May be used as Olympic series"The Singapore Free Press। ৫ অক্টোবর ১৯৫৪।
  8. "Singapore to Meet Indonesia in Asian Soccer Tourney"The Straits Times। ১৪ জুন ১৯৫৫। ৩১ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
  9. "Cambodia football 2018 Review – Honda engine fails to lift gloom over the Angkor Warriors" (ইংরেজি ভাষায়)। Fox Sports Asia। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। ১৭ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০১৯

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.