কট

কট (ইংরেজি: Caught) ক্রিকেটীয় পরিভাষাবিশেষক্রিকেট খেলায় ব্যাটসম্যানকে ডিসমিসাল করার একটি ধরন। যদি একটি বৈধ বলকে ব্যাটসম্যান তার ব্যাট দিয়ে আঘাত করে কিংবা ব্যাটের সাথে গ্লাভস সংযুক্ত অবস্থায় মাটি স্পর্শ করার পূর্বেই বোলার কিংবা ফিল্ডার তা তালুবন্দী করেন, তাহলে তিনি কট আউটে বিদেয় হবেন। তবে, নো-বলের ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।

ক্যাচ ধরতে ছুটছেন এক খেলোয়াড়

যদি উইকেট-রক্ষক ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেন তাহলে তা অনানুষ্ঠানিক বা অলিখিতভাবে কট বিহাইন্ড[1] বা কট এট দি উইকেট নামে পরিচিতি পায়।[2] যদি বোলার কর্তৃক ক্যাচ তালুবন্দী হয়, তাহলে তা কট এন্ড বোল্ড নামে পরিচিত।[1] বোল্ডের মাধ্যমে ডিসমিসাল ঘটলে এর সাথে কোন সম্পর্ক নেই। তবে, ক্যাচার ও বোলার একই খেলোয়াড় হলে স্কোরকার্ডে সাধারণতঃ ক ও ব বা সিএন্ডবি লিখে বোলারের নাম লেখা হয়।

শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় কটের মাধ্যমে ডিসমিসাল হওয়া সর্বাধিক সাধারণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত। ১৮৭৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে টেস্ট ক্রিকেটে ৩৬,১৯০টি ডিসমিসাল ক্যাচের মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছে। এ সংখ্যাটি ডিসমিসালের ৫৬.৯০%।[3]

দক্ষিণ আফ্রিকান উইকেট-রক্ষক মার্ক বাউচার টেস্ট ক্রিকেটে সর্বাধিকসংখ্যক ৫৩২টি ক্যাচ নিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েন।[4] অন্যদিকে, ভারতীয় তারকা ব্যাটসম্যান রাহুল দ্রাবিড় টেস্টে উইকেট-রক্ষক না হওয়া সত্ত্বেও ফিল্ডার হিসেবে সর্বাধিকসংখ্যক ২১০টি ক্যাচ তালুবন্দী করেন।[5]

আইন-কানুন

ক্যাচের মাধ্যমে ডিসমিসালের বিষয়টি ক্রিকেটের আইনের ৩৩নং ধারায় বর্ণিত রয়েছে:[6]

স্ট্রাইকার কটের মাধ্যমে আউট হবেন যদি বোলারের বৈধ বলটি নো বল না হয়, ব্যাট স্পর্শের পূর্বে কোন ফিল্ডারের সংস্পর্শ না হয় ও ভূমি স্পর্শের পূর্বে কোন ফিল্ডার তালুবন্দী করেন।

ব্যাটসম্যান কটের মাধ্যমে আউট হবেন না যদি:

  • বলটি নো-বল বা ডেড বল হয়।
  • ব্যাটসম্যান বলকে ব্যাটের সাহায্যে আঘাত না করেন বা ব্যাটে ধরা হাতের গ্লাভসে স্পর্শ না করান।
  • আঘাতকৃত বলটি ফিল্ডারের তালুবন্দী হবার পূর্বে ভূমি স্পর্শ করে।
  • বলটি ফিল্ডারের নিয়ন্ত্রণে না থাকে।
  • আঘাতকৃত বলে বাউন্ডারি সীমানার বাইরে গিয়ে ছক্কা হলে।
  • কোন ফিল্ডার ক্যাচ তালুবন্দী করলেও যদি তার শরীর বাউন্ডারি সীমানা স্পর্শ বা বাউন্ডারির বাইরে তার শরীরের কোন অংশ, সরঞ্জাম থাকে।

যদি ব্যাটসম্যান কটে আউট হন তাহলে ‘কট’ পূর্বে থাকবে, নতুবা বোল্ড হবে।[7]

যদি ব্যাটসম্যান কটে বিদেয় নেন ও কোন রান ঐ বলটিতে সংগৃহীত হয় তাহলে তা বাতিল হবে।

ব্যাটসম্যান কটে বিদেয় নিলে ব্যাটসম্যানের উইকেটে বোলারের সাফল্য থাকে ও ডিসমিসালের জন্য ফিল্ডারের সাফল্য থাকে। যদি দুইজন ব্যাটসম্যান ক্যাচ নেয়ার পূর্বে রান নেয়ার চেষ্টা চালান ও স্ট্রাইকিংবিহীন ব্যাটসম্যান অপরপ্রাপ্তে পৌঁছানোকালে ক্যাচ তালুবন্দী করা হয়, তাহলে নতুন ব্যাটসম্যান তার সাবেক ব্যাটসম্যানের প্রান্তে অবস্থান করবেন। এরমাধ্যমে বুঝানো হয় যে, নতুন ওভার শুরু হলে নতুন ব্যাটসম্যান ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাবেন না।

পরিসংখ্যান

টেস্ট ক্রিকেটে সর্বাধিকসংখ্যক ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করা উইকেট-রক্ষকদের তালিকা নিম্নে দেয়া হলো। তবে, উইকেট-রক্ষক যদি ফিল্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন, তাহলে ঐ ক্যাচ তালিকার বাইরে রাখা হয়েছে।

অবস্থান উইকেট-রক্ষক ক্যাচ সময়কাল
মার্ক বাউচার ৫৩২ ১৯৯৭ - ২০১২
অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ৩৭৯ ১৯৯৯ - ২০০৮
ইয়ান হিলি ৩৬৬ ১৯৮৮ - ১৯৯৯
রড মার্শ ৩৪৩ ১৯৭০ - ১৯৮৪
জেফ ডুজন ২৬৫ ১৯৮১ - ১৯৯১
অস্ট্রেলিয়া ব্রাড হাড্ডিন ২৬২ ২০০৮ - ২০১৫
এমএস ধোনি ২৫৬ ২০০৫ - ২০১৪
ইংল্যান্ড অ্যালেন নট ২৫০ ১৯৬৭ - ১৯৮১
ইংল্যান্ড ম্যাট প্রায়র ২৪৩ ২০০৭ - ২০১৪
১০ ইংল্যান্ড অ্যালেক স্টুয়ার্ট ২২৭ ১৯৯০ - ২০০৩

উৎস: ক্রিকইনফো স্ট্যাটসগুরু। সর্বশেষ হালনাগাদ: ১৯ এপ্রিল, ২০১৯

টেস্ট উইকেট-রক্ষকধারী নন এমন খেলোয়াড় অর্থাৎ ফিল্ডারদের সর্বাধিকসংখ্যক ক্যাচ তালুবন্দী করার তালিকা নিম্নরূপ। এ তালিকায় উইকেট-রক্ষকদের ফিল্ডিংকালীন ক্যাচ বাইরে রাখা হয়েছে।

অবস্থান ফিল্ডার ক্যাচ সময়কাল
রাহুল দ্রাবিড় ২১০ ১৯৯৬ - ২০১২
মাহেলা জয়াবর্ধনে ২০৫ ১৯৯৭ - ২০১৪
জ্যাক ক্যালিস ২০০ ১৯৯৫ - ২০১৩
রিকি পন্টিং ১৯৬ ১৯৯৫ - ২০১২
মার্ক ওয়াহ ১৮১ ১৯৯১ - ২০০২
ইংল্যান্ড অ্যালাস্টেয়ার কুক ১৭৫ ২০০৬ - ২০১৮
নিউজিল্যান্ড স্টিফেন ফ্লেমিং ১৭১ ১৯৯৪ - ২০০৮
দক্ষিণ আফ্রিকা গ্রেইম স্মিথ ১৬৯ ২০০২ - ২০১৪
ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্রায়ান লারা ১৬৪ ১৯৯০ - ২০০৬
১০ অস্ট্রেলিয়া মার্ক টেলর ১৫৭ ১৯৮৯ - ১৯৯৯

উৎস: ক্রিকইনফো স্ট্যাটসগুরু। সর্বশেষ হালনাগাদ: ১৯ এপ্রিল, ২০১৯

তথ্যসূত্র

  1. "Ways of getting out: Caught"bbc.co.uk (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-১৭
  2. "Runs for Vaughan but England caught short"theguardian.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-১৭
  3. "Analysing Test dismissals across the ages"espncricinfo.com
  4. "Most catches in career"espncricinfo.com/ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-১৭
  5. "Most catches"espncricinfo.com/ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-১৭
  6. "Law 33 - Caught"www.lords.org (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-১২-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-১৭
  7. "Law 32 (Caught)"http://ndca.nsw.cricket.com.au, para 2 (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-১২-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-১৭
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.