উনা ওনিল

উনা ওনিল চ্যাপলিন (ইংরেজি: Oona O'Neill Chaplin) বা লেডি চ্যাপলিন (১৪ মে, ১৯২৫ – ২৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৯১) ছিলেন নোবেলপুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী মার্কিন নাট্যকার ইউজিন ওনিল ও ইংরেজ বংশোদ্ভূত মার্কিন লেখক আইনেস বোল্টনের কন্যা, এবং ব্রিটিশ অভিনেতা ও চলচ্চিত্র নির্মাতা চার্লি চ্যাপলিনের চতুর্থ ও শেষ স্ত্রী।

উনা ওনিল
Oona O'Neill
সান্তা বারবারা, ক্যালিফোর্নিয়ায় ওনিল, ১৯৪৩
জন্ম(১৯২৫-০৫-১৪)১৪ মে ১৯২৫
ওয়ারউইক প্যারিস, বারমুডা
মৃত্যু২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৯১(1991-09-27) (বয়স ৬৬)
কর্সিয়ের-সুর-ভেভে, সুইজারল্যান্ড
মৃত্যুর কারণপ্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার
শিক্ষাব্রায়ার্লি স্কুল
দাম্পত্য সঙ্গীচার্লি চ্যাপলিন (বি. ১৯৪৩; মৃ. ১৯৭৭)
সন্তানজেরাল্ডিন চ্যাপলিন
মাইকেল চ্যাপলিন
জোসেফিন চ্যাপলিন
ভিক্টোরিয়া চ্যাপলিন
ইউজিন চ্যাপলিন
জেন চ্যাপলিন
অ্যানেট চ্যাপলিন
ক্রিস্টোফার চ্যাপলিন
পিতা-মাতাইউজিন ওনিল
আইনেস বোল্টন
আত্মীয়ইউজিন ওনিল জুনিয়র (সৎ ভাই)

জীবনী

প্রারম্ভিক জীবন (১৯২৫–৪২)

উনা ওনিল ১৯২৫ সালে মে মাসে বারমুডায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতামাতা তার জন্মের ছয় মাস পূর্বে বারমুডায় যান এই ভেবে যে শীতকালে লেখার জন্য এটি উপযুক্ত স্থান হবে।[1] তার এক বড় ভাই ছিল, নাম শেন রুদ্রাইঘ ওনিল (১৯১৯-১৯৭৭)।[2] তার পিতামাতা দুজনেরই তাদের পূর্বের সম্পর্কের সন্তান ছিল। ইউজিন ওনিল জুনিয়র ও বারবারা বার্টন তাদের পরিবারের সাথে বাস করত না এবং ওনিলের শৈশবে তাদের সাথে বিভিন্ন উপলক্ষে দেখা হতো।[3]

চ্যাপলিনের সাথে বিবাহ (১৯৪৩-৭৭)

চ্যাপলিন দম্পতি ও তাদের আট সন্তান, ১৯৬১। বাম থেকে ডানে: জেরাল্ডিন, ইউজিন, ভিক্টোরিয়া, চ্যাপলিন, ওনিল, অ্যানেট, জোসেফিনমাইকেল

সান ফ্রান্সিস্কো থেকে ওনিল লস অ্যাঞ্জেলেস যান। সেখানে তার মা ও তার সৎ বাবা থাকতেন।[4] তিনি নিজেই মিনা ওয়ালেস নামে একজন চলচ্চিত্রের প্রতিনিধির খোঁজ পান এবং ইউজিন ফ্রেঙ্কের দ্য গার্ল ফ্রম লেনিনগ্রাদ ছবির জন্য স্ক্রিনটেস্ট দেন। এটি ছিল তার প্রথম ও একমাত্র স্ক্রিনটেস্ট।[4] ১৯৪২ সালের অক্টোবরে ওয়ালেস তাকে চার্লি চ্যাপলিনের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। চ্যাপলিন তখন শ্যাডো অ্যান্ড সাবস্ট্যান্স মঞ্চনাটক অবলম্বনে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য প্রধান অভিনেত্রী খুঁজছিলেন।[4] ওনিলকে চ্যাপলিনের ভাল লাগে, কিন্তু তখন ১৭ বছর বয়সী ওনিল এই চরিত্রের জন্য উপযুক্ত ছিলেন না।[5] তবুও ওনিল ও ওয়ালেসের জেদের কারণে চ্যাপলিন তার সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার জন্য সম্মত হন।[5]

শ্যাডো অ্যান্ড সাবস্ট্যান্স চলচ্চিত্রের প্রকল্প ১৯৪২ সালে ডিসেম্বরে স্থগিত হয়ে যায়, কিন্তু ওনিল ও চ্যাপলিনের মধ্যে পেশাদারী সম্পর্ক থেকে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়।[5] ১৯৪৩ সালে ১৬ জুন, ওনিলের ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার একমাস পরে তারা কার্পিন্টেরিয়ায় পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন।[6] তাদের বিয়ে উপস্থিত ছিলেন চ্যাপলিনের স্টুডিও সচিব ক্যাথেরিন হান্টার ও তার এক বন্ধু ও সহকারী হ্যারি ক্রোকার।[6] ক্রোকার কলামিস্ট লুয়েলা পারসন্সের জন্য এই বিয়ের কয়েকটি ছবি তুলেন। চ্যাপলিন পারসন্সকে তাদের বিয়ের খবর ছাপানোর বিশেষ অধিকার প্রদান করেছিলেন যেন তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বী হেডা হুপারের চেয়ে এই বিয়ের ব্যাপারে ইতিবাচক কিছু লিখেন। হুপার চ্যাপলিনকে প্রচণ্ড ঘৃণা করতেন।[6] তাদের এই পালিয়ে বিয়ের খবর গণমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে, কারণ তাদের বয়সের ব্যবধান ছিল ৩৬ বছর এবং চ্যাপলিনের সাবেক প্রেমিকা জোন ব্যারি দুই সপ্তাহ পূর্বে তার বিরুদ্ধে তার সন্তানের পিতৃত্বের মামলা করেন। যদিও ওনিলের মা আইনেস নব-দম্পতিকে তার আশীর্বাদ দেন, তার পিতার সাথে তার সম্পর্ক ছিন্ন হয় এবং তিনি জানান তিনি আর তার ব্যাপারে কোন হস্তক্ষেপ করবেন না এবং তার পরবর্তীকালে পুনর্মিলনের চেষ্টাও প্রত্যাখ্যান করেন।[7]

শেষ জীবন ও মৃত্যু (১৯৭৮-৯১)

কর্সিয়ের-সুর-ভেভেতে চার্লি ও উনা চ্যাপলিনের সমাধি।

চ্যাপলিনের মৃত্যুর পর ওনিল সুইজারল্যান্ড ও নিউ ইয়র্কে তার সময় ভাগ করে বসবাস শুরু করেন।[8] ১৯৮১ সালে তিনি ব্রোকেন ইংলিশ চলচ্চিত্রে একটি ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন। তার অ-দাপ্তরিক জীবনীকার জেন স্কোভেল ও সাবেক পুত্রবধূ প্যাট্রিস চ্যাপলিন জানান যে তিনি মদ পান করতেন এবং ১৯৮০ এর দশকের শেষের দিকে মানোইর দে বানে স্থায়ীভাবে চলে আসার পর নিভৃতচারী হয়ে পড়েন।[9][10] ১৯৯১ সালে ২৭ সেপ্টেম্বর ৬৬ বছর বয়সে তিনি প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে কর্সিয়ের-সুর-ভেভেতে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে তার স্বামী চ্যাপলিনের পাশে ভিলেজ সিমেট্রিতে সমাহিত করা হয়। ওনিল তার জীবনে দিনপঞ্জি ও চিঠি লিখতেন। তার শেষ উইলে তিনি তার সকল লেখা নষ্ট করে ফেলতে বলেন। ফলে তা আর কখনো প্রকাশিত হয় নি।[11][12]

চরিত্রায়ন

রিচার্ড অ্যাটেনবরো পরিচালিত চ্যাপলিনের জীবনীমূলক চ্যাপলিন (১৯৯২) চলচ্চিত্রে মোইরা কেলি তার ভূমিকায় অভিনয় করেন। জে. ডি. স্যালিঙ্গারের যৌবনকাল অবলম্বনে নির্মিত রেবেল ইন দ্য রাই চলচ্চিত্রে জোয়ি ডয়েচ তার ভূমিকায় অভিনয় করেন। মঞ্চে ২০১০ সালে সান দিয়েগোর লা হোলা প্লেহাউজে লাইমলাইট: দ্য স্টোরি অব চার্লি চ্যাপলিন নাটকে অ্যাশলি ব্রাউন তার ভূমিকায় অভিনয় করেন। ২০১২ সালে ব্রডওয়ের চ্যাপলিন - দ্য মিউজিক্যাল মঞ্চায়নে এরিন ম্যাককি তার ভূমিকায় অভিনয় করেন।[13][14]

তথ্যসূত্র

  1. Ranald, p. 118; Sheaffer, p. 150 and p. 179.
  2. Scovell, p. 40
  3. Scovell, p. 71 for Burton
  4. Robinson, p. 518
  5. Robinson, p. 519
  6. Robinson, pp. 521–522
  7. Ranald, p. 118; Sheaffer, p. 623 and 658.
  8. Scovell, p. 295
  9. Scovell, p. 274 and Lynn, pp. 519–520 and pp. 540–541 for alcoholism. O'Neill's ex-daughter-in-law, Patrice Chaplin, has also written about her alcoholism in Hidden Star: Oona O'Neill Chaplin - A Memoir
  10. Arditti, Michael (৮ জুলাই ১৯৯৫)। "A drunken widow in a gilded cage"দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭
  11. Scovell, p. 259.
  12. "Geraldine Chaplin"El Mundo (ইংরেজি ভাষায়)। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০০০। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭
  13. "Limelight – The Story of Charlie Chaplin" (ইংরেজি ভাষায়)। La Jolla Playhouse। ২১ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭
  14. "Chaplin – A Musical" (ইংরেজি ভাষায়)। Barrymore Theatre। ১৫ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭

গ্রন্থপঞ্জি

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.