উইকিলিকস

উইকিলিকস(ইংরেজি: WikiLeaks) একটি আন্তর্জাতিক অলাভজনক প্রচার মাধ্যম সংস্থা যা দুষ্প্রাপ্য দলিল অপ্রকাশিত সূত্র ও মাধ্যম থেকে প্রকাশ করে। ২০০৬ সালে এটির ওয়েবসাইট দ্য সানশাইন প্রেস কর্তৃক তৈরি হয়ে অদ্যাবধি পরিচালিত হচ্ছে।[3] পরিচালনার এক বৎসরের মধ্যেই সাইটটি দাবী করে যে তাদের ডাটাবেজে ১.২ মিলিয়নেরও বেশি ডকুমেন্টস বা দলিল রক্ষিত আছে এবং প্রতিদিনই তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।.[4]

উইকিলিকস
স্ক্রিনশট
সাইটের প্রকার
তথ্য সংগ্রহশালা
মালিকদ্য সানশাইন প্রেস
প্রস্তুতকারকজুলিয়ান অ্যাস্যাঞ্জ
স্লোগানউই ওপেন গর্ভনমেন্ট
ওয়েবসাইটwww.wikileaks.org[1]
অ্যালেক্সা অবস্থান৩৩,২৩৭
বাণিজ্যিকনা
চালুর তারিখ৪ অক্টোবর ২০০৬[2]
বর্তমান অবস্থাসক্রিয়
জুলিয়ান অ্যাস্যাঞ্জ, উইকিলিকসের প্রধান মুখপাত্র

প্রতিষ্ঠানটি দাবি করছে যে, চীনা ভিন্নমতাবলম্বী, বিশেষ করে সাংবাদিক, গণিতবিদ এবং প্রযুক্তিবিদ হিসেবে যারা যুক্তরাষ্ট্র, তাইওয়ান, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন সংস্থা ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন তারাই মূলত উইকিলিকস সমৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছেন।[5] সংবাদপত্রের নিবন্ধ এবং দ্য নিউ ইয়র্কার ম্যাগাজিন (৭ জুন, ২০১০) জানায়, অস্ট্রেলীয় ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হিসেবে জুলিয়ান এ্যাসেঞ্জ উইকিলিকস-এর পরিচালক।

উইকিলিকস বহু খেতাব অর্জন করেছে। তন্মধ্যে, ২০০৮ সালে ইকোনোমিস্ট ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে ‘নিউ মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড' অন্যতম। জুন, ২০০৯ সালে উইকিলিকস এবং জুলিয়ান এ্যাসেঞ্জ এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক ইউকে মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড (নিউ মিডিয়া ক্যাটাগরিতে) পায় ২০০৮ সালে প্রকাশিত “কেনিয়া: রক্তের কান্না = অতিরিক্ত বিচারবহির্ভূত হত্যা ও নৈরাজ্য” নিবন্ধ রচনা করে যার বিষয়বস্তু ছিল - কেনিয়ার জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কর্তৃক কেনিয়া পুলিশের হত্যাযজ্ঞ। মে, ২০১০ সালে নিউ ইয়র্ক ডেইলি নিউজ কর্তৃক শীর্ষস্থান প্রদান করে যাতে বলা হয়েছে ‘সংবাদকে পুরোপুরি পরিবর্তন করতে উইকিলিকসের মতো ওয়েবসাইটই যথেষ্ট’।

এপ্রিল, ২০১০ সালে উইকিলিকস ২০০৭ সালের ভিডিও চিত্রে আমেরিকার সেনাবাহিনী কর্তৃক ইরাকের সাধারণ নাগরিকদের হত্যার ঘটনা প্রকাশ করে যাতে বলা হয় Collateral সুপরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ হিসেবে। ঐ বৎসরেরই জুলাই মাসে উইকিলিকস আফগান যুদ্ধের ডায়রি প্রকাশ করে। এত ৭৬, ৯০০+ দলিল ছিল যা পূর্বে সাধারণের কাছে অপ্রকাশিত ছিল। অক্টোবরে সংগঠনটি একগুচ্ছ দলিল প্রকাশ করে। এতে ৪,০০,০০০ ইরাক যুদ্ধের coordination নির্দেশনা দলিল ছিল, যা প্রধান প্রধান বাণিজ্যিক গণমাধ্যম সংস্থায় লুকায়িত ছিল।

উইকিলিকস একটি ব্যবহারকারী-সম্পাদনার সাইট হিসেবে প্রকাশিত হলেও অধিক আক্রমণাত্মকভাবে প্রচলিত প্রকাশনার জগতকে বেছে নিয়েছে যা ব্যবহারকারীদের মন্তব্য কিংবা সম্পাদনাকে সমর্থন করে না। উইকিপিডিয়া’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা জিমি ওয়ালেস বলেছেন, এটি কোন উইকি নয়।

ইতিহাস

উইকিলিকসের ওয়েবসাইট ৪ অক্টোবর ২০০৬ সালে নিবন্ধিত হয়।[2] উইকিলিকস ইন্টারনেটে প্রথম তথ্য প্রদর্শন করে ডিসেম্বর ২০০৬ সালে। [6] প্রতিষ্ঠানটি দাবি করছে যে, চীনা ভিন্নমতাবলম্বী ছাড়াও সাংবাদিক, গণিতবিদ এবং প্রযুক্তিবিদ হিসেবে যারা যুক্তরাষ্ট্র, তাইওয়ান, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসেছে তারাই উইকিলিকসের সমৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছেন। উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে সঠিকভাবে কাউকেই চিহ্নিত করা যায়নি। তবে ওয়েবসাইটে জুলিয়ান এ্যাসেঞ্জ ও সহকর্মীদেরকে উপস্থাপন করা হয়। এ্যাসেঞ্জ নিজেকে উইকিলিকসের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে দাবী করেন। দি অস্ট্রেলিয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ্যাসেঞ্জকে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে লেখা হয়। ওয়্যার্ড ম্যাগাজিনের তথ্য মতে জানা যায়, একজন স্বেচ্ছাসেবীর মতে “এ্যাসেঞ্জের ভূমিকা হচ্ছে - প্রতিষ্ঠানটির হৃদয় ও আত্মা হিসেবে যাতে তিনি একজন প্রতিষ্ঠাতা, দার্শনিক, মুখপাত্র, সঠিক বিনিময়কারী, উদ্যোক্তা, অর্থলগ্নিকারী এবং এক কথায় সবকিছু।” জুন, ২০০৯ সালে ১,২০০ এরও বেশি নিবন্ধনকারী স্বেচ্ছাসেবী ছিল এবং উপদেষ্টা পরিষদে এ্যাসেঞ্জ-সহ ফিলিপ এডামস্‌, ওয়াং ড্যান, সি.জে. হিঙ্ক, বেন লরি, আশি ন্যামগিয়াল খামসিতসাং, জিয়াও কিয়াং, চিকো হুয়াইটেকার এবং ওয়াং ইয়োকাই ছিলেন। বর্ণিত তালিকা মোতাবেক মাদার জোনস ম্যাগাজিন ২০১০ সালে খামসিতসাংয়ের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান উইকিলিকসের পক্ষ থেকে একটি ইমেইল পেলে উপদেস্টার পদে যেতে অস্বীকৃতি জানান।

উইকিলিকস কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে - এশিয়া, সাবেক সোভিয়েত ব্লক, সাব-সাহারান আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের আধিপত্যবাদের বিরোধিতা করে সবাইকে জানিয়ে দেয়া। তবে তারা ঐ সকল দেশের জনগণের কাছ থেকে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর অনৈতিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সহযোগিতা চান। জানুয়ারি ২০০৭ সালে ওয়েবসাইটটি জানায় তাদের হাতে ১.২ মিলিয়নেরও বেশি ফাঁসকৃত দলিল রয়েছে যা প্রকাশের প্রস্তুতি চলছে। দ্য নিউ ইয়র্কার পত্রিকা তাদের একটি প্রতিবেদনে লিখেঃ “উইকিলিকসে কর্মরত একজন সেবক টর নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে এবং মিলিয়নেরও বেশি গোপনীয় দলিল এর মাধ্যমে সরবরাহ করে। ঐ সেবক লক্ষ্য করেছেন যে চীনের হ্যাকাররা নেটওয়ার্কটি ব্যবহার করে অন্যান্য সরকারের তথ্য জমায়েত করে এবং রেকর্ড ধারণ করতে শুরু করে। উইকিলিকসে ঐ ধারণকৃত তথ্যের খুবই ক্ষুদ্র অংশ প্রেরণ করেন। এ্যাসেঞ্জ তাই বলেছেন, আমরা তেরটি দেশের এক মিলিয়নেরও বেশি তথ্য পেয়েছি।” অ্যাসেঞ্জ পরামর্শমূলক জবাব পান যে, চীনের হ্যাকাররা উইকিলিকসের শুরুর দিনগুলোতে পদক্ষেপটি অসত্য। ২০০৬ সালের তদন্তে চীনাদের একজন আমাদের প্রস্তাবে সম্মতি দেয়। অজ্ঞাত স্থান থেকে আসা দলিলগুলো উইকিলিকসে কখনো প্রকাশিত হয়নি। চীনাদের লক্ষ্যস্থল ছিল বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন: তিব্বতের সংগঠনসমূহ যারা আমাদের দ্বারা পূর্বজ্ঞাত হয়েছিল। এই গ্রুপটি ধারাবাহিকভাবে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ দলিল প্রকাশ করে যা সংবাদপত্রের প্রধান পৃষ্ঠায় স্থান পাবার উপযোগী। আফগান যুদ্ধে অস্ত্রের ব্যয়ভার থেকে শুরু করে কেনিয়ার দুর্নীতি সম্পর্কীয় তথ্যাদিও এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। সংগঠনটি তাদের লক্ষ্য হিসেবে বিবৃতি দেয় যে, ই-মেইলের মতো স্পর্শকাতর কিংবা শ্রেণিবদ্ধ দলিল প্রকাশের ফলে কোন সাংবাদিক কারাগারে যেতে পারেন না। চীনা কর্মকর্তা থেকে প্রাপ্ত ইমেইল প্রতিবেদন আকারে প্রকাশের ফলেই ২০০৫ সালে শি তাও নামীয় চীনা সাংবাদিককে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

১৯৭১ সালে ড্যানিয়েল এলসবার্গের পেন্টাগন পেপার ফাঁস হয়ে যাবার ফলেই এই প্রকল্পটি দাঁড় করানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের কিছু দলিল ফাঁস হয়ে গেলেও তা বৈধভাবে রক্ষা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট আইন জারি করে যে সংবিধান রাজনৈতিক অস্বচ্ছতা বিষয়ে প্রকাশ করার ব্যাপারে নিশ্চয়তা দেয়। সাহিত্যিক ও সাংবাদিক হুয়াইটলী স্ট্রাইবার উইকিলিকসের প্রকল্প সম্বন্ধে বলেন যে, “সরকারি তথ্য ফাঁস করা হলো কারাগারে যাওয়া, কিন্তু কারাবাস হলো সংক্ষিপ্ত ও নিরাপদ। কিন্তু অন্যান্য দেশে তাহলো দীর্ঘমেয়াদি কারাবাস অথবা কখনোবা মৃত্যুদণ্ড, যেমন: চীন, আফ্রিকার কয়েকটি দেশসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহ উল্লেখযোগ্য।” ২০০৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর উইকিলিকস ঘোষণা করে যে, অপর্যাপ্ত তহবিল এবং নতুন তথ্যের অভাবে তাদের ওয়েবসাইটের কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। তারা আরো জানায়, ব্যয়ভার নির্বাহ ও পরিচালনাযোগ্য অর্থ আসলেই তারা পূর্ণোদ্যমে কাজ চালিয়ে যাবে। ৬ জানুয়ারি, ২০১০ তারিখে তহবিলে অর্থের যোগান হলে উইকিলিকস ঘোষণা করে যে, ন্যূনতম অর্থের সংস্থান হয়েছে এবং তারা কাজ চালাবে।

জানুয়ারি ২২, ২০১০-এ পেপল উইকিলিকসের দাতব্য হিসাব নম্বর স্থগিত করে ও তার সম্পত্তি আটকায়। উইকিলিকস জানায় এগুলো পূর্বেই হয়েছে এবং কোন কারণ ছাড়াই হবে। হিসাব নম্বরটি পুনরায় ২৫ জানুয়ারি, ২০১০ তারিখে চালু করা হয়।

১৮ মে, ২০১০ তারিখে উইকিলিকস জানায় যে তাদের ওয়েবসাইট ও সংগ্রহশালা নিরাপদে আছে এবং তাদের লক্ষ্যে অগ্রসর হবে।

জুন, ২০১০ এর পর জন এস. এণ্ড জেমস এল. নাইট ফাউণ্ডেশন থেকে অর্ধ-মিলিয়ন ডলারের আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব পায়, কিন্তু তারা তা দেয়নি। উইকিলিকস জানায়, নাইটের আহ্বান সত্ত্বেও উইকিলিকসের মতো উদীয়মান প্রকল্পে বোর্ড কোন অনুদান দেয়নি। উইকিলিকসের মতে নাইট ফাউন্ডেশন উক্ত অর্থের বিনিময়ে ১২টি শর্ত দিয়েছিল যা ভবিষ্যতের সংবাদ হিসেবে প্রকৃতই দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, কিন্তু তাদেরকে নয়। এ প্রসঙ্গে নাইট ফাউন্ডেশনের একজন মুখপাত্র উইকিলিকসের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে জানান, বোর্ডে উইকিলিকসকে কোন মনোনয়ন দেয়া হয়নি। অধিকন্তু, তিনি তা নাকচ করে দিয়ে বলেন - ‌উইকিলিকসের সংবাদদাতা ও সামাজিক যোগাযোগ সাইটে কর্মরত থাকয় জেনিফার ৮. লি কে তারা বোর্ডের সদস্যপদ থেকে বের করে দেন।

১৭ জুলাই উইকিলিকসের পক্ষে জ্যাকব এ্যাপলবম নিউ ইয়র্ক শহরে আয়োজিত ২০১০ হ্যাকারস অন প্ল্যানেট আর্থ সম্মেলনে যোগ দেন। তিনি জানান, সম্মেলনে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের নজরদারিকে এড়াতেই এ্যাসেঞ্জের পরিবর্তে তিনি এসেছেন। তিনি ঘোষণা করেন, সাময়িকভাবে স্থগিত উইকিলিকসের প্রচারণা পদ্ধতি এগুচ্ছে এবং চলতেই থাকবে। ১৯ জুলাই, ২০১০ সালে টেড সম্মেলনে এ্যাসেঞ্জ বক্তা হিসেবে উপস্থিত হয়ে সবাইকে আশ্চর্যান্বিত করেন এবং জানান উইকিলিকস আবারো তথ্য উপস্থাপন করে এগুবে।

অজ্ঞাতনামা সূত্র জানায়, ২৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র থেকে নেদারল্যাণ্ডে ফেরার পথে এ্যাপলবম তিন ঘণ্টার জন্য আমেরিকার গোয়েন্দাদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন। সূত্রটি সি’নেট-কে জানায়, অজানা উদ্দেশ্যে এ্যাপলবমের ব্যাগ তল্লাশি, ব্যাগের চিত্র, তার ল্যাপটপ পর্যবেক্ষণ করা হয়। এ্যাপলবম আইনজীবীর অনুপস্থিতিতে যে কোন ধরনের প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রত্যাখান করেন এমনকি কোন ফোন করতেও তাকে দেয়া হয়নি। তার তিনটি মোবাইল ফোন তৎক্ষণাতই জব্দ করা হয় এবং পরে আর ফেরত দেয়া হয়নি। ৩১ জুলাই, ডেফকন সম্মেলনে তিনি জানান যে তার ফোন জব্দ করা হয়েছে। পরবর্তীতে বলেন যে, তিনি দু’জন এফবিআই গোয়েন্দাদের প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিলেন।

প্রশাসন

জানুয়ারি ২০১০ এর সাক্ষাৎকারে জানা যায়, উইকিলিকসের ৫ জন ব্যক্তি পুরো সময়ব্যাপী এবং প্রায় ৮শ ব্যক্তি মাঝে মাঝে কাজ করে থাকেন যা চিহ্নিত করা যায়নি। প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব কোন দপ্তর নেই। প্রতিবছরে প্রায় ২ লক্ষ পাউন্ড ব্যয় হয় মূলত সার্ভার ও ব্যুরোক্রেসি রক্ষণাবেক্ষণে। কিন্তু যদি স্বেচ্ছাসেবকেরা এর জন্য সম্পূর্ণভাবে দান করেন তা হলে এটি ২ লক্ষ পাউণ্ড পর্যন্ত গড়াবে। উইকিলিকস আইনজীবীদের কোন অর্থ প্রদান করে না। এ্যাসোসিয়েটে প্রেস (এপি), দ্য লস এ্যাঞ্জেলেস টাইমস এবং দ্য ন্যাশনাল নিউজপেপার পাবলিশারস এসোসিয়েশন কর্তৃক দানের মাধ্যমে প্রদত্ত শত-সহস্র ডলার বৈধ সহযোগিতার অংশ হিসেবে দেয়া হয়। দানের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ হলেও উইকিলিকস পরিকল্পনা করছে যে সাম্প্রতিক তথ্যগুলো নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে অর্থ সংস্থান করা হবে। অও হল্যান্ড ফাউন্ডে নের মতে, উইকিলিকস কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ব্যয় মেটাতে নয়, বরং হার্ডওয়্যার, ভ্রমণ এবং ব্যাণ্ডউইদ ক্রয়ের লক্ষ্যেই এই অর্থ সংগ্রহাভিযান। টেকআই.নেট তাদের প্রতিবেদনে লিখেছিলঃ জার্মান আইনে উইকিলিকস ফাউণ্ডেশনের দাতব্য একাউন্টে ‍অর্থ প্রদান করা যাবে। তহবিল সমৃদ্ধ হলে ওয়েবসাইটে একটি অর্থপ্রদান সংক্রান্ত এ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে উইকিলিকস অর্থ গ্রহণ করে। সাইটটির জার্মান প্রতিনিধি ড্যানিয়েল স্কমিট (প্রকৃত নাম ড্যানিয়েল ডমস্কিট বার্গ) রাস্ট্রীয় টেলিভিশনে জানান, ফাউণ্ডেশনটি উইকিলিকসের কোন ব্যক্তিকে বেতনের অর্থ বা কোনরূপ ভাতা প্রদান করে না। সকল ব্যক্তিই স্বেচ্ছায় ‍কাজ করে যাচ্ছেন, এমনকি এই বক্তাও।

সাইট ব্যবস্থাপনা সম্পর্কীয

নাগরিক অধিকারহীনতার বিষয়ে জুলিয়ান এ্যাসেঞ্জ ও ড্যানিয়েল ডমসিট-বার্গের সাথে মতদ্বৈধের কারণে ড্যানিয়েলকে বহিষ্কার করা হয় এবং ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি ঘোষণা করেন যে, প্রতিষ্ঠান থেকে ড্যানিয়েল চলে যাবেন। অক্টোবর, ২০১০ তারিখে প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয় যে, উইকিলিকসে অর্থসংস্থানে নিয়োজিত মানিবুকারস প্রতিষ্ঠানটির সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করে চলে যাবে। মানিবুকারস বলছে যে, মানি লণ্ডারিং অথবা সরকারি প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সংস্থা কর্তৃক তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার ফলে সাইট থেকে চলে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

হোস্টিং

উইকিলিকস নিজেকে ব্যাখ্যা করেছে যে, একটি অনিয়ন্ত্রিত পদ্ধতি যা গণদলিল ফাঁসে কোন সমস্যা হবে না। উইকিলিকস সুইডেনভিত্তিক পিআরকিউ কোম্পানি কর্তৃক হোস্ট পায় ‍যা উচ্চমাত্রায় নিরাপদ, হোস্টিং সেবায় কোনরূপ প্রশ্নের সম্মুখীন হবে না। পিআরকিউ বলেছে, তাদের কাছে উইকিলিকসের কোন তথ্য নেই এবং নিজেদের লগ যদি তারা দেয় তাহলেই রক্ষণাবেক্ষণে ব্যবহৃত হয়। সার্ভারটি বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত সুইডেনের কেন্দ্রীয় সার্ভার থেকে পরিচালিত হয়। জুলিয়ান এ্যাসেঞ্জ বলেছেন, যে সকল দেশসমূহ বৈধ নিরাপত্তা ও সাইট পরিচালনায় হস্তক্ষেপ করবে না সে দেশে বিশেষ করে সুইডেনে (এবং অন্যান্য দেশে)। তিনি সুইডিশ সংবিধানের দিক নিয়েও কথা বলেন যারা পূর্ণাঙ্গ ও বৈধ নিরাপত্তাদানে প্রশাসনিক সহায়তা করে। সুইডেনের আইন অনুযায়ী যে কোন প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষই সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের উৎস সম্বন্ধে তদন্ত করতে পারেন না। এছাড়াও, উইকিলিকস্ তাদের নিজস্ব সার্ভার রক্ষণাবেক্ষণ করছে অজানা জায়গায়, তথ্যের কোন ছক রাখে না এবং সামরিক বাহিনীর এনক্রিপশন পদ্ধতি ব্যবহার করছে যা তথ্যের উতসসহ অন্যান্য বিশ্বাসযোগ্য তথ্য সুরক্ষা করে। এ ধরনের ব্যবস্থাপনাই বুলেটপ্রুফ হোস্টিং নামে পরিচিত যা উইকিলিকসের রয়েছে। ১৭ আগস্ট, ২০১০ তারিখে উইকিলিকস্ প্রকাশ করে যে, সুইডেনের পাইরেট পার্টি তাদের নতুন সার্ভারে হোস্টিং ও পরিচালনায় আসছে। এই দলটি উইকিলিকসকে কোনরূপ চার্জ ছাড়াই সার্ভার ও ব্যাণ্ডউইদ দান করবে। দলটির কারিগরেরা সার্ভারটি রক্ষণাবেক্ষণ ও কাজ করবে। কিছু সার্ভার সাবেক ন্যাটোর নিউক্লিয়ার বাংকার সাইবারবাংকার থেকে রূপান্তরিত হয়ে হোস্টিং হয়।

উইকিলিকস অনেক সফটওয়্যার প্যাকেজ যেমন: মিডিয়াউইকি, ফ্রিনেট, টর এবং পিজিপি নিয়ে তৈরি হয়েছে। উইকিলিকস তাদের ব্যবহারকারীদেরকে উৎসাহিত করে বলেছে যে, টর এর মাধ্যমে তথ্য পাঠাতে যা খুবই শক্তিশালী নিরাপদ ব্যবস্থায় গড়া।

নীতি

উইকিলিকসের সম্পর্কীয় পাতায় বলা আছে: উইকিলিকস দেখতে উইকিপিডিয়ার মতো ব্যবহারকারীদের জন্য। যে কেউই এতে পোস্ট করতে পারে, সম্পাদনা করতে পারে। এর জন্য কারিগরি জ্ঞানের প্রয়োজন নেই। তথ্যদাতা যে কোন স্থান থেকেই স্বচ্ছন্দে পোস্ট করতে পারেন। ব্যবহারকারী স্বাধীনভাবে তথ্য এবং তথ্যের উৎস সম্পর্কে আলোচনা করতে পারেন। তথ্য দাতা ফাঁসকৃত তথ্যের উতস সম্পর্কে ব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদন পড়তে এবং লিখতে পারেন। রাজনৈতিক তথ্য প্রদানে ব্যবহারকারীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।

সম্মাননা গ্রহণ

সমালোচনা

তথ্য ফাঁস

২০০৯

২০১০

পাদটীকা

  1. "WikiLeaks – News, World, Politics, Life"www.wikileaks.info
  2. "Whois Search Results: wikileaks.org"GoDaddy.com। ২ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১০
  3. Sunshine Press Productions ehf, Certificate of Incorporation. Iceland. 26 January 2011.
  4. "Wikileaks has 1.2 million documents?"WikiLeaks। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৮
  5. McGreal, Chris (৫ এপ্রিল ২০১০)। "Wikileaks reveals video showing US air crew shooting down Iraqi civilians"The Guardian। London। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১০
  6. Calabresi, Massimo (২ ডিসেম্বর ২০১০)। "WikiLeaks' War on Secrecy: Truth's Consequences"Time। New York। ২০ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১০Reportedly spurred by the leak of the Pentagon papers, Assange unveiled WikiLeaks in December 2006.

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.