এবিএম হোসেন
আবুল বাশার মোশারফ হোসেন (১ সেপ্টেম্বর ১৯৩৪ - ১১ জুলাই ২০২০)[1] যিনি এবিএম হোসেন নামে অধিক পরিচিত, ছিলেন একজন বাংলাদেশি প্রত্নতাত্ত্বিক,[3] ইসলামী শিল্পকলা বিশেষজ্ঞ ও মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির খ্যাতিমান বিশ্লেষক।[4] তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ইমেরিটাস অধ্যাপক।[5] ২০১০ বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে। তিনি বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির আজীবন সদস্য ছিলেন।
এবিএম হোসেন | |
---|---|
জন্ম | [1][2] | ১ সেপ্টেম্বর ১৯৩৪
মৃত্যু | ১১ জুলাই ২০২০ ৮৫)[1] | (বয়স
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
দাম্পত্য সঙ্গী | শাহনারা হোসেন |
পুরস্কার | বাংলা একাডেমি ফেলো (২০১০) |
প্রারম্ভিক জীবন
এবিএম হোসেন ১৯৩৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার দেবীদ্বারের ধামতী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দেবীদ্বার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে মেধাবৃত্তি নিয়ে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৫৮ সালে সেখান থেকে এমএ এবং ১৯৬০ সালে ইতিহাস ও ইসলামী শিল্পকলায় পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
কর্মজীবন
এবিএম হোসেন ১৯৬০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭২ সালে তিনি পূর্ণ অধ্যাপক হন।[4] তিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান এবং কলা অনুষদের ডীন ছাড়াও আরো বেশ কিছু প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আইন প্রণয়ন কমিটিতেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।[6] মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি নিয়ে গবেষণা করে তিনি খ্যাতি লাভ করেন।[4] ১৯৭৭ সালে তিনি নরওয়েজীয় নোবেল কমিটির সদস্য মনোনীত হন।[1] ২০০১ সালে অবসর গ্রহণের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক নিযুক্ত হন।[5] ২০১০ সালে বাংলা একাডেমি তাকে ফেলোশিপ প্রদান করে। এছাড়া বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির তিনি আজীবন সদস্য ছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবন
এবিএম হোসেন ব্যক্তিগত জীবনে শাহনারা হোসেনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।[7] লন্ডনে তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।[7] এই দম্পতির দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।[8] শাহনারা ২০১৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।[9] সেই বছরই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকায় এসে বসবাস শুরু করেন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন।[1]
গ্রন্থ
এবিএম হোসেন অন্তত ১১টি[4] গ্রন্থ রচনা করেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস: অটোম্যান সাম্রাজ্য থেকে জাতিসত্ত্বা রাষ্ট্র (২০১১)[10]
- বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক সমীক্ষামালা - ২: স্থাপত্য (২০০৭)
- আরব স্থাপত্য (২০১৭)
- ইসলামী চিত্রকলা
মৃত্যু
এবিএম হোসেন ২০২০ সালের ১১ জুলাই ঢাকায় বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।[1][4] মৃত্যুর এক সপ্তাহ পূর্বে কোমরে ব্যথা পেলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে নেওয়া হয় এবং সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন।[1] তাকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
তথ্যসূত্র
- "প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ এবিএম হোসেন আর নেই"। দ্য ডেইলি স্টার বাংলা। ১১ জুলাই ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০২০।
- "রাবির ইমেরিটাস অধ্যাপক এ বি এম হোসেনও আর নেই"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-১২।
- "রাবির প্রথম ইমেরিটাস অধ্যাপক এবি এম হোসেন আর নেই"। বাংলা ট্রিবিউন। ১১ জুলাই ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০২০।
- "রাবির প্রথম ইমেরিটাস এবিএম হোসেন আর নেই"। যুগান্তর। ১১ জুলাই ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০২০।
- "এ.বি.এম হোসেন"। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০২০।
- "রাবির প্রথম ইমেরিটাস অধ্যাপক এবিএম হোসেন আর নেই"। সমকাল। ১১ জুলাই ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০২০।
- "শাহানারা হোসেনের বেলাশেষের পাঁচালি"। কালি ও কলম। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০২০।
- "শোক"। কালের কণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০২০।
- "বাড়লেও হাজারের নিচে নতুন ডেঙ্গু রোগী"। দেশ রূপান্তর। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০২০।
- "'মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস' সম্পর্কিত বইয়ের মোড়ক উন্মোচন"। বাংলানিউজ। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০২০।