ইহুদি গণহত্যা

ইউরোপে ইহুদি গণহত্যা (ইংরেজি: The Holocaust দ্য হলোকস্ট্‌; হিব্রু ভাষায়: השואה হাশোয়া) হলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের উপর চালানো গণহত্যাহিটলারের নেতৃত্বে নাৎসি পার্টির পরিচালনায় জার্মান নাৎসি সামরিক বাহিনী ইউরোপের তদানীন্তন ইহুদি জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের বেশি অংশকে এবং আরও কিছু সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে বন্দী শিবিরশ্রম শিবিরে নির্বিচারে হত্যা করে। আনুমানিক ষাট লক্ষ ইহুদি এবং আরও অনেক সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর মানুষ প্রাণ দেয়।

ইহুদি গণহত্যা
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-এর অংশ
নাৎসিরা হাঙ্গেরীয় ইহুদিদেরকে আউশভিৎস যুদ্ধবন্দীশিবিরের গ্যাস কক্ষে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাছাই করছে, আউশভিৎস চিত্রসঙ্কলন মে/জুন ১৯৪৪[1]
স্থাননাৎসি জার্মানি এবং জার্মান-অধিকৃত উপনিবেশ।
তারিখ১৯৪১-৪৫
লক্ষ্যইউরোপীয় ইহুদি—হলোকস্ট পরিভাষার বিস্তৃত ব্যবহারে অন্যান্য নাৎসি অপরাধের ভুক্তভোগীরাও অন্তর্ভুক্ত।[2]
হামলার ধরনগণহত্যা, জাতি নির্মূলকরণ, বহিষ্কার
নিহত৬,০০০,০০০[3]–১১,০০০,০০০[4]
হামলাকারী দলনাৎসি জার্মানি ও তাদের মিত্রবর্গ
অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা
২০০,০০০

হিটলারের বাহিনী পঞ্চাশ লক্ষ ইহুদি ছাড়াও সোভিয়েত যুদ্ধবন্দী, সাম্যবাদী, রোমানী ভাষাগোষ্ঠীর (যাযাবর) জনগণ, অন্যান্য স্লাভীয় ভাষাভাষী জনগণ, প্রতিবন্ধী, সমকামী পুরুষ এবং ভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মতাদর্শের মানুষদের ওপর এই অমানবিক গণহত্যা পরিচালনা করে। নাৎসিরা এর নাম দিয়েছিল "ইহুদি প্রশ্নের চরম উপসংহার"। নাৎসি অত্যাচারের সকল ঘটনা আমলে নিলে সর্বমোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে নব্বই লক্ষ থেকে এক কোটি দশ লক্ষের মত।

অত্যাচার ও গণহত্যার এসব ঘটনা বিভিন্ন পর্যায়ে সংঘটিত হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর অনেক আগেই নাগরিক সমাজ থেকে ইহুদিদের উৎখাতের জন্য জার্মানিতে আইন প্রণয়ন করা হয়। জনাকীর্ণ বন্দী শিবিরে রাজনৈতিক ও যুদ্ধবন্দীদেরকে ক্রীতদাসের মতো কাজে লাগাতো যারা পরে অবসন্ন হয়ে রোগভোগের পর মারা যেত। জার্মানিতে নাৎসিদের উত্থানকে তৃতীয় রাইখ ("তৃতীয় রাজ্য") বলা হয়। নাৎসি জার্মানি তখন পূর্ব ইউরোপের কিছু এলাকা দখল করেছে। তারা সেখানে বিরুদ্ধাচরণকারী ও ইহুদিদের গণহারে গুলি করে হত্যা করে। ইহুদি এবং রোমানি ভাষাগোষ্ঠীর লোকদের তারা ধরে নিয়ে গ্যাটোতে রাখে। গেটো একধরনের বস্তি এলাকা যেখানে গাদাগাদি করে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার মধ্যে এসব মানুষদেরকে মানবেতর জীবনযাপন করতে হত। তারপর গেটো থেকে তাদেরকে মালবাহী ট্রেনে করে শত শত মাইল দূরের বধ্যশিবিরগুলোতে নিয়ে যেত। মালবাহী ট্রেনের পরিবহনেই অধিকাংশ মারা পড়ত। যারা বেঁচে থাকত তাদেরকে গ্যাস কক্ষে পুড়িয়ে হত্যা করা হত। তখনকার জার্মানির আমলাতন্ত্রের সকল শাখা সর্বাত্মকভাবে গণহত্যায় জড়িত ছিল। একজন ইহুদি গণহত্যা বিশেষজ্ঞ বলেছেন তারা জার্মানিকে একটি 'নরঘাতক রাষ্ট্রে' পরিণত করেছিল।

চিত্রে ইহুদি গণহত্যা

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. The Auschwitz Album. Yad Vashem. Retrieved 24 September 2012.
  2. হলোকস্টের বর্ধিত সংজ্ঞায় মানবতাবিরোধী নাৎসি অপরাধ ও যুদ্ধপরাধের অন্যান্য ভুক্তভোগীরাও আন্তরভুক্ত যেমন, রোমানীয় গণহত্যা, জার্মানির ইউজেনিক্স প্রোগ্রাম, the সোভিয়েত যুদ্ধবন্দীদের প্রতি জার্মানিদের দুর্ব্যবহার, পোলিশ জাতির বিরুদ্ধে নাৎসি অপরাধ এবং অন্যান্য স্ল্যাভীয় জাতিগোষ্ঠী এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অপরাধ, the নাৎসি জার্মানি ও হলোকস্টে সমকামীদের উপর নির্যাতন, the নাৎসি জার্মানিতে জেহভার সাক্ষীদের উপর উপর নির্যাতন, পাশাপাশি বেসামরিক বন্দীদের এবং ইউরোপজুড়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বিরোধিতাকারী সদস্যবৃদের হত্যা।
  3. Holocaust core death toll.
  4. Holocaust expanded tol.
  5. Martin Childs (30 September 2013)। "Shalom Yoran: Soldier who evaded the Nazis and fought with a Jewish"The Independent। সংগ্রহের তারিখ March 2016 এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.