কম্পাঙ্ক

কম্পাঙ্ক হলো একক সময়ে কোনো পুনরাবৃত্তিমূলক ঘটনা ঘটবার সংখ্যা।[1] অর্থাৎ একটি ঘটনা যদি বারবার ঘটতে থাকে, তবে একক সময়ে ঐ ঘটনাটি যতবার ঘটবে তা হলো ঐ ঘটনার কম্পাঙ্ক।

বিভিন্ন কম্পাঙ্কের সাইন তরঙ্গ। নিচের দিকের তরঙ্গগুলোর কম্পাঙ্ক উপরের দিকের তরঙ্গগুলোর কম্পাঙ্কের চেয়ে বেশি। আনুভূমিক অক্ষ সময় নির্দেশ করছে।
কম্পাঙ্ক
সাধারণ প্রতীক
f, ν
এসআই এককHz
এসআই মৌলিক এককেs−1
মাত্রা

সংজ্ঞা ও একক

কোন পর্যাবৃত্ত গতি (Periodic Motion), যেমন ঘূর্ণন, স্পন্দন বা তরঙ্গ ইত্যাদির ক্ষেত্রে, কম্পাঙ্ক হলো এক সেকেন্ডে সম্পন্ন পূর্ণ স্পন্দনের সংখ্যা।প্রতি সেকেন্ডে বস্তর কম্পন সংখ্যাই ঐ বস্তুর ঐ সময়কার কম্পাঙ্ক। পদার্থবিজ্ঞান এবং প্রকৌশলের বিষয়গুলিতে, যেমন আলোকবিজ্ঞান, বেতার বা শব্দ বিজ্ঞানে,কম্পাঙ্ককে ইংরেজি অক্ষর f বা গ্রিক অক্ষর ν (nu–উচ্চারণ নিউ) দিয়ে প্রকাশ করা হয়।

এসআই এককে কম্পাঙ্কের একক হলো হার্জ, প্রখ্যাত জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী হাইনরিখ হার্জের নামানুসারে। এই একককে প্রথমদিকে পূর্ণস্পন্দন প্রতি সেকেন্ড বলা হতো। যেহেতু স্পন্দনকে শুধুমাত্র সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করা হয়, তাই কম্পাঙ্কের একক অনেক সময় : বা সময়−১ দিয়ে লেখা হয়[2]তরঙ্গের বেলায় তরঙ্গ দ্রুতিকে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য দিয়ে ভাগ করে তরঙ্গের কম্পাঙ্ক পাওয়া যায়। হৃৎস্পন্দন এবং সাংগীতিক তাল মাপা হয় বিপিএম (BPM-বিটস পার মিনিট) বা প্রতি সেকেন্ডে বিট সংখ্যা দিয়ে। ঘূর্ণনের বেলায় আবার কম্পাঙ্ক মাপা হয় আরপিএম (rpm-রেভোলিউশন পার মিনিট) বা প্রতি সেকেন্ডে ঘূর্ণন সংখ্যা দিয়ে। বিপিএম এবং আরপিএমকে ৬০ দ্বারা ভাগ করলে হার্জে পরিণত হয়। সুতরাং, ৬০ আরপিএম = ১ হার্জ।

পর্যায়কাল ও কম্পাঙ্ক

পর্যায়কাল বা দোলনকালকে T দ্বারা প্রকাশ করা হয়, এবং এটি হচ্ছে কম্পাঙ্কের (f) ব্যস্তানুপাতিক:

পর্যায়কালের এসআই একক হচ্ছে সেকেন্ড।

বোঝার সুবিধার্থে দীর্ঘ ও ধীরগতির তরঙ্গগুলোকে, যেমন সামুদ্রিক তরঙ্গকে, কম্পাঙ্কের বদলে পর্যায়কাল দ্বারা প্রকাশ করা হয়। অন্যপক্ষে ক্ষুদ্র ও দ্রুতগামী তরঙ্গগুলোকে, যেমন বেতার তরঙ্গ বা শব্দ তরঙ্গকে, হার্জ বা কম্পাঙ্কে প্রকাশ করা হয়। এদের পারস্পরিক সম্পর্ক নিচের ছক থেকে বের করা যায়:

কম্পাঙ্ক ১ মিলিহার্জ(mHz) (১০−৩) ১ হার্জ (Hz) (১০) ১ কিলোহার্জ (kHz) (১০)১ মেগাহার্জ (MHz) (১০) ১ গিগাহার্জ (GHz) (১০)১ টেরাহার্জ (THz) (১০১২)
পর্যায়কাল (সময়) ১ কিলো সেকেন্ড (ks) (১০) ১ সেকেন্ড (s) (১০) ১ মিলি সেকেন্ড (ms) (১০−৩)১ মাইক্রো সেকেন্ড (µs) (১০−৬) ১ ন্যানো সেকেন্ড (ns) (১০−৯)১ পিকো সেকেন্ড (ps) (১০−১২)

তথ্যসূত্র

  1. "Definition of FREQUENCY"। সংগ্রহের তারিখ ৩ অক্টোবর ২০১৬
  2. জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত নবম ও দশম শ্রেণির মাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞান বই, পরিমার্জিত সংস্করণ: ডিসেম্বর ২০০৮, পৃষ্ঠা নং ১০৬
  • Giancoli, D.C. (১৯৮৮), Physics for Scientists and Engineers (2nd সংস্করণ), Prentice Hall, আইএসবিএন 013669201X

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.