এমা টমসন

ডেম এমা টমসন, ডিবিই[2] (ইংরেজি: Emma Thompson; জন্ম: ১৫ই এপ্রিল, ১৯৫৯) হলেন একজন ব্রিটিশ অভিনেত্রী ও চিত্রনাট্যকার। তিনি তার রহস্যময় নারীরূপ, সাহিত্যের উপযোগকরণ, এবং মাতৃস্থানীয় চরিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রসিদ্ধ।

ডেম

এমা টমসন

ডিবিই
Emma Thompson
জন্ম (1959-04-15) ১৫ এপ্রিল ১৯৫৯
প্যাডিংটন, লন্ডন, যুক্তরাজ্য
জাতীয়তাব্রিটিশ
মাতৃশিক্ষায়তননিউনহ্যাম কলেজ, ক্যামব্রিজ
পেশা
  • অভিনেত্রী
  • কৌতুকাভিনেত্রী
  • চিত্রনাট্যকার
  • লেখক
  • সমাজকর্মী
কর্মজীবন১৯৮২–বর্তমান
দাম্পত্য সঙ্গী
পিতা-মাতা
  • এরিক টমসন
  • ফিলিডা ল
আত্মীয়সোফি টমসন (বোন)
পুরস্কারপূর্ণ তালিকা

ইংরেজ অভিনেতা এরিক টমসন ও স্কটিশ অভিনেত্রী ফিলিডা লয়ের ঘরে জন্ম নেওয়া টমসন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউনহাম কলেজে পড়াশুনা করেন। ক্যামব্রিজে থাকাকালীন তিনি ফুটলাইট ট্রুপের সদস্য হন। কয়েকটি হাস্যরসাত্মক অনুষ্ঠানে কাজ করার পর তিনি ১৯৮৭ সালে বিবিসির দুটি টেলিভিশন ধারাবাহিক, টুট্টি ফ্রুট্টিফরচুনস্‌ অব ওয়ার-এ অভিনয় করেন। এই দুটি ধারাবাহিকের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে বাফটা টিভি পুরস্কার লাভ করেন। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র হল ১৯৮৯ সালের প্রণয়ধর্মী হাস্যরসাত্মক দ্য টল গাই। ১৯৯০-এর দশকের শুরুর দিকে তাকে তার তৎকালীন স্বামী কেনেথ ব্র্যানার সাথে প্রায়ই বিভিন্ন চলচ্চিত্রে দেখা যেত। এই যুগল ব্রিটিশ গণমাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন এবং ডেড অ্যাগেইন (১৯৯১) এবং মাচ অডো অ্যাবাউট নাথিং (১৯৯৩) সহ আরও কয়েকটি চলচ্চিত্রে কাজ করেন।

১৯৯২ সালে টমসন হাওয়ার্ডস এন্ড ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারবাফটা পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯৯৩ সালে দ্য রিমেইনস অব দ্য ডে ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী এবং ইন দ্য নেম অব দ্য ফাদার ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। ১৯৯৫ সালে টমসন সেন্স অ্যান্ড সেন্সিবিলিটি ছবির চিত্রনাট্য রচনা করেন এবং এতে শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয় করেন। এই ছবির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ উপযোগকৃত চিত্রনাট্য বিভাগে একাডেমি পুরস্কার ও শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে বাফটা পুরস্কার লাভ করেন। তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে দ্য হ্যারি পটার চলচ্চিত্র ধারাবাহিক, উইট (২০০১), লাভ অ্যাকচুয়ালি (২০০৩), অ্যাঞ্জেলস ইন আমেরিকা (২০০৩), ন্যানি ম্যাকফে (২০০৫), স্ট্রেঞ্জার দ্যান ফিকশন (২০০৬), লাস্ট চান্স হার্ভি (২০০৮), মেন ইন ব্ল্যাক থ্রি (২০১২), ব্রেভ (২০১২), এবং বিউটি অ্যান্ড দ্য বিস্ট (২০১৭)। ২০১৩ সালে তিনি সেভিং মিস্টার ব্যাংকস চলচ্চিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হন এবং কয়েকটি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

টমসন অভিনেতা গ্রেগ ওয়াইজকে বিয়ে করেন এবং লন্ডনে বসবাস করছেন। তাদের এক কন্যা এবং এক দত্তক নেওয়া পুত্র রয়েছে। তিনি একজন মানবাধিকার কর্মী ও পরিবেশবাদী। তিনি দ্য টেল অব পিটার র‍্যাবিট অবলম্বনে দুটি বই রচনা করেছেন। নাট্যকলায় অবদানের জন্য ২০১৮ সালে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের জন্মদিন সম্মাননায় তাকে অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ারের ডেম কমান্ডার উপাধি প্রদান করা হয়।

প্রারম্ভিক জীবন

টমসন ১৯৫৯ সালের ১৫ই এপ্রিল লন্ডনের প্যাডিংটনে জন্মগ্রহণ করেন।[3][lower-alpha 1] London, on 15 April 1959.[5] তার মাতা স্কটিশ অভিনেত্রী ফিলিডা ল এবং তার পিতা এরিক টমসন মঞ্চের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন ও জনপ্রিয় শিশুতোষ টেলিভিশন ধারাবাহিক দ্য ম্যাজিক রাউন্ডঅ্যাবাউট-এর লেখক ও বর্ণনাকারী ছিলেন।[6][7] তার ধর্মপিতা পরিচালক ও লেখক রোনাল্ড আয়ার।[8][9] তার বোন সোফি টমসনও একজন অভিনেত্রী। তার পরিবার উত্তর লন্ডনের ওয়েস্ট হ্যামস্টিডে বসবাস করত।[7] টমসন ক্যামডেন স্কুল ফর গার্লসে পড়াশোনা করেন।[10] তিনি তার শৈশবের অধিকাংশ সময় স্কটল্যান্ডে কাটান এবং তার মাতামহ-মাতামহী ও মামাদের আবাসস্থল আর্ডেন্টিনিতে প্রায়ই যাতায়াত করতেন।[11]

কর্মজীবন

টমসনের কর্মজীবনের বাঁক বদল হিসেবে উল্লেখ করা হয় মার্চেন্ট আইভরি প্রডাকশন্সের হাওয়ার্ডস এন্ড চলচ্চিত্রটিকে। ই. এম. ফরস্টারের একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্রটিতে তিনি অ্যান্থনি হপকিন্সভানেসা রেডগ্রেভের সাথে অভিনয় করেন। এই চলচ্চিত্রে হাওয়ার্ডীয় ইংল্যান্ডে সামাজিক শ্রেণি ব্যবস্থার চিত্রায়ন ঘটে, এতে টমসন একটি বিত্তবান ও রক্ষণশীল পরিবারের ভাববাদী, বুদ্ধিদীপ্ত ও অগ্রসরমান নারী চরিত্রে অভিনয় করেন। তিনি এই চরিত্রের জন্য বারবার পরিচালক জেমস আইভরির নিকট চিঠি লিখেন, ফলে আইভরি তার অডিশন নিতে রাজি হন এবং তাকে এই চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ দেন।[12] সমালোচক ভিনসেন্ট ক্যানবির মতে, এই চলচ্চিত্রটি টমসনকে ব্র্যানার নিকট থেকে সরে তার নিজের পথে আসতে সাহায্য করে।"[13] চলচ্চিত্রটি মুক্তির পর রজার ইবার্ট লিখেন, "তিনি কেন্দ্রীয় চরিত্রে অসাধারণ: শান্ত, শ্লেষপূর্ণ, পর্যবেক্ষণশীল এবং ভেতর থেকে ইস্পাতের ন্যায় দৃঢ়।"[14] হাওয়ার্ডস এন্ড চলচ্চিত্রটি ভূয়সী প্রশংসা লাভ করে,[15] এবং অপ্রত্যাশিতভাবে ব্যবসা সফল হয়।[16] চলচ্চিত্রটি নয়টি বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করে[17] এবং তিনটি পুরস্কার জয়ের মধ্যে একটি টমসনের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার। এছাড়া তিনি সেরা নাট্য চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারশ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে বাফটা পুরস্কার অর্জন করেন।[5]

টীকা

  1. The England and Wales Birth Registration Index, which states Thompson's mother's maiden name as Law, cites Hammersmith as her birthplace,[4] but most sources indicate that it was Paddington.[3][5]

তথ্যসূত্র

  1. "Emma Thompson"The Film Programme। ২৮ নভেম্বর ২০১৩। বিবিসি রেডিও ৪। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৮
  2. "Dalglish and Thompson head honours list"বিবিসি নিউজ (ইংরেজি ভাষায়)। ৯ জুন ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৮
  3. জেপসন, টিম; পোর্জেস, ল্যারি (৪ নভেম্বর ২০১৪)। National Geographic London Book of Lists: The City's Best, Worst, Oldest, Greatest, and Quirkiest। National Geographic Society। পৃষ্ঠা ১৫। আইএসবিএন 978-1-4262-1385-4।
  4. "Emma Thompson"The England and Wales Birth Registration Index। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ Familysearch.org-এর মাধ্যমে।
  5. "Emma Thompson"দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস। ১৬ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০
  6. গ্রিস, এলিজাবেথ (২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩)। "Phyllida Law: my mother's dementia had its funny side"দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০
  7. মুরহেড, জোঅ্যানা (২০ মার্চ ২০১০)। "Emma Thompson: 'Family is about connection'"The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩
  8. টমসন, এমা (১৯ সেপ্টেম্বর ২০০৫)। "Beneath the skin"The Telegraph। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০
  9. "Emma Thompson: A Life in Pictures"বাফটা গুরু। ২৪ নভেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০
  10. কেলাওয়ে, কেট (১৬ অক্টোবর ২০০৫)। "Warts'n'all"দ্য গার্ডিয়ান। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০
  11. "Emma Thompson: A Life in Pictures"বাফটা গুরু (ইংরেজি ভাষায়)। ২৪ নভেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০২০
  12. ক্যানবি, ভিনসেন্ট (১৩ মার্চ ১৯৯২)। "Howards End (1992)"দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০২০
  13. ইবার্ট, রজার (১ মে ১৯৯২)। "Howards End"শিকাগো সান-টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০২০
  14. "Howards End"রটেন টম্যাটোস (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০২০
  15. ডি ভ্রাইস, হিলারি (৩১ অক্টোবর ১৯৯৩)। "Simply Put, It's Chemistry: Two actors, two Oscars, two tart tongues—Emma Thompson and Anthony Hopkins do the Tracy and Hepburn thing"দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০২০
  16. ক্যানবি, ভিনসেন্ট। "Howards End (1992)"দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০২০

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.